২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সুদকারবারিদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ চিতলমারীবাসী

-

শত শত পরিবার গ্রামছাড়া : ভিটেমাটি হারিয়ে নিজের জমিতেই বর্গাচাষি
ষ এস এস সাগর চিতলমারী (বাগেরহাট)
‘প্রথমে ওরা এসে ভাব জমায়। খাতির করে। পরে দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে টাকা ধার দেয়। সময় মতো সেই টাকা পরিশোধ না করলে চড়া সুদে পরিণত হয়। শুরু হয় সপ্তাহিক ও মাসিক হিসেবে সুদ গোনা। ধারকৃত টাকার ২ থেকে ৩ গুণ শোধ করলেও পরিশোধ হয় না আসল টাকা। বিক্রি করতে হয় ভিটেমাটি, বাড়ি, গাড়ি ও সহায়-সম্বল। এতেও সুদকারবারিরা ক্ষান্ত হয় না। শেষ পর্যন্ত তাদের লোলুপ দৃষ্টি পড়ে ঘরের মেয়ে-বউদের ওপর। আর এই টাকা আদায় করতে সুদকারবারিদের রয়েছে শক্তিশালী ‘আদায়কারী’ বাহিনী। তাই তো বাগেরহাটের চিতলমারীতে অত্যাচার-নির্যাতনে একের পর এক আত্মহত্যার ঘটনা ঘটছে। দুঃখভরা কণ্ঠে এমনটাই জানালেন সুদের দায়ে সব হারানো প্রকাশ বালা।
উপজেলার চরবানিয়ারী ইউনিয়নের সাবেক সদস্য খড়মখালী গ্রামের হরেকৃষ্ণ বালার ছেলে প্রকাশ বালা (৩২) আরো জানান, বছর ৩-৪ আগে অতিবর্ষণে তার চিংড়িঘের তলিয়ে সব মাছ ভেসে যায়। মাছের খাবারের দোকানে দেনা হয়ে পড়েন। ভালোবাসার ভাব দেখিয়ে এক সুদকারবারি ৫০ হাজার টাকা ধার দেয়। কিছ ুদিন পর টাকা ফেরত চায় ওই কারবারি। দিতে না পারায় মাথায় ওঠে সুদের বোঝা। ওই টাকা পরিশোধ করতে আরো ৪-৫ জনের সুদের জালে জড়িয়ে পড়েন। এক বছরের মাথায় তার আনা দেড় লাখ টাকার সুদ হয় ১০ লাখ টাকা। শুরু হয় সুদকারবারি ও তাদের আদায়কারী বাহিনীর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিমরোলার। তাদের নির্মমতায় পালিয়ে যান বাড়িঘর ফেলে। কিন্তু এভাবে কত দিন। সুদকারবারিদের সাথে আপসরফা করতে বিক্রি করে দেন চিতলমারী বাজারে পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দোকানঘর ও জায়গা-জমি। এখন সব হারিয়ে তিনি নিজের জমিতেই বর্গাচাষি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি জানান, সুদকারবারিদের নির্যাতনে চিতলমারীর হাজার খানেক পরিবার ভিটেমাটি, জায়গা-জমি ও গাড়ি-বাড়ি হারিয়ে আজ নিঃস্ব। এ ছাড়া সুদকারবারিদের অত্যাচারের স্টিমরোলারের চাপ সইতে না পেরে বাপ-দাদার ভিটেমাটি ফেলে পালিয়েছে শত শত পরিবার। এ উপজেলায় সদর থেকে প্রত্যন্ত পল্লী পর্যন্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরির দুই শতাধিক সুদকারবারি রয়েছে। এর বাইরে দেপাড়া, বাগেরহাট, বেসরগাতি ও গজালিয়ার বহু লোক চিতলমারীর বিভিন্ন এলাকায় সুদ কারবার চালায়।
এখানে সুদের দেনার চাপ সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন কালশিরা গ্রামের ভাস্কর্য শিল্পী রাম প্রসাদ মালাকার, রুইয়ারকুল গ্রামের সনজিত ব্রক্ষ্ম, সুরশাইল গ্রামের মাওলানা হারুন। সর্বশেষ গত ২০ জুলাই সুদখোরদের নির্মম অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে স্কুলশিক্ষিকা হাসিকনা বিশ্ব আত্মহত্যা করেন।
এ ব্যাপারে চিতলমারী থানার ওসি মীর শরিফুল হক জানান, সুদ ও মাদককারবারিদের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ইতোমধ্যে পুলিশ দুই সুদকারবারিকে গ্রেফতার করেছে। চিতলমারী থেকে সুদ ও মাদক উচ্ছেদ করা হবে।
তবে চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফুল আলম জানান, স্কুলশিক্ষিকার আত্মহত্যার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী অভিযানে নেমেছে। এ ছাড়া অবৈধভাবে অর্থলগ্নিকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রক্রিয়া চলছে।


আরো সংবাদ



premium cement
গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান

সকল