২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ওমরাহ করতে গিয়ে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় দেবিদ্বারের ২২ জনের মানবেতর জীবন

-

গত ফেব্রুয়ারি মাসে সৌদি আরবে ওমরাহ পালন করতে গিয়ে ফ্লাইটটি বাতিল হওয়ায় কুমিল্লার দেবিদ্বারের ২২ জন ওমরাহ যাত্রী জেদ্দাসহ বিভিন্ন জয়গায় আটকা পড়েছেন। হজ কোম্পানি ২২ জনকে চারটি রুমে থাকার জন্য হোটেল ব্যবস্থা করলেও খাবারের কোনো ব্যবস্থা না থাকায় অর্থের সঙ্কটে তাদেরকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হচ্ছে বলে জানা গেছে। এমতাবস্থায় তারা জরুরি ভিত্তিতে মানবিক দিক বিবেচনায় প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট সবার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন, যাতে তারা অতিদ্রুত তাদের নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন।
জানা যায়, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি এরা সৌদি এয়ারলাইন্সের ৮০২ ফ্লাইটে ওমরাহ পালন করতে যান এবং তাদের গত ১৪ মার্চ সৌদি এয়ারলাইন্সের ৮০২ ফিরতি ফ্লাইট তাদের দেশে ফেরার কথা ছিল। কিন্তু মক্কা থেকে ১০ মার্চ তাদের জানানো হয় ফ্লাইটটি ১৪ মার্চের পরিবর্তে ১৫ মার্চ সৌদি সময় বেলা ৩টা ৩০ মিনিটে রওনা হবে। সেই অনুযায়ী ১৫ মার্চ সকাল ১০টায় জেদ্দা এয়ারপোর্টে উপস্থিত হওয়ার পর তাদের দুপুর ১২টায় মাল বুকিং দিতে বললে তারা মাল বুকিং দিতে ভেতরে প্রবেশ করলে জানানো হয় ফ্লাইটটি বাতিল করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক যাত্রীরা বিষয়টি ওজারাতুল হজকে বিষয়টি জানালে তারা ১৭ মার্চ সৌদি সময় রাত ৩টা ৩০ মিনিটে ৮০৮ সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি টিকিট ইস্যু করে তাদেরকে একটি হোটেলে পাঠায়। পরে ১৬ মার্চ বিকেলে ওজারাতুল হজের পক্ষ থেকে আবার জানানো হয় রাতের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এর পর থেকে আর কোনো ফ্লাইট না থাকায় তারা বিভিন্ন স্থানে আটকে যান। ওজারাতুল হজ কোম্পানি থাকার জন্য হোটেল ব্যবস্থা করলেও তাদের অনেকটা কষ্টের মাঝেই সেখানে থাকতে হচ্ছে।
এ নিয়ে মাওলানা মাইনুদ্দীন সরকার নামে একজন মোবাইল ফোনে জানান, জেদ্দায় অবস্থিত বাংলাদেশ অ্যাম্বাসির কাউন্সিলর মাকসুদ সাহেবের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি হজবিষয়ক কর্মকর্তা হাসান সাহেবের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। তার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সব তথ্যাদি নেন এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন কিন্তু আজ পর্যন্ত তাদের কোনো সহযোগিতা পাওয়া যায়নি।
ওমরাহ হজযাত্রী কাঠ ব্যবসায়ী বাবুল মিয়া জানান, তিন বছরের শিশু সন্তান রেখে তারা স্বামী-স্ত্রী ওমরাহ করতে আসেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ে ফ্লাইট বাতিল হওয়ায় এবং বৈশ্বিক করোনার প্রকোপে এক অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে দিন কাটাচ্ছেন।
৮০ বছরের বৃদ্ধ ওমরাহ যাত্রী জারু মিয়া জানান, তিনি জমি বিক্রি করে নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা নিয়ে এসেছি। ফেরার পথে ফ্লাইটটি বাতিল হওয়ায় খাবারসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত। সাথে কোনো টাকা পয়সা না থাকায় অনেকটা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। তিনি শারীরিকভাবে অসুস্থ। থাকা, খাওয়া ও চিকিৎসার অভাবে অনেক কষ্ট হচ্ছে।
হজযাত্রী আয়ফলেরন্নেসা জানান, তিনি হাইপ্রেসারের রোগী। সাথে কোনো টাকা পয়সাও নেই। ফ্লাইট নিয়ে অনিশ্চয়তার কারণে প্রায় সময় প্রেসার বেড়ে যায়। অন্যান্য দেশের সরকার তাদের ওমরাহ যাত্রীদের নিজ দেশে নিয়ে গেলেও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে উদ্যোগ না থাকায় তাদের পড়তে হয়েছে নানা বিপাকে।


আরো সংবাদ



premium cement