২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জীবননগরে অভাবে পড়ে ইটভাটায় কৃষিজমির মাটি বিক্রি

-

করোনা দুর্যোগে কাজকর্ম সব বন্ধ থাকায় খুব অভাবে আছেন চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় কৃষক ও জমির মালিকরা। কবে আবার সব কিছু স্বাভাবিক হয় সেই চিন্তায় মুষড়ে পড়েছেন তারা। তাদের অভাবের এ সুযোগে কৃষিজমির টপ সয়েল বা জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে ইটভাটায়। বিনিময়ে জমির মালিকদের হাতে ধরিয়ে দেয়া কিছু টাকা। কিন্তু এর মাধ্যমে হারিয়ে যাচ্ছে কৃষিজমির ফসল উৎপাদনের প্রাণ টপ সয়েল। কৃষকদের অভাবের সুযোগে ইটভাটা মালিকরা টাকার প্রলোভন দেখিয়ে কিংবা মাটির পরিবর্তে ইট দেয়ায় কৃষিজমির উর্বর মাটি চলে যাচ্ছে ইটভাটায়। আর সেই মাটি দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে ইট। মূলত নগদ টাকার আশায় কৃষকরা জমির মাটি বিক্রি করে দিচ্ছেন। এ অবস্থায় জমি তার উর্বরাশক্তি হারিয়ে চাষাবাদের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। কৃষিবিদরা এমন পরিস্থিতিতে ফসলহানির আশঙ্কা করছেন।
উপজেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, জীবননগর উপজেলায় মোট ২৪টি ইটভাটা রয়েছে। বেশির ভাগ ইটভাটায় নেই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র। অনেক ইটভাটায় লাইসেন্সই নেই। আবার অনেক ইটভাটায় লাইসেন্স নবায়ন করা হয়নি। ইটভাটা স্থাপন ও ইট প্রস্তুত আইন না মেনে আবাসিক এলাকা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসংলগ্ন স্থানে কৃষিজমিতে ও বনের ভেতর ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে।
জীবননগর উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, উপজেলায় মোট আবাদি জমির পরিমাণ ১৬ হাজার ৩৫৭ হেক্টর। প্রতিটি ইটভাটা স্থাপনে পাঁচ-সাত একর জমির প্রয়োজন হয়। আর এসব ইটভাটায় ইট তৈরির জন্য প্রতি বছর শত শত বিঘা জমির টপ সয়েল কাটা হচ্ছে। ফসলি জমির টপ সয়েল কেটে নেয়ার কারণে ফসলের প্রধান খাদ্য বিভিন্ন জৈব সারের ব্যাপকভাবে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।
কৃষিবিদ মুন্সী আবদুস সালেক বলেন, ৬-১৮ ইঞ্চি গভীরতার মাটি ফসল উৎপাদনে শক্তি জোগায়। মাটির এ অংশে যেকোনো ফসল উৎপাদনের গুণাগুণ সংরক্ষিত থাকে। বীজ রোপণের পর এই অংশ থেকেই ফসল প্রয়োজনীয় খাদ্য গ্রহণ করে থাকে এবং বেড়ে ওঠে। জমির টপ সয়েল একবার কেটে নেয়া হলে সে জমির মৃত্তিকাশক্তি আর থাকে না। ফলে ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে ওই জমিতে কোনো ফসল উৎপাদিত হয় না। ফলে জমিটি একসময় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।
উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটাসংলগ্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ইটভাটা এলাকা ও এর আশপাশের বেশির ভাগ ফসলি জমির মাটি ৫ থেকে ১০ ফুট পর্যন্ত গভীর করে কাটা হয়েছে। ফলে এসব ফসলি জমি ডোবায় পরিণত হচ্ছে। জমির মালিকদের ইটভাটা মালিকরা নগদ অর্থ দিয়ে কিংবা সমতল করে দেয়ার নামে জমির ওপরের অংশের মাটি কেটে নিচ্ছেন। সাধারণ কৃষকরা যদি জানতেন জমির টপ সয়েল কাটার ফলে তাদের জমির কী পরিমাণ ক্ষতি হচ্ছে তা হলে তারা কোনো কিছুর বিনিময়ে জমির টপ সয়েল বিক্রি করতেন না।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সারমিন আক্তার বলেন, জমির টপ সয়েল বিক্রি করলে জমির উর্বরাশক্তি কমে যায়। আমরা কৃষকদেরকে জমির টপ সয়েল বিক্রি না করার জন্য পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু কৃষকদের মধ্যে টপ সয়েল সম্পর্কে ব্যাপক ধারণা না থাকায় আমাদের পরামর্শকে তারা গুরুত্ব না দিয়ে জমির মাটির বিক্রি করে দিচ্ছেন।


আরো সংবাদ



premium cement
গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ছেলে হারা মা সাথিয়ার কান্না যেন থামছেই না বৃষ্টির জন্য নারায়ণগঞ্জে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় প্রবাসী স্ত্রী থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায়, ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটারের তালিকা চান হাইকোর্ট আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরো ৪৬ বিজিপি সদস্য উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কক্সবাজারে ট্রেন লাইনচ্যুত, যোগাযোগ বন্ধ

সকল