২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

চৌগাছায় সরকারি খালে নিষিদ্ধ বেড়া দিয়ে মাছ শিকার

-

যশোরের চৌগাছায় সরকারি খালে বাঁশের বেড়া ও পাটাতন দিয়ে পানির গতিরোধ ও মাছ শিকার করছেন স্থানীয় প্রভাবশালীরা। উপজেলার বলিদাপাড়া থেকে যশোর সদর উপজেলার চানদুটিয়ার বাজার পর্যন্ত প্রায় ৩০ কিলোমিটার এ সরকারি খালের বিভিন্ন পয়েন্টে বাঁশের বেড়া ও পাটাতন দেয়া হয়েছে। সরকারি খালে এভাবে বেড়া বা পাটাতন দেয়া নিষিদ্ধ হলেও স্থানীয় প্রশাসনসহ কেউই এ নিয়ে কথা বলছে না।
জানা যায়, পানির স্তর স্বাভাবিক রাখতে ও কৃষি কাজে পানির ব্যাপক ব্যবহার নিশ্চিত করতে সরকারি এ খাল দখল মুক্ত করে খনন করা হয়েছে। ‘মাছে ভাতে বাঙালি’ এ সেøাগানকে সামনে রেখে দেশী মাছের অভয়ারণ্য গড়ে তুলতে শত শত কোটি টাকা ব্যয়ে সরকার এ খালগুলো পুনরায় খনন করেছেন। খালের দুই কূলে বসবাসকারী সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা যাতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতে পারেন। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি অবৈধভাবে বাঁশের বেড়া ও পাটাতন দিয়ে পানির গতিরোধ করে খাল থেকে রেণুপোনাসহ বিভিন্ন প্রজাতির মা মাছ শিকার করে আসছে। এতে মাছের প্রজনন ও বংশবিস্তার বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এতে খাল খননের উদ্দেশ্য অনেকাংশে ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সরকারিভাবে মুক্তজলাশয়ে ৩৫০ কেজি রুইজাতীয় মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। যার মূল্য প্রায় ১ লাখ টাকা। এই খালের পাড় ঘেঁষে অবস্থিত বলিদাপাড়া, জামিরা, বারুইহাটি, আড়ারদহ, চান্দা, আফরা, সলুয়া, মালিগাতি, গোবিন্দপুর, হাউলিসহ বেশ কয়েকটি গ্রাম। এসব গ্রামের হতদরিদ্ররা তাদের জীবিকা নির্বাহ করে এই সরকারি খালের মাছ ধরে। কিন্তু এ খালে প্রভাবশালীদের অবৈধভাবে মাছ শিকারের ফলে বিপাকে পড়েছে হাজার হাজার সাধারণ মানুষ ও মৎস্যজীবীরা।
সরেজমিন ও স্থানীয় লোকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, অনেক দিন আগে থেকেই এসব প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতার ফলে ধীরে ধীরে তা বেড়েই চলেছে। এসব পাটাতনের কারণে পানির স্বাভাবিক গতি ও মাছের বিচরণ ব্যাহত হচ্ছে। ব্যাহত হচ্ছে খালের নাব্যতারও।
জানা যায়, উপজেলার সলুয়া গ্রামের মৃত মনিরুদ্দীনের ছেলে আনার হোসেন, মৃত নবীছুদ্দীনের ছেলে শহিদুল ইসলাম ও আব্দুল আলীর ছেলে আলা উদ্দীনসহ অনেকেই সরকারি এই খালে পাটাতন সৃষ্টি করেছেন। বেশির ভাগ পয়েন্টে নিষিদ্ধ ঘেরজাল, ভ্যাশাল জাল, পাটাবাঁধ, কোমর ও বাঁশের বেড়া ব্যবহার করা হয়েছে। ব্যক্তি মালিকানায় তৈরি এসব পয়েন্টে মাছের জন্য খাবার দিলে সেখানে মাছ জড়ো হয়। প্রতিনিয়ত সেই মাছ শিকার করে তারা।
ফুলসারা ইউনিয়ন পরিষদের স্থানীয় ইউপি সদস্য মিজানুর রহমান বলেন, এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার দফতরসহ বিভিন্ন দফতরে কয়েক দফা অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। তাদের অভিযোগ, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা এই কাজে জড়িত থাকায় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম শাহাজান সিরাজ বলেন, নতুন করে যেসব সরকারি খাল খনন করা হয়েছে তাতে পাটাতন দিয়ে মাছ শিকার করা অবৈধ ও অপরাধ। কেউ তা করলে তার বিরুদ্ধে আমরা অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা নেবো।


আরো সংবাদ



premium cement