চুয়াডাঙ্গার পশুহাটে গিজগিজ করছে মানুষ : স্বাস্থ্যবিধির তোয়াক্কা নেই
- হুসাইন মালিক চুয়াডাঙ্গা ও মনিরুজ্জামান সুমন দামুড়হুদা
- ০৮ জুলাই ২০২০, ০০:০০
পশুহাটে গিজগিজ করছে পশু আর মানুষ। একজন আরেকজনের গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে। কেউ দরদাম করছেন, কেউ পশু কিনে ট্রাকে তুলছেন। বেশির ভাগ লোকের মুখে মাস্ক নেই, কারো কারো থাকলেও তা নামানো থুতনিতে। সামাজিক দূরত্বের নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে নিজের ও আশপাশের সবার জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পশু কেনাবেচা চলছে। সোমবার দুপুরে দামুড়হুদার বিখ্যাত ডুগডুগী পশুর হাটে এ দৃশ্য দেখা গেছে। এতে প্রাণঘাতী করোনার সংক্রমণ ভয়াবহ হতে পারে বলে আশঙ্কা ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা জেলার হাটবাজারের মধ্যে সবচেয়ে বড় হাট ডুগডুগী পশুহাট। সারা বছরই এ পশুহাটে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম থাকে। কিন্তু আসন্ন কোরবানির ঈদ উপলক্ষে এ হাটে বেড়েছে ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম। সোমবার দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, হাটে প্রায় সব ধরনের দোকান খুলে গেছে। মৌসুমি ফলের দোকান ও মুদিখানার দোকানে যথেষ্ট ভিড়। হাটের বিভিন্ন জায়গায় দাঁড়িয়ে অনেকেই খোশগল্প করছেন। তাদের অনেকের মুখে মাস্ক নেই। আলু ও সবজির বাজার ঘিরে কেনাকাটা করছেন বহু মানুষ। গোশতের বাজার, হাঁস-মুরগির বাজারে গিয়ে মনে হলো যেন কেনাকাটার উৎসব চলছে। সবাই গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে হাঁস-মুরগি, গোশত কিনছেন। সবকিছু স্বাভাবিক সময়ের মতো।
হাটে গরু বিক্রি করতে আসা মুন্সীগঞ্জের আল-আমিন বলেন, ‘মেলা দিন থেক বাড়িতে আছি। টাকা-কড়ি নাই। আইজ হাটেতে গরু বেচতি আইছি। কিন্তু হাটে এসে মনে হইতেছে মানুষের কোনো করোনার ভয় নাই। ঠেলাঠেলি কইরে কেনাবেচা চলছে।’ হাটে বাজার করতে আসা আইয়ুব আলী বলেন, ‘ভাই সবকিছু স্বাভাবিক সময়ের মতোই চলছে। কেউ তো সামাজিক দূরত্ব মানছে না। অনেকে মুখে মাস্কও ব্যবহার করছে না। ব্যবসায়ীরাও ক্রেতাদের কিছু বলছে না। হুড়াহুড়ি করে গা ঘেঁষে কেনাকাটা চলছে।’
বাজারের একটি চায়ের দোকানে ৫০-৬০ জনকে চা পান করতে দেখা যায়। কারো মুখেই মাস্ক নেই। আসাদুল ইসলাম নামের একজন বলেন, ‘অনেক দিন দোকানে বসে চা খাওয়া হয় না। তাই একটু করোনা নিয়ে গল্পগুজব করছি। মাস্ক আমার ব্যাগে আছে।’
ডুগডুগী পশুহাটের এ দৃশ্য দেখে এলাকার সচেতন মহলের এক ব্যক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, তার বাড়ি পশুহাটের সাথে হওয়ায় জরুরি প্রয়োজনে হাটে আসতে হয়। জনসমাগম ঠেলে ডুগডুগীর মেইন রাস্তায় প্রতিনিয়ত যেতে হয়। কিন্তু পশুহাটের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব না থাকায় তারা চরম ঝুঁকির মধ্যে চলাচল করছেন।
হাটের ইজারাদার শাহ জনি হোসেনের সাথে পশুহাটের সার্বিক বিষয় সম্পর্কে মোবাইল ফোনে কথা বললে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে পরে কথা হবে’। কিন্তু পরে তার সাথে আর যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
হাউলী ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নিজাম উদ্দীনের কাছে এ বিষয় সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি সম্পর্কে অবগত এবং হাটে আসা ব্যক্তিদের করোনা সম্পর্কে সচেতন হওয়ার কথা বললেও তারা গুরুত্ব দিচ্ছে না। এতে করোন সংক্রমণের ঝুঁক বাড়ছে। তাই বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করা হবে।
এ বিষয়ে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা দিলারা রহমান জানান, বিষয়টি সম্পর্কে তিনি ইতোমধ্যে অবগত হয়েছেন এবং বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনাও করেছি। পরবর্তী সপ্তাহে হাট বসলে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানান।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা