২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য

হাতিয়ায় সাংবাদিক পরিবারের জমি দখলের অভিযোগ

-

প্রশাসনের করোনা ব্যস্ততা ও আদালত বন্ধ থাকার সুযোগে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে এক সাংবাদিক পরিবারের দুই একর জমি দখল করে বাড়ি নির্মাণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে ভূমিদস্যুদের বিরুদ্ধে।
উপজেলার জাহাজমারা ইউনিয়নের পূর্ব বিরবিরি এলাকায় স্কেভেটর (বগা মেশিন) ও ট্রাক দিয়ে দুই একর সমতল কৃষিজমির মাটি কেটে পুকুর ও বাড়ি তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে এলাকার সরকারি দলের নামধারী শরিফ উদ্দিন, জাবের উদ্দিন ওরফে জাবের মাঝি, তার ছেলে হাসান মাঝি ও রিয়াজ।
জানা গেছে, পূর্ব চর বিরবিরি মৌজার আরএস ৫১৫ নম্বর খতিয়ানের ৪৭১৬ দাগের দুই একর জমির মালিক সাংবাদিক আবুল বাশারের বাবা হাতিয়া পৌরসভা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের অধিবাসী নুর ইসলাম। বার্ধক্যজনিত ও হার্টের অসুস্থতায় তিনি চট্টগ্রাম মেডিক্যালে সিসিইউতে ভর্তি আছেন। এরই ফাঁকে ১৪ মার্চ গভীর রাতে ওই জমিতে স্কেভেটর (বগা মেশিন) ও ট্রাক দিয়ে মাটি কাটা শুরু করে ভূমিদস্যুরা।
এ দিকে নুর ইসলামের ছেলে আবুল কাশেম বাদি হয়ে জবরদখলকারী শরিফ, জাবের, হাসান ও রিয়াজ এবং আরো অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে সম্পত্তির ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা জারির কাগজপত্রসহ গত ১৬ মার্চ হাতিয়া থানায় একটি এজাহার দাখিল করেন। ১৭ মার্চ পুলিশ গিয়ে জমিতে অবৈধভাবে স্কেভেটর ও ট্রাক দিয়ে মাটি কেটে পুকুর ও বাড়ি তৈরির কাজ বন্ধ করে দিলেও পরের দিন থেকে আবার মাটি কাটার কাজ শুরু করে তারা।
পরে আবুল কাশেম প্রতিকার চেয়ে চেয়ে হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর ভূমি জবরদখলকারীদের বিরুদ্ধে আরো একটি অভিযোগ দাখিল করেন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গত ১৯ মার্চ জবরদখলকারী জাবের হোসেন মাঝি, হাসান মাঝি ও রিয়াজকে গত ১ এপ্রিল বুধবার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গণশুনানিতে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ জারি করেন।
বাদি আবুল কাশেম জানান, আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে জমিতে মাটি কাটার কাজ অভ্যাহত রেখেছে ভূমিদস্যুরা। আমরা আইনের সহায়তা চাই। তিনি জানান, ১৯৭২-৭৩ সালের বন্দোবস্তীয় নথিমূলে প্রাপ্ত জায়গার মালিক ইদ্রিস মিয়া ও আমিনুল হক থেকে ১৯৮৫ সালে ১৬৯ নম্বর রেজিস্ট্রি ছাপ কবলা মূলে ১.০০ একর, ৬৮৯ নম্বর রেজিস্ট্রি ছাপ কবলা ০.৫০ একর এবং ১৯৮৬ সালে ৩০২১ নম্বর রেজিস্ট্রি ছাপ কবলা মূলে ০.৫০ একরসহ দলিল মূলে মোট ২.০০ একর জমি তার বাবা খরিদসূত্রে মালিক হন। চর বিরবিরি মৌজার জেএল নম্বর ৬০ খতিয়ান নম্বর ৫১৫ দাগ নম্বর ৪৭১৬ এর ওই মোট ২.০০ একর জমি ১৯৯৫ সালে তার বাবা নুর ইসলামের নামে মাঠ রেকর্ড হয় এবং পরে খতিয়ানপ্রাপ্ত হয়ে বিগত ২০১৭ সালে ০৩০৮০৬৩ নম্বর মূলে ওই জমির খাজনা পরিশোধ করা হয়। এ দিকে ডিয়ারা জরিপে ওই জমি ভুলবশত ১ নম্বর খতিয়ানভুক্ত হলে ভুল সংশোধনের জন্য তারা দেওয়ানি মামলা করেন। ওই দেওয়ানি ৭১/০৫ মামলায় আদালত তাদের পক্ষে ডিক্রি দেন।
এ ব্যাপারে হাতিয়া থানার ওসি আবুল খায়ের বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ গিয়ে জমিতে মাটি কাটা বন্ধ করেছে। জবরদখলকারীরা রাতে কাজ করছে এমন কথা শুনেছি। সে খবর নেয়া হবে। তবে এ মুহূর্তে পুলিশ করোনা পরিস্থিতি নিয়ে খুবই ব্যস্ত। জমির ওপর ১৪৪ ধারা জারি করে নোটিশ এনে দিলে আমরা স্থায়ীভাবে কাজ বন্ধ করে দিতে পারব।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, লকডাউন পরিস্থিতে আমি এখন ব্যস্ত, শুনানির জন্য পরে আবার তারিখ জানানো হবে।


আরো সংবাদ



premium cement