২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রতিদিন আড়াই হাজার লিটার দুধ অবিক্রীত

করোনায় ছোবলে মানিকছড়ির দুগ্ধ খামারিরা দিশেহারা

মানিকছড়ির একটি ডেইরি ফার্ম : নয়া দিগন্ত -

করোনার আঘাতে সারা দেশে দোকানপাট বন্ধ। মানুষজন গৃহবন্দী। এ অবস্থায় খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার দুগ্ধ খামারিরা চরম বিপদে আছেন। এক দিকে দুধের গ্রাহক নেই, অন্য দিকে বাজারে গো খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি। এখানে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজার থেকে আড়াই হাজার লিটার বা ৫০-৫৫ মণ দুধ উৎপাদন হলেও বিক্রি হচ্ছে মাত্র উৎপাদনের ২০-৩০ ভাগ। গ্রামগঞ্জে ফেরি করেও দুধ বিক্রি করা যাচ্ছে না। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, মানিকছড়ি উপজেলায় ছোট-বড় ডেইরি ফার্ম (দুগ্ধ খামার) রয়েছে ৩৯টি। এতে সহস্রাধিক দেশী-বিদেশী গাভী লালন-পালন করা হয়। নিয়মিত এসব ফার্মে গড়ে দুই থেকে আড়াই হাজার লিটার বা ৫০-৬০ মণ দুধ উৎপাদন হয়। এই দুধ উপজেলা পেরিয়ে ফটিকছড়ি ও চট্টগ্রামের মিষ্টান্ন দোকান ও বেকারিতে সরবরাহ করা হতো। প্রতি লিটার দুধ খামারে ৫৫ টাকা, ফটিকছড়িতে ৬০ টাকা এবং চট্টগ্রামে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি করা যেত। করোনার আঘাতে এখন দোকানপাট বন্ধ ছাড়াও বাসাবাড়িতে হাহাকার অবস্থা। ফলে দুধের গ্রাহক এখন ৫-১০ শতাংশ এ নেমে এসেছে। গ্রামগঞ্জে ফেরি করেও দুধ বিক্রি করা যাচ্ছে না। কিন্ত খামারে দুধ উৎপাদন ও গো খাদ্য স্বাভাবিক রাখতে গিয়ে খামারিরা এখন উভয় সঙ্কটে।
এক দিকে দুধ বিক্রি নেই, অন্য দিকে বাজারে গো খাদ্যের মূল্যবৃদ্ধি। বাজারে আগে গো খাদ্য পাতা ভূসি বিক্রি হতো প্রতি বস্তা ৮৫০ টাকা আর এখন বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ টাকায়। ফলে খামারে ব্যয় বেড়ে গেছে বহুগুণ। এ অবস্থায় উপজেলার খামারিরা চরম সঙ্কটকাল অতিবাহিত করছে। অনেকের স্বপ্ন ধূলিসাৎ হওয়ার পথে।
উপজেলার সবচেয়ে বড় এ কে এগ্রো ডেইরি ফার্মে উন্নত জাতের গরু রয়েছে দুই শতাধিক। এর মধ্যে দুগ্ধ গাভী (পিজিয়াম)৭০টি, ষাঁড় ৫৫টি, গাভী ২৮টি, ছোট বাছুর ২৮টি, ছাগল ৬৫টি, ভেড়া ১০টি। এখানে প্রতিদিন গড়ে ৫৫০ লিটার দুধ উৎপাদন হচ্ছে। বাজারে দুধ বিক্রি হচ্ছে মাত্র এক শ’ থেকে দেড় শ’ লিটার। অবশিষ্ট দুধ শ্রমিকরা গ্রামে গ্রামে ফেরি করেও বিক্রি করতে পারছেন না। অবিক্রীত দুধ ফেলে দেয়া হচ্ছে খাল-বিলে।
এ কে এগ্রো ডেইরি ফার্মের মালিক ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় ডেইরি ফার্ম মালিক সমিতির সভাপতি হাজী ইকবাল হোসেন খামারিদের বর্তমান দুরবস্থার কথা স্বীকার করে বলেন, করোনার কারণে সর্বত্রই দোকানপাট বন্ধ, লোকজন গৃহবন্দী, সবাই কর্মহীন। ফলে কেউই দুধ কিনছে না। প্রতিদিন উপজেলার প্রায় আড়াই হাজার লিটার দুধ অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। অন্য দিকে বাজারে গো খাদ্যের মূল্য অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গেছে। ফলে খামার নিয়ে আমরা চিন্তিত হয়ে পড়েছি। এসব প্রতিষ্ঠানকে বাঁচাতে হলে এখনই সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। না হলে দেশে হাজার হাজার খামার বন্ধ এবং শ্রমিক বেকার হবে। কোটি কোটি টাকা পুঁজি বিনিয়োগকারীরা পথে বসবে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: সুচয়ন চৌধুরী বলেন, উপজেলার ৩৯টি তালিকাভুক্ত ছোট-বড় খামার রয়েছে। এ মুহূর্তে উৎপাদিত দুধ বাজারজাত নিয়ে ওরা বিপদে পড়েছে। মানুষের হাতে টাকা নেই। অথচ এ সময়ে শরীরে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দুধ খাওয়া প্রয়োজন ছিল।


আরো সংবাদ



premium cement
চীনা কোম্পানি বেপজা অর্থনৈতিক জোনে ১৯.৯৭ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে মৃত মায়ের গর্ভে জন্ম নিলো নতুন প্রাণ দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদ সমাবেশে কেউ মারা যায়নি : পুলিশ সুপার হামাসকে কাতার ছাড়তে হবে না, বিশ্বাস এরদোগানের জাহাজভাঙা শিল্পে শ্রমিক নিরাপত্তার উদ্যোগ ভালো লেগেছে : সীতাকুন্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস ১০ দেশের অংশগ্রহণে সামরিক মহড়া শুরু করল আরব আমিরাত গাজা থেকে ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের পর ২ হাজার ফিলিস্তিনি নিখোঁজ ৯ বছর পর সৌদি আরবে আসছে ইরানি ওমরা কাফেলা দুই ভাইকে পিটিয়ে হত্যা : প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশের হামলার নিন্দা হেফাজতে ইসলামের ভর্তি পরীক্ষায় জবিতে থাকবে ভ্রাম্যমাণ পানির ট্যাংক ও চিকিৎসক মিয়ানমার থেকে ফেরত আসা বাংলাদেশীরা কারা?

সকল