২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

যশোরে পাটের দামে হতাশ কৃষক বিঘায় লোকসান ৮ হাজার টাকা

-

যশোরের চৌগাছায় বাজারে উঠেছে নতুন পাট। কিন্তু পাটের দাম পাচ্ছেন না যশোরের কৃষকরা। বিঘাপ্রতি প্রায় ৮ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে এবারের পাটে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর ৯৭/৯৮, জেআর ও ৫২৪ এবং তোষা জাতের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল দুই হাজার হেক্টর। চাষ হয়েছে আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে। পাটের দাম ভাল পাওয়ার আশায় ৫০ হেক্টর বেশি জমিতে পাট চাষ করেন কৃষকরা। উপজেলার বাজারগুলোতে নতুন পাট ওঠা শুরু হয়েছে।
এ বছর শাকসবজির দাম ভালো থাকায় অনেকে পাট কেটে তরিতরকারির পাশাপাশি ধানের চাষ করেছেন। নতুন পাট ওঠার সাথে সাথে বাজারগুলোতে পাটের দাম কমে গেছে। গত বছর মৌসুমের শুরুতে পাটের দাম এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত ছিল। মৌসুমের শেষের দিকে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার হলেও বর্তমানে পাটের দাম মণপ্রতি এক হাজার ৪০০- এক হাজার ৫০০ টাকা। প্রতি বছর লাভবান হচ্ছেন আড়ত ব্যবসায়ীরা। পাটের দাম এতটা কমে যাওয়ায় কৃষকদের মুখের হাসি ম্লান হয়ে গেছে।
উপজেলার চুটারহুদা গ্রামের পাটচাষি আবদুল খালেক জানান, এক বিঘা জমিতে পাট চাষে জমি লিজ, চাষ, বীজ, সার, সেচ, নিড়ানি, কাটা, জাগদিয়া, ধোয়া প্রভৃতি বাবদ খরচ হয় প্রায় ২৫ হাজার টাকা। এক বিঘায় পাটের ফলন হয় ৯-১০ মণ। ১০ মণ পাটের বাজার মূল্য ১৫ হাজার টাকা এবং এক বিঘার পাটখড়ি তিন হাজার টাকায় বিক্রি হলেও মোট মূল্য হয় ১৬ হাজার টাকা। ফলে এক বিঘা পাটে লোকসান গুনতে হচ্ছে ৮ হাজার টাকা।
পুড়াপাড়া বাজারের পাট ব্যবসায়ী সরজিৎ ঘোষ জানান, উপজেলার চৌগাছা, সলুয়া, পুড়াপাড়া, হাকিমপুর, সিংহঝুলীসহ বিভিন্ন বাজারে নতুন পাট আমদানি হচ্ছে। একশ্রেণীর অতি মুনাফাখোর ব্যবসায়ী কম দামে ভালো পাট কিনে গুদামজাত করছেন। বাজারে পাটের আমদানি ভালো হলেও বড় ব্যবসায়ীরা পাট কিনতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছেন। কয়েক বছর ধরে পাটের দাম চড়া থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা নতুন করে (সোনালি আঁশ) পাট চাষে আগ্রহী হয়ে ওঠেন।
পাটচাষি আনিচুর রহমান জানান, পাট কাটার মৌসুমের শুরুতে কৃষকরা পাট জাগ দিতে দারুণভাবে ভোগান্তির শিকার হয়েছেন। এ বছর অপরিষ্কার পানিতে পাট পচানোয় পাটের রঙ কালো হয়েছে। উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, গ্রাম থেকে আসা বেশির ভাগ পাটেরই রঙ কালো। চৌগাছা বাজারে পাট বিক্রি করতে আসা আন্দারকোটা গ্রামের কৃষক মতিয়ার রহমান জানান, এ বছর বদ্ধ ও পচা পানিতে পাট জাগ ও মাটিচাপা দেয়ার কারণে পাটে সোনালি রঙ আসনি। পাটের দাম কমে যাওয়ার কারণে লাভ তো দূরে থাক ধারদেনাই পরিশোধ হচ্ছে না। সোনালি আশ পাট এ বছর কৃষকের গলার ফাঁস হয়ে দাঁড়িয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রইচ উদ্দীন জানান, এ বছর পাটের উপাদন খরচ বেশি হয়েছে। প্রায় ৮০ ভাগ পাট কাটা শেষ হয়েছে। তবে পাটের দাম কৃষকদের কাক্সিক্ষত নয়। মণপ্রতি আড়াই হাজার টাকা দাম হলে কৃষক মোটামুটি বেঁচে যেত।

 


আরো সংবাদ



premium cement