২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

তেঁতুলিয়ায় ভূমিদস্যু মজিদকাণ্ডে অতিষ্ঠ শতাধিক কৃষক পরিবার

-

পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় এক ভূমিদস্যুর বিরুদ্ধে জমি দখল, সরকারি সম্পত্তি দখল করে মার্কেট নির্মাণ, মিথ্যা মামলা দিয়ে নিরীহ কৃষকদের হয়রানিসহ বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যনসহ জনপ্রতিনিধিদের কাছে একাধিকবার অভিযোগ করেও প্রতিকার মেলেনি। ভুক্তভোগীরা অবশেষে প্রতিকার চেয়ে ভূমিমন্ত্রী, দুদক মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন দফতরে গণ-অভিযোগ দিয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, তেঁতুলিয়া উপজেলার শালবাহান ইউনিয়নের মাঝিপাড়া গ্রামের আব্দুল মজিদ পেশায় একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী পরিচয়ের আড়লে তিনি মূলত জমি জালিয়াতিসহ নানা অপকর্মে জড়িত। কৌশলে স্থানীয়দের ফাঁসিয়ে বিপদে ফেলেন। তাদের নানাভাবে হয়রানিসহ একপর্যায়ে তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন।
অভিযোগে বলা হয়, আব্দুল মজিদ স্থানীয় ঈদগাহ, মসজিদ, মাদরাসা ও সরকারি ক্লিনিকের জন্য অন্যের দানকৃত জমির ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে মালিকানা দাবি করেন। একাধিক কৃষক পরিবারের বসতভিটা নিজের দাবি করে মামলা করেন। সড়কের পাশে সরকারি খাস জমি দখল করে নিজে মালিক সেজে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয়দের বরাদ্দ দেন। শালবাহান রোড বাজারের মূল্যবান সরকারি জায়গায় অবস্থিত দোকানের পাশের জায়গাও তিনি বিক্রি করেন। স্থানীয় প্রভাবশালী ও সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে দীর্ঘ দিন ধরেই তিনি এমন অপকর্ম করে চলেছেন। নিরীহ কৃষকদের জমিসংক্রান্ত প্যাঁচে ফেলে সুযোগ বুঝে তিনি তাদের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করেন।
শালবাহান রোড এলাকার শ্রমজীবী নারী আয়েশা খাতুন জানান, তার কেনা ১০ শতক বসতভিটার ওপর মজিদের চোখ পড়ে। এরপর তাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি শুরু করেন। স্বামীহারা ওই নারী নিজেই আয় করে মজিদের সাথে মামলা পরিচালনা করেছেন।
মাঝিপাড়ার শালবাহান রোড জামে মসজিদের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল্লাহ হেল বাকী জানান, এই মসজিদের জমি স্থানীয় এক ব্যক্তি দান করেছেন। কিন্তু গোপনে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে আব্দুল মজিদ এখন মসজিদ ও ঈদগাহের জমিও তার দখলে নিয়েছেন। মসজিদ এবং ঈদগাহের জমি নিজের দাবি করে তিনি আমাদের নামাজে আসতেও বাধা দিচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের কাছে অনেক অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাননি।
এ দিকে সাধারণ মানুষকে হয়রানির অভিযোগ অস্বীকার করে আব্দুল মজিদ বলেন, এসব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। প্রথমে জমিগুলো যার কাছ থেকে কিনেছি তার কাগজপত্র ঠিক ছিল না। পরে সেই জমি আবারো আমার স্ত্রীর নামে কিনি এবং এখন কাগজপত্র সব ঠিক আছে। সরকারি সম্পত্তি (এনিমি প্রপার্টি) বলে যে জমিগুলোর কথা বলা হচ্ছে সেগুলো আমার কেনা জমি।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আব্দুল মান্নান বলেন, তেঁতুলিয়ার শালবাহান রোড এলাকার আব্দুল মজিদ নামে একজনের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষরিত একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনা তদন্তে অভিযোগটি তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

 


আরো সংবাদ



premium cement