২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

১০ দিনেও বিক্রি হয়নি : ঋণ করে চামড়া কিনে বিপাকে ঝালকাঠির ব্যবসায়ীরা

-

কোরবানির ১০ দিন অতিবাহিত হলেও ঝালকাঠির চামড়া ব্যবসায়ীরা কোরবানির পশুর চামড়া বিক্রি করতে না পেরে মহাবিপাকে পড়েছেন। ট্যানারি মালিকদের কাছে আগের পাওনা টাকা না পাওয়ায় পুঁজি সঙ্কট, লবণের দাম বৃদ্ধি ও আন্তর্জাতিক বাজার মন্দা হওয়ার কারণে এবারের কোরবানির চামড়া বিক্রি নিয়ে এখনো নানা শঙ্কায় রয়েছেন ঝালকাঠির চামড়া ব্যবসায়ীরা। গত বছরের চামড়ার টাকা এখনো ট্যানারি মালিকের কাছে বকেয়া থাকায় ব্যবসায়ীরা নিজেদের অল্প পুঁজি নিয়ে চামড়া কিনেছেন। এসব ঝামেলার কারণে অনেকেই চামড়ার ব্যবসা গুটিয়ে নিয়েছেন।
চামড়া ব্যবসায়ী উজ্জল সরদার জানান, প্রতি কোরবানির ঈদে এখানে প্রায় কোটি টাকার চামড়া বেচাকেনা হয়। ২০১০ সালেও জেলায় অর্ধশত চামড়া ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে সময়মতো টাকা না পাওয়ায় ঋণে জর্জরিত হয়ে আবার অনেকে লোকসানে লোকসানে দেউলিয়া হয়ে শুধু গোশত ব্যবসায়ে সীমাবদ্ধ আছেন। চামড়া ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। বর্তমানে মাত্র ১০-১২ জন চামড়া ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছেন।
স্থানীয় এক চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরের চামড়ার দাম এখনো ট্যানারি মালিকরা পরিশোধ না করায় এবার ঈদে ধার-কর্জ করে চামড়া কিনেছি। ব্যবসায়ীরা জানান, ট্যানারি মালিকদের কাছ থেকে ব্যবসায়ীদের প্রায় ৬০ থেকে ৭০ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে। এখনো সেই টাকা পাওয়া যায়নি।
অপর দিকে বকেয়া টাকা ফেরত দেয়া লাগবে বলে এ বছরের চামড়াও কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ)। এবার লবণযুক্ত গরুর চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪০ টাকা দরে কেনার কথা। খাসির লবণযুক্ত চামড়া ২০ টাকা এবং বকরির চামড়া ১৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও এর কোনোটিই বাস্তবতার আলোকে ঠিক হয়নি। অনেক চামড়া ডিসফুট (নি¤œমানের) থাকে। নির্ধারিত রেটে ওই চামড়া কিনে বিক্রি করা সম্ভব নয়। এ ছাড়াও গ্রামাঞ্চলে মৌসুমভিত্তিক কিছু চামড়া ব্যবসায়ী দেখা দেয়। তারা স্থানীয়ভাবে নিজেদের ইচ্ছেমতো দরদামে চামড়া কিনে বিক্রির জন্য নিয়ে আসেন।
চামড়া ব্যবসায়ী কাদের খান জানান, বড় বড় ট্যানারি মালিকদের ব্যাংক থেকে সাপোর্ট দেয়া হলেও জেলা শহরগুলোতে কাঁচা চামড়া ব্যবসায়ীদের সাপোর্ট দেয়া হয় না। ট্যানারি মালিকদের কাছে আমাদের গত বছরেরও প্রায় ২০ লাখ টাকা পাওনা রয়েছে। এখন সেই টাকাও তারা দিচ্ছে না এবং এ বছরের চামড়াও নিচ্ছে না। এ জন্য চামড়া ব্যবসায়ীরা মারাত্মক সমস্যায় রয়েছে।
ট্যানারি মালিকদের খামখেয়ালীপনা ও ব্যাংক ঋণের কারণে অনেক ব্যবসায়ী হারিয়ে গেছেন। যে কয়জন ব্যবসায়ী রয়েছেন তারা কোনো রকম টিকে আছেন। এ ছাড়া যে লবণের দাম আগে ৫০০ টাকা বস্তা ছিল এখন সেই লবণ ১৫ থেকে ১৬০০ টাকায় কিনতে হয়েছে। চমড়ায় লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে গোডাউনে রাখা হয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement