২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

সিংগাইরে ভয়াবহ করোনা ঝুঁকিতে ২০ হাজার ইটভাটা শ্রমিক

সিংগাইরে ঝুঁকিপূর্ণভাবে একটি ইটভাটায় কাজ করছেন শ্রমিকরা : নয়া দিগন্ত -

সরকারি নির্দেশনা অমান্য করে মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার শতাধিক ইটভাটা চালুু রাখায় প্রায় ২০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন করোনাভাইরাস সংক্রমণের মারাত্মক ঝুঁকিতে। ভাটা মালিকরা কোনো প্রকার প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না নিয়ে ইটভাটা চালু রাখায় শ্রমিকেরা এই ঝুঁকিতে রয়েছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত শ্রমিকরা দলবেঁধে কাজ করায়, ঝুপড়ি ঘরে গাদাগাদি করে রাতযাপন ও কাজ শেষে প্রকাশ্যে যত্রতত্র ঘুরে বেড়ানোয় সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়ছে।
সরেজমিন একাধিক ইটভাটা ঘুরে দেখা যায়, ইটভাটায় চলছে ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। কেউ ইট তৈরি করছে, অনেকেই ভাটায় কাঁচা ইট সাজাচ্ছে, কেউ পোড়া ইট বের করছে, আবার অনেকেই কয়লা ভাঙ্গিয়ে ভাটার আগুনে দিচ্ছে। তাদের কারোরই মুখে নেই মাস্ক বা অন্য কোনো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা। ইটভাটার শ্রমিক সর্দার কাসেম আলী বলেন, ‘কোম্পানি ছুটি না দিলে আমরা কি করুম, বাধ্য হয়ে কাজ করতে হচ্ছে। আরেক শ্রমিক সুরুজ আলী উল্টো প্রশ্ন ছুড়ে বলেন, দ্যাশের সব কিছু বন্ধ, আমাদের ভাটা বন্ধ হয় না কেন?’
শ্রমিকদের রান্নার কাজে নিয়োজিত খুলনা জেলার রেশমী বলেন, ছয় মাস ধরে কাজ করছি। কোনো ছুটি নেই। অপর দিকে লোড-আনলোড শ্রমিক রাজশাহী জেলার চারঘাটের শাহীন মিয়া বলেন, এ উপজেলার প্রতিটি ভাটায় দেড় শ’ থেকে দুই শতাধিক লোক কাজ করছেন। ইটভাটায় কাজে নিয়োজিত নারী শ্রমিক শিল্পী বলেন, ‘গরিব মানুষ, কাম না থাকলে খামু কি?’
চান্দহর ইউনিয়নের রিফায়েতপুরের আরইপি ব্রিকসের ম্যানেজার সোহরাব হোসেন জানান, সিংগাইরের কোনো ভাটাই বন্ধ হয়নি। দেশে লকডাউন চলছে। শ্রমিকরা বাড়ি যাবে কিভাবে? আর খাবেই বা কি?
উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের মাটিকাটা ও ইটভাটা প্রতিরোধ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আবু সায়েম অভিযোগ করে বলেন, সারা বিশ্বের এ মহাবিপর্যয়ের মধ্যেও ভাটা মালিক ও শ্রমিকদের নেই কোনো সচেতনতা। কাজের ফাঁকে অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্থানীয় হাটবাজার ও লোকালয়ে। এতে বাড়ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি। দ্রুত ইটভাটাগুলো বন্ধের দাবিও জানান তিনি।
এ প্রসঙ্গে সিংগাইর উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও এএবি ব্রিকসের স্বত্বাধিকারী আব্দুল কুদ্দুস বলেন, বন্ধ করা হয়নি ঠিকই, তবে খুব তাড়াতাড়ি বন্ধ করা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মেহের নিগার সুলতানা বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে সব কিছু বন্ধের নির্দেশ দেয়া হয়েছে। তারপরও যদি ইটভাটা চালু থাকে সে ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা
নেয়া হবে।


আরো সংবাদ



premium cement