২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ভয়াবহ দাবানল ; ক্রিসমাসের ছুটিতে অস্ট্রেলিয়া ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা

- ছবি : সংগৃহীত

বছর শেষের সিডনি মানেই অন্য আকর্ষণ। বিশ্বের যে ক’টি দেশ সবার আগে নতুন বছরে পা রাখে, তার মধ্যে একটি অস্ট্রেলিয়া। সিডনির সাগরপাড়ের আলোকসজ্জা বিমুগ্ধ করে রাখে বিশ্ববাসীকে। তাই ক্রিসমাস বা ইংরাজি নববর্ষে আনন্দময়, ভ্রমণপিপাসু মানুষজনের অন্যতম টার্গেট ডেস্টিনেশন অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু চলতি বছর সে দেশে পা রাখতে কার্যত বারণই করে দিচ্ছে প্রশাসন। কারণ, দাবানলে জ্বলছে অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস। সীমাহীন বিপদের আশঙ্কায় কাঁপছেন দমকল কর্মীরা।

নিউ সাউথ ওয়েলসের একটা বড় অংশকে ‘ফায়ার জোন’ বা অগ্নিদগ্ধ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দাবানল দাউদাউ করে ছড়িয়ে তো পড়ছেই, পারদ বেড়ে চলেছে তাপমাত্রার। বাড়তে বাড়তে তা ৪০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড ছাড়িয়েছে, যা এই মৌসুমে খুব স্বাভাবিক নয়। নিউ সাউথ ওয়েলসের দমকল বাহিনী বিভাগের কমিশনার শ্যেন ফিটসিমনস বলছেন, ‘পরিস্থিতি ভয়াবহ, বিপদের চরম সীমা।’ নিউ সাউথ ওয়েলসেই শুধু নয়, সিডনি এবং ভিক্টোরিয়া প্রদেশেও জারি হয়েছে জরুরি অবস্থা। এই প্রদেশের প্রধান গ্ল্যাডিস বেরেজিকলিয়ানের কথায়, “আমরা সমস্ত পর্যটকদের বলছি, জঙ্গল লাগোয়া রাস্তাঘাটে গাড়ি নিয়ে যাবেন না। আগুনের গ্রাসে পড়তে পারেন।” বিপদ এড়াতে বেশিরভাগ জঙ্গল সংলগ্ন হাইওয়ে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

পুলিশ, দমকল বাহিনীর ক্রিসমাসের ছুটি বাতিল হয়েছে। উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা ঘোষণাই করে দিয়েছেন, এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে প্রয়োজনে দিনরাত কাজ করতে হবে। এখন আনন্দ উদযাপনের সময় নয়। ক্রিসমাসের আগে এই আগুন কোনওভাবেই আয়ত্বে আসবে না বলে এখন থেকেই জানিয়ে রাখছেন দমকল আধিকারিকরা। চলতি সপ্তাহেই আগুন নেভাতে গিয়ে ঝলসে মৃত্যু হয়েছে ২ দমকল কর্মীর। জঙ্গলে প্রাণহানির আশঙ্কায় বহু প্রাণী।

গত কয়েকমাস ধরে এই দাবানলের জন্য অস্ট্রেলিয়া বিস্তীর্ণ অংশে খরা পরিস্থিতি। উচ্চ তাপমাত্রা, বাড়তি আর্দ্রতা। পরিবেশ ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ বাসিন্দারা। তারউপর জঙ্গলের আগুন জ্বলতে থাকায় হাওয়া দিক পরিবর্তন করে অন্যত্রও উষ্ণতা বাড়াচ্ছে। জনসাধারণের একটা বড় অংশই এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতার জন্য দেশের প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসনকে দায়ী করছেন। পরিবেশ বাঁচাতে, উষ্ণায়ন রোধে তাঁর সরকারের ভূমিকা একেবারেই নেতিবাচক বলে সমালোচনা শুরু হয়েছে। সবমিলিয়ে, ক্রিসমাসে এবং নববর্ষের আনন্দের মরশুম যে এই ভয়াবহ পরিস্থিতির মধ্যেই কাটাতে হবে অস্ট্রেলিয়বাসীকে, সেটাই চিন্তার ভাঁজ বাড়াচ্ছে তাদের কপালে।


আরো সংবাদ



premium cement