২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তাড়াশে পশুর হাটে ৯ গুণ বেশি খাজনা আদায়

তাড়াশে একটি গরুর হাট : নয়া দিগন্ত -

তাড়াশে গুল্টা হাটের ইজারাদার গিয়াস উদ্দিন অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছেন। ক্ষেত্রবিশেষে নির্ধারিত খাজনার চেয়ে তিন গুণ থেকে ৯ গুণ পর্যন্ত বেশি আদায় করা হচ্ছে। ইজারাদারের দাবি, প্রশাসনকে বলেই তিনি অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছেন। এ বিষয়ে তিনি কারো কাছে কৈফিয়ত দিতে চান না। এতে অসহায় ক্রেতা-বিক্রেতারা নিরুপায়। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সহযোগিতা কামনা করেছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় মোট ২৯টি হাট। তার মধ্যে গুল্টা হাট একটি বৃহত্তম হাট। ২৩ লাখ ২৫ হাজার টাকায় ঠিকাদার গিয়াস (বাংলা ১৪২৭ ) এক বছরের জন্য হাটটি ইজারা নেন। সপ্তাহে প্রতি মঙ্গলবার গরুর হাট বসে।
উপজেলা হাটবাজার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটি সূত্রে জানা যায়, সরকার নির্ধারিত খাজনা গরু বা মহিষের ক্ষেত্রে ২৫০ টাকা। কিন্তু তা তিন গুণ বাড়িয়ে ৪৫০ টাকা ও ব্যক্তি বিশেষে তার চেয়ে বেশি আদায় করা হচ্ছে। ছাগল বা ভেড়ার ক্ষেত্রে ৪০ টাকা নির্ধারিত খাজনা। কিন্তু ক্ষমতার দাপটে তা ৯ গুণ বাড়িয়ে ৩৬০ টাকা আদায় করা হচ্ছে। জেলা প্রশাসক কর্তৃক নির্ধারিত হারে টোল আদায়ের তালিকা হাটে জনসম্মুখে লাগানোর নির্দেশ দেয়া হলেও তা টানানো হয়নি। সম্প্রতি হাটে গিয়ে দেখা যায়, ইজারাদারের লোকজন হাটের বিভিন্ন প্রান্তে টেবিল নিয়ে বসে খাজনা আদায় করছে।
উপজেলার ভাদাশ গ্রামের সরকারি চাকরিজীবী রফিকুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার হাটে কোরবানির জন্য ৫৬ হাজার টাকায় একটি ষাঁড় কিনেছি। ইজারাদারের লোকজনকে গরুর খাজনা বাবদ ২৫০ টাকা দিতে চাইলে রসিদ লেখক বেঁকে বসে। অবশেষে ৪৫০ টাকা খাজনা দিয়ে রসিদ নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, সরকার নির্ধারিত হারে টোল আদায় করার কথা অথচ ইজারাদার ক্ষমতার দাপটে অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছে। ফলে হাটে গরু-মহিষ কিনতে আসা ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
একই অভিযোগ বগুড়ার শেরপুর উপজেলার বিশালপুর গ্রামের ফয়েজ উদ্দীনের ও পাঁচতলী গ্রামের বাবুল আহম্মেদসহ সব ক্রেতা-বিক্রেতার। জামাইল গ্রামের লিয়াকত হোসেন বলেন, একটি গরু কিনে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা খাজনা দিতে হচ্ছে ইজারাদারের লোকজনকে।
কোরবানির জন্য ছাগল কিনতে আসা তাড়াশ গ্রামের হাফিজুর রহমান বলেন, ১৫ হাজার টাকায় একটি ছাগল কিনলাম অথচ খাজনা দিতে হচ্ছে ২৮০ টাকা। বিষয়টি দেখার কেউ নেই। ক্রেতার কোনো কথাই শুনছে না ইজারাদারের লোকজন। তাদের দাবিকৃত বেশি টাকা না দিলে কাউকে ছাড়া হচ্ছে না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক রসিদ লেখক বলেন, হাটের ইজারাদার গিয়াস ভাই রসিদে খাজনা আদায়ের জায়গা ফাঁকা রাখতে বলেছেন। শুধু ক্রেতা ও বিক্রেতাদের নাম, ঠিকানা ও দাম লিখতে বলেছে।
হাটে অতিরিক্ত খাজনা আদায়ের দায়ে অভিযুক্ত হাট ইজারাদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, খাজনা ৫০০ টাকা নেবো ৭০০ টাকা নেবো এটা আপনাদের দেখার বিষয় নয়। প্রশাসনকে বলেই অতিরিক্ত খাজনা আদায় করছি।
তাড়াশের ইউএনও হাটবাজার ইজারা বাস্তবায়ন কমিটির সভাপতি ইফফাত জাহান বলেন, বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখছি। বাড়তি খাজনা আদায়ের প্রমাণ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement