২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

বেনাপোল-যশোর রোডের শতবর্ষী রেইনট্রিগুলো আরো ঝুঁকিপূর্ণ

আমফানে যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী অনেকগুলো রেইনট্রি এভাবে ভেঙে পড়েছে : নয়া দিগন্ত -

ঘূর্ণিঝড় আমফানের পর যশোর রোডের শতবর্ষী রেইনট্রিগুলো আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ভয়াবহ এই ঝড়ে যশোর অংশে জীর্ণ ও মৃতপ্রায় ২৩টি শতবর্ষী গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, আমফান চলে যাওয়ার পর মৃতপ্রায় ও জীর্ণ শতবর্ষী গাছগুলো তাদের জন্য অত্যন্ত আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাদের দাবি, এই গাছগুলোর জন্য তারা উন্নয়নবঞ্চিত হয়েছেন। এখন এই গাছই তাদের ওপর ভেঙে পড়ছে।
যশোর জেলা পরিষদ সূত্রে জানা গেছে, ঐতিহাসিক যশোর রোডের যশোর-বেনাপোল অংশের ৩৮ কিলোমিটার সড়কের দুই পাশে দুই শতাধিক শতবর্ষী রেইনট্রি রয়েছে। গত ২০ মে রাতে ঘূর্ণিঝড় আমফানে মহাসড়কের ২৩টি শতবর্ষী গাছ ভেঙে ও উপড়ে পড়েছে। ভেঙে পড়া গাছগুলো ঝিকরগাছার হাজের আলী, বালিখোলা, গদখালি, বেনেয়ালি, বাদে নাভারণ কলোনি বাজার এলাকার। এ ছাড়া অসংখ্য গাছের ডালপালা ভেঙে দুর্ঘটনা ও সম্পদহানির ঘটনা ঘটেছে। গাছ পড়ে নাভারণ কলোনি বাজারের চারটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পরদিন প্রশাসন ও ফায়ার সার্ভিসের তৎপরতায় গাছের কিছু অংশ সরিয়ে সড়ক চলাচলের আংশিক উপযোগী করা হয়।
স্থানীয়দের দাবি, যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী গাছগুলো এখন জীর্ণ ও মৃতপ্রায়। ঘূর্ণিঝড়ের পর বেশ কিছু গাছ উপড়ে ও ভেঙে পড়লেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সব গাছই। আর এতে শতবর্ষী গাছগুলো হয়ে পড়েছে আরো ঝুঁকিপূর্ণ। এ কারণে গত বুধবারের কালবৈশাখী ঝড়ে অনেক স্থানেই এই গাছগুলোর ডালপালা ভেঙে পড়েছে।
আবহাওয়া অফিসের দেয়া তথ্য মতে, আগামীতে আরো কয়েকটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস রয়েছে। দুর্বল হয়ে পড়া গাছগুলো আসন্ন ঝড়ে আরো বড় দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে বলে আশঙ্কা এলাকাবাসীর। এসব নিয়ে আতঙ্কিতও তারা।
এ দিকে নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোরের সমন্বয়ক মাসুদুজ্জামান মিঠু জানিয়েছেন, আমফান ও ঘূর্ণিঝড়ে যশোর-বেনাপোল সড়কে ২৩টি গাছ উপড়ে পড়ে জনগণের জানমাল ও নবনির্মিত রাস্তার ব্যাপক ক্ষতিসাধন করেছে। যশোর-বেনাপোল সড়কের জীর্ণশীর্ণ মৃতপ্রায় গাছগুলো বর্তমানে ‘হিউম্যান থ্রেড’ বা মানব হুমকি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর প্রথম থেকে বেনাপোল বন্দর ও অর্থনৈতিক অঞ্চল বিবেচনায় উন্নত সড়কের কথা বলে আসছে। উন্নত যোগাযোগব্যবস্থা না হলে অর্থনৈতিক অঞ্চল তৈরি হবে না এবং এলাকার মানুষের কর্মের যে অপার সম্ভাবনা তা নষ্ট হবে। ‘উন্নত বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার পাশে কোনো গাছ থাকে না। এ জন্য নাগরিক অধিকার আন্দোলন যশোর-বেনাপোল সড়কের জীর্ণশীর্ণ মৃতপ্রায় গাছগুলো অপসারণ করে টেকসই সড়ক তৈরি করার উপর জোর দাবি জানাচ্ছে। একই সাথে রাস্তা তৈরি শেষে পরিকল্পিতভাবে রাস্তার দুই ধারে পরিবেশবান্ধব গাছ লাগানোরও দাবি জানান তিনি।
ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্সের সাব-কমিটির চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান জানান, যশোর-বেনাপোল সড়কের শতবর্ষী জীর্ণ ও মৃতপ্রায় গাছগুলো এখন জীবনের জন্য হুমকি। বেনাপোল-যশোর রোডে গিয়ে দেখা গেল বহু গাছ ভেঙে মাটিতে শুয়ে আছে। কিছু গাছ ডালপালা খুইয়ে কঙ্কালের মতো দাঁড়িয়ে আছে। দেশের উন্নয়নের স্বার্থে জীর্ণশীর্ণ শতবর্ষী মৃতপ্রায় গাছগুলো কেটে নতুন করে রাস্তার দুই ধার দিয়ে গাছ লাগানো উচিত।

 


আরো সংবাদ



premium cement