২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রাজাপুরে সরকারি খাল দখল করে একের পর এক অবৈধ স্থাপনা

রাজাপুর বাইপাস এলাকায় খাল দখল করে পাইলিং দিয়ে ভবন নির্মাণের কাজ চলছে : নয়া দিগন্ত -

ঝালকাঠির রাজাপুর শহরে জমির দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় ভূমিদস্যুরা হাঁকডাক দিয়ে দিন দিন সরকারি খালে দখলে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। উপজেলার এক সময়ের খরস্রোতা নদী জাঙ্গালিয়ার শাখা নদীটি ভূমিদস্যুদের কারণে আজ কোথাও মরা খাল আবার কোথাও সরু নালায় পরিণত হয়েছে। সেই খাল ও নালা নানা কৌশলে দখলে নিলেও প্রভাবশালীদের ভয়ে কেউ উচ্চবাচ্য করতে পারছেন না। তবে চুপ থাকলেও সচেতন মহলের মধ্যে প্রশাসনের বিরুদ্ধে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। খাল দখলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা, উঠতি পয়সাওয়ালা ও জনপ্রতিনিধিরা জড়িয়ে পড়ায় প্রশাসনও রহস্যজনক নীরবতা পালন করছে। এতে আরো উৎসাহী হচ্ছে ভূমিদস্যুরা। এ সুযোগে ভূমিদস্যু মহলটি দিন দিন খাল দখল করে একের পর এক অবৈধ পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় একের পর এক খাল দখল করে পাকা স্থাপনা নির্মিত হচ্ছে।
সদরের মাছ বাজার ব্রিজের উত্তর পাশে খালের মধ্যে নির্মাণাধীন পাকা ভবন নির্মাণ নিয়ে জনমনে রয়েছে ক্ষোভ। বিভিন্ন স্থানে খালের মাঝ পর্যন্ত কালো পলিথিনে মুড়িয়ে কাঠের ঘর নির্মাণ করেছে ভূমিদস্যুরা। এ ছাড়া বাজার থেকে বাগড়ি বাজার এবং দক্ষিণ মাথা এলাকা পর্যন্ত খালের দুই পাশে চলছে ভরাট ও পাকা স্থাপনা নির্মাণের প্রতিযোগিতা। অভিযোগ উঠেছে, ভূমি অফিসকে ম্যানেজ করেই এসব নির্মাণকাজ চলছে।
উপজেলা সদর ঘুরে দেখা গেছে, লোকচক্ষু এড়ানোর জন্য খালের চর প্রথমে বেড়া দিয়ে আগলে রেখে পরে তা ভরাট করে তারা পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে খালের চর বিক্রির হিড়িক চলছে। উঠতি পয়সাওয়ালারা ভালো প্লেস দেখে খালের চর কিনে তারপর খালের মধ্যে শুরু করে ভবন নির্মাণ। স্বয়ং উপজেলা প্রশাসনও স্বীকার করেছে খাল দখলের বিষয়ে তাদের কাছেও অনেক অভিযোগ রয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, মধ্য বাজার এলাকা থেকে বয়ে যাওয়া ভারানি খালটি জেলখানার পেছনের এলাকা হয়ে টিঅ্যান্ডটি সড়কের মধ্য দিয়ে বাইপাস এলাকার ব্রিজ হয়ে তুলাতলার দিকে বয়ে গেছে। দখলে খালটির মৃতপ্রায় অবস্থার কারণে নৌকায় করে বাজার আসা, স’মিল ও ধান মিলে ধান নেয়া, বাজারের মালামাল বহনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যবসায়ী ও কৃষকরা সমস্যায় পড়েছেন। জোয়ারের সময় সামান্য পানি থাকলেও ভাটায় খালে পানিই থাকে না। এ কারণে শহরের কোথাও আগুন লাগলেও পানির সঙ্কট দেখা দেয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পানির উৎস পাওয়া যায় না। এ ছাড়া খালটি ও তার ছোট ছোট শাখা নালাগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ায় বৃষ্টি হলেই আশপাশে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। বিএনপি অফিস-সংলগ্ন এলাকার খালটি ভরাট করে কাজ করার বিষয়টি চোখে পড়ার মতো হলেও প্রশাসন নীরব বলে অভিযোগ রয়েছে।
তবে রাজাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সোহাগ হাওলাদার জানান, কাজ বন্ধ রেখে খালের ভেতর থেকে পাইলিং সরিয়ে চলমান প্রবাহ ঠিক রেখে জেয়ারে যতদূর পর্যন্ত পানি ওঠে সে পর্যন্ত পরিষ্কার করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় খাল দখলকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর পুরো খালটি মেপে সীমানা নির্ধারণ করে দখল মুক্ত করার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement