লকডাউনের পর একবেলাও পেট পুরে খেতে পাননি লুছিয়া বেগম
- কলাপাড়া (পটুয়াখালী) সংবাদদাতা
- ১১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নে বেতমোড় গ্রামের খালের পাড়েই বসবাস করে লুছিয়া বেগম। প্রতিদিন শহরে অলিগলিতে ভিক্ষাবৃত্তি করে দুবেলা দু’মুঠো অন্ন জোগাতেন। করোনার বিস্তার রোধে দোকানপাট বন্ধে এখন ভিক্ষাও বন্ধ। অন্যের দেয়া এক-দুইমুঠো ভাত জুটলে নুন আর মরিচে পিষে পেটে দেন। কিন্তু এখন আর চলে না।
স্বামী জয়নাল গাজী অনেক আগেই ইহকাল ত্যাগ করেছেন। ২০ বছর ভিক্ষেবৃত্তি করছেন লুছিয়া। দুই মেয়ে ছিল। বিয়ে করে তারা ঢাকায় থাকে। বললেন, ‘হ্যাগো সংসারই চলে না।’ একটি ছোট্ট ঘরে বসবাস এ বৃদ্ধার। সবকিছু নিজেরই করতে হয়। অসুখ-বিসুখ, খাওয়া সব যেন ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। সরকারিভাবে বয়স্কভাতার একটি বই রয়েছে। তাও ২০১৯ সালের জুনের পর আর কোনো টাকা পাননি। ওষুধ লাগলে গ্রামের এক দোকানি বাকিতে দেয়। ভাতার টাকা পেলে শোধ দেন।
ঘরে গিয়ে দেখা গেল, চৌকিতে তেল চিটচিটে একটি বালিশ, পাশে একটি জং ধরা ছোট্ট ট্রাংক। চৌকির ওপর টানানো ময়লা মশারির একপাশ খোলা রয়েছে। যেন ভাগ্যের ওপর নিজেকে এ বয়সে ছেড়ে দিয়েছেন অসহায় মানুষটি। ট্রাংকের মধ্যে রাখা তার বয়স্কভাতার বইটি। আর কিছুই নেই। একটি ছোট্ট তালাও মেরে রেখেছেন। লকডাউনের পর থেকে উপার্জনহীন এ বৃদ্ধার পেট পুরে খাওয়াও জোটেনি। আর চেয়ারম্যান মেম্বারের চোখেও পড়েনি তার অসহায়ত্ত। সরকার খাদ্য সহায়তা দিলেও লুছিয়ার জোটেনি।
কলাপাড়া পৌরশহর থেকে প্রায় সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে, লুছিয়ার বসতঘরের খোঁজে গেলে দিশেহারা হয়ে কী করবেন দিশা পাচ্ছিলেন না। জানালেন এখন দরকার তার খাদ্য সহায়তা। পাতিলে অন্যের দেয়া এক মুঠো ভাত রয়েছে। যা রাতে গিলবেন। ভরসা এই। কালকের খবর জানা নেই। কে তাকে পৌঁছে দেবে খাদ্য সহায়তা তা জানেন না লুছিয়া বেগম।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক জানালেন, ওনার বাড়িতে আজকে প্রয়োজনীয় খাদ্যসহায়তা পৌঁছে দেয়া হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা