১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫
`

ক্রাইস্টচার্চে মসজিদে সন্ত্রাসী হামলার ২ বছর পালন করলো নিউজিল্যান্ড

স্মরণসভায় নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন (মাঝে)। - ছবি : সংগৃহীত

শনিবার নিউজিল্যান্ড তাদের ইতিহাসের অন্যতম ভয়াবহ একটি দিনের দু’বছর পালন করল। এ দিনে ক্রাইস্টচার্চের দুটি
মসজিদে ৫১ জন নামাজরত ব্যক্তিকে হত্যা করেছিল এক শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদী সন্ত্রাসী।

ক্রাইস্টচার্চের ওই এলাকায় কয়েক শ’ লোক সমবেত হয়েছিল নিহতদের স্মরণের জন্য। এটি সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।

একই ধরনের স্মরণসভার আয়োজন করার কথা ছিল গত বছর। তবে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে তা বাতিল করা হয়।

স্মরণসভায় ছিলেন কিরন মুনীর। যার স্বামী হারুন মোহাম্মদ এ সন্ত্রাসী হামলায় নিহত হয়েছিলেন। তিনি সমবেত জনতাকে বলেন, তিনি তার জীবনের ভালোবাসাকে ও তার প্রিয়তমকে হারিয়েছেন।

তিনি বলেন, তার স্বামী তাদের দুসন্তানের স্নেহময় বাবা ছিলেন। তিনি সবেমাত্র তার ডক্টরেট ডিগ্রি সম্পন্ন করেছিলেন। তিনি তার সমাবর্তনের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিলেন। এমন সুন্দর সময়ে তিনি তার হাসিমুখটা শেষবারের জন্য দেখেছিলেন। তিনি আর কখনো তাকে দেখতে পাবেন না।

তিনি আরো বলেন, নিউজিল্যান্ডের ইতিহাসের এ ভয়ঙ্কর দিনটি আবার ফিরে আসবে কিনা তিনি জানেন না। কিন্তু ওই দিনটি তার হৃদয়কে চূর্ণ করে দিয়েছে হাজারো অংশে, যেমনটা হৃদয় ভেঙেছে অন্য ৫০টি পরিবারের।

আল-নুর মসজিদের ওই হমলায় ৯ বার গুলিবিদ্ধ হবার পরও বেঁচে যাওয়া টেমেল আটাচুকুগো বলেন, ‘এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বর্ণবাদ ও অজ্ঞতার কারণে। তারা সমস্ত মানবতার ওপর আক্রমণ করেছে।’

হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিরা কখনো তাদের হৃদয়ের যন্ত্রণা মুছে ফেলতে পারবেন না। তারা আর কখনো স্বাভাবিক মানুষ হতে পারবেন না। সে যা হোক, ভবিষ্যৎ আমাদের হাতে। আমরা এর মধ্য দিয়েই এগিয়ে যাব। আমাদের সকলকে ইতিবাচক হতে হবে,’ বলেন তিনি।

২০১৯ সালের ১৫ মার্চের এ আক্রমণে অস্ট্রেলীয় ব্রেন্টন ট্রান্ট আল-নুর মসজিদে শুক্রবারের জুমার নামাজের সময় ৪৪ ব্যক্তিকে হত্যা করেন। পরে লিনউড মসজিদেও তিনি হামলা চালান। সেখানে তিনি আরো সাত ব্যক্তিকে হত্যা করেন।

গত বছর ব্রেন্টন ট্রান্ট (৩০) অভিযুক্ত হয়েছেন ৫১ জনকে হত্যার জন্য। এছাড়াও তিনি ৪০ জনকে হত্যার চেষ্টা ও একটি সন্ত্রাসবাদের মামলায় অভিযুক্ত হন। তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়। দণ্ডকালীন সময়ে তাকে জামিনে মুক্তিও দেয়া হবে না।

হামলার পর নিউজিল্যান্ড দ্রুততার সাথে আধা স্বয়ংক্রিয় এসব অস্ত্র নিষিদ্ধ করে একটি নতুন আইন পাস করে।

শনিবারের স্মরণসভায় নিহত ৫১ ব্যক্তির নাম পাঠ করা হয়। প্রথম প্রতিরোধ চেষ্টাকারীরা, এমনকি পুলিশ ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয়।

হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের প্রতি ও হামলার শিকার ব্যক্তিদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি দেখিয়ে, এছাড়া দ্রুততার সাথে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ন্ত্রণে পদক্ষেপ নিয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছেন নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন।

এদিন তার ভাষণে সমবেত জনতাকে আরডার্ন বলেন, ‘তিনি কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন। কারণ যা ঘটেছে তা কথার মাধ্যমে পরিবর্তন করা যাবে না।’

মুসলিম সম্প্রদায় এর আগেও ঘৃণা ও বর্ণবাদের শিকার হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

‘কথাকে শুধু পরিবর্তনের জন্য ব্যবহার করা উচিৎ,’ বলেন তিনি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘নিউজিল্যান্ডের কর্তব্য হলো মুসলিম সম্প্রদায়কে সমর্থন করা। এখানে ১৫ মার্চের একটা প্রশ্নাতীত প্রভাব আছে। যদিও এটা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে হৃদয়কে ভেঙে দেয়। কিন্তু এর ফলেই যত দেরিতে হোক বা দ্রুত আমরা একটি ঐক্যবদ্ধ জাতি হতে পেরেছি।’

গত সপ্তাহে পুলিশ ক্রাইস্টচার্চে একজন ২৭ বছর বয়স্ক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে, যিনি অনলাইনে ক্রাইস্টচার্চের হামলার শিকার ওই দুই মসজিদে আরো হত্যার হুমকি দিয়েছিলেন।

সূত্র : ডেইলি সাবাহ


আরো সংবাদ



premium cement
ফরিদপুরের গণপিটুনিতে নিহত ২ নির্মাণশ্রমিক জাতিসঙ্ঘে ফিলিস্তিনি সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো তীব্র তাপপ্রবাহে বাড়ছে ডায়রিয়া হিটস্ট্রোক মাছ-ডাল-ভাতের অভাব নেই, মানুষের চাহিদা এখন মাংস : প্রধানমন্ত্রী মৌসুমের শুরুতেই আলু নিয়ে হুলস্থূল মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে মূল্যস্ফীতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না এত শক্তি প্রয়োগের বিষয়টি বুঝতে পারেনি ইসরাইল রাখাইনে তুমুল যুদ্ধ : মর্টার শেলে প্রকম্পিত সীমান্ত বিএনপির কৌশল বুঝতে চায় ব্রিটেন ভারতের ১৮তম লোকসভা নির্বাচনের প্রথম দফার ভোট আজ নিষেধাজ্ঞার কারণে মিয়ানমারের সাথে সম্পৃক্ততায় ঝুঁকি রয়েছে : সেনাপ্রধান

সকল