২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সীতাকুণ্ডে খাল ও স্লুইস গেট ঘিরে শিপইয়ার্ড : ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী

সীতাকুণ্ডে মোহরম ইস্পাত শিপ রি-সাইক্লিং ইন্ড্রাষ্ট্রিজ শিপইয়ার্ডের মধ্যে ঘেরা দেয়া সরকারি খাল ও স্লুইস গেট : নয়া দিগন্ত -

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কুমিরা সাগর উপকূলে একটি সরকারি খাল ও স্লুইস গেট ঘিরে শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, ধীরে ধীরে ওই শিপইয়ার্ড কর্তৃপক্ষ খালটি ভরাট করে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত করছে। এর ফলে চলতি বর্ষায় কয়েকটি গ্রামে জলাবদ্ধতার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সীতাকুণ্ডের কুমিরা ইউনিয়নের কুমিরা ঘাটঘরসংলগ্ন দক্ষিণ পাশে মেসার্স মোহরম ইস্পাত নামক একটি শিপব্রেকিং ইয়ার্ড নির্মাণকালে কয়েক গ্রামের পানি নিষ্কাশনের জন্য অতি গুরুত্বপূর্ণ একটি সরকারি খাল ও খালের ওপর নির্মিত স্লুইস গেট ঘিরে ফেলা হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ, ধীরে ধীরে খালটি ভরাট করায় সেটি ক্রমেই শীর্ণকায় হয়ে পড়ে পানি নিষ্কাশন ব্যাহত হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা যায়, মোহরম ইস্পাত শিপ-রিসাইক্লিং ইন্ডাস্ট্রিজের ইয়ার্ডের সীমানার মধ্যে উত্তর অংশে খাল ও স্লুইস গেটটির অবস্থান। গেটের সাগর অংশের অনেকগুলো সরকারি স্ল্যাব তুলে ফেলে জমিয়ে রাখা হয়েছে বেড়িবাঁধের ওপরের দিকে। আর এর ঠিক বিপরীতে গেটের দক্ষিণ অংশে লোহার জাল ঘেরা। পরিদর্শনকালে কুমিরা ঘাটঘর জেলে পাড়ার বাসিন্দা রাজু জলদাশ, দেবাশীষ, ক্ষুদিরামসহ কয়েকজন জেলে অভিযোগ করে বলেন, এখানে সরকার বেড়িবাঁধ নির্মাণ করেছিল আমাদের মতো উপকূলে বসবাসকারীদের জীবন রক্ষার জন্য। বেড়িবাঁধের যে যে অংশে সরকারি খাল আছে সেখানে পানি নিষ্কাশনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল স্লুইস গেট। এই গেটগুলো সচল থাকলে অতিবৃষ্টিতে জমে যাওয়া পানি গেটের মাধ্যমে সাগরে চলে গিয়ে গ্রামবাসীকে জলাবদ্ধতা থেকে রক্ষা করত। কিন্তু মহোরম ইস্পাত নামক শিপইয়ার্ডটি খাল ও স্লুইস গেটটি দখল করে ধীরে ধীরে বন্ধ করে দিচ্ছে। এটি বন্ধ হয়ে গেলে ঘাটঘর জেলে পাড়াসহ আশপাশের ৪-৫ গ্রামের মানুষ চরম জলাবদ্ধতার শিকার হবে। তাই আমরা বারবার এই স্লুইস গেট ও খালটি উদ্ধারের দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এই ইয়ার্ডের লোকজন কারো কথায় কর্ণপাত করে না। ‘সব মহলেই তাদের লোক আছে’ এমন দাপট দেখায় তারা। ফলে তারা খাল ও স্লুইস গেট শিপইয়ার্ডের গ্রাস থেকে রক্ষার জন্য প্রশাসনের কাছে বিনীত অনুরোধ জানান।
এ দিকে এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মিল্টন রায়। তিনি বলেন, আমি কয়েক দিনের মধ্যে সার্ভেয়ার পাঠিয়ে খাল ও স্লুইস গেটটি কী অবস্থায় আছে তা দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
অন্য দিকে নিজের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মোহরম ইস্পাত শিপ-রিসাইকিং ইন্ড্রাস্টিজের স্বত্বাধিকারী কামাল পাশা। তিনি বলেন, খাল ও স্লুইস গেটটি আমার ইয়ার্ডের মধ্যে মনে হলেও আসলে ওই অংশটি আমার জায়গা নয়। খাল থেকে ৩০ ফুট দূরে আমার জায়গা। আমি সরকারি খাল বা স্লুইস গেট দখল করিনি। এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। আমার হুইলস মেশিনসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম স্লুইস গেট থেকে অনেক দূরে। আর সেখানে এখনো আমি কোনো জাহাজ ভাঙার জন্য আনিনি। তাই আমার দ্বারা কোনো ক্ষতি হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। তিনি বলেন, আমিও চাই স্লুইস গেট ও খালটি দখলমুক্ত রাখা হোক।

 


আরো সংবাদ



premium cement