১৭ এপ্রিল ২০২৪, ০৪ বৈশাখ ১৪৩১, ০৭ শাওয়াল ১৪৪৫
`

পলাশে শীতলক্ষ্যা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষ

-

নদীর পানিতে ভাসমান খাঁচায় মাছ চাষ করে দিন বদলের স্বপ্ন দেখছেন নরসিংদীর পলাশের মাছ চাষিরা। লাভজনক হওয়ায় নতুন এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় মৎস্যজীবী ও বেকার যুবকরা। সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে নতুন কর্মসংস্থানের। মাছ চাষিরা জানিয়েছেন তেলাপিয়া, পাংগাস, কই, শিং, মাগুর, গ্রাসকার্প, রুই, চিংড়ি, সরপুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যায় এ পদ্ধতিতে। একটি খাঁচায় ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি মাছ উৎপাদন সম্ভব। বাজার দর স্বাভাবিক থাকলে প্রতি খাঁচায় প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা লাভ হয়ে থাকে।
সম্প্রতি শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান পদ্ধতিতে খাঁচায় মাছ চাষ শুরু করেছেন স্থানীয়রা। সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঘোড়াশাল পৌর এলাকার পলাশ বাজার নদী ঘাটের পাশে প্রায় এক কেলোমিটার এলাকাজুড়ে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষ করছেন সোহরাব হোসেন। এখানে বড় বড় খাঁচায় নদীর প্রবাহমান পানির মধ্যেই মাছের চাষ হচ্ছে। প্রায় পাঁচ মাস আগে নতুন এই পদ্ধতিতে সোহরাব মাছ চাষ শুরু করেন। তার এই ভাসমান পদ্ধতিতে স্থানীয় অনেক মৎস্যজীবী ও বেকার যুবকরা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। সোহরাব হোসেন জানান, বাঁশ ও জাল দিয়ে বড় হাফা (খাঁচা) তৈরি করতে হয়। খাঁচা পানিতে ভাসিয়ে রাখার জন্য প্রয়োজন হয় ড্রাম। এতে তেলাপিয়া, পাংগাস, কই, শিং, মাগুর, গ্রাস কার্প, রুই, চিংড়ি, সরপুঁটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা যায়। বাজারে এসব মাছের চাহিদাও ভালো।
সোহরাব হোসেন বলেন, আমি প্রথম মেঘনা নদীতে খাঁচায় মাছ চাষের বিষয়টি দেখে এর প্রতি আগ্রহী হই। পরে ইন্টারনেট থেকে বিভিন্ন তথ্য নিয়ে এই পদ্ধতিতে আমি প্রথম শীতলক্ষ্যা নদীতে মাছ চাষ শুরু করি। সাফল্য পাওয়ায় এখন অনেকে এই নদীতে মাছ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। বর্তমানে আমার ৫০টি খাঁচা রয়েছে। ৫০টি খাঁচা তৈরিতে খরচ হয়েছে প্রায় আট লাখ টাকা। খাঁচার গভীরতা ৬ ফুট, প্রস্থ ১০ ফুট ও দৈর্ঘ্য ২০ ফুট।
নদীতে গিয়ে দেখা যায়, মূলত তেলাপিয়ার চাষ করা হচ্ছে। জুলাইয়ে পোনা কিনে খাঁচার মধ্যে লালন শুরু করা হয়। পাঁচ মাসের মধ্যেই মাছ বিক্রির উপযুক্ত হয়। প্রতি খাঁচা থেকে ৩০০-৪০০ কেজি মাছ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি মাছ ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা বিক্রি হয়। বাজার স্বাভাবিক থাকলে প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ হয়। তিনি আরো বলেন, স্বল্প পুঁজি নিয়েই এই পদ্ধতিতে মাছ চাষ করা যায়। প্রথমে খাঁচা তৈরি করতে এককালীন বেশি টাকা লাগে। এরপর শুধু খরচ হবে মাছের পোনা ও মাছের খাবার বাবদ। এর জন্য নিজস্ব জলাভূমির প্রয়োজন নেই। যে কেউ এই পদ্ধতিতে নদীতে মাছ চাষ করতে পারেন।
এ বিষয়ে পলাশ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারহানা আলী বলেন, প্রথম বারের মতো শীতলক্ষ্যা নদীতে ভাসমান পদ্ধতিতে মাছ চাষের বিষয়টি শুনেছি। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে ইচ্ছে করলে অনেক মৎস্যজীবী ও বেকার যুবকরা স্বাবলম্বী হতে পারেন। আগ্রহীদের আমরা প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেবো।

 


আরো সংবাদ



premium cement