১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৮ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে!

চীনের মোকাবেলায় নতুন ডিভিশন ভারতীয় সেনাবাহিনীতে! - ফাইল ছবি

পূর্ব লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর চীনকে প্রতিরোধ করতে ভারতীয় সেনাবাহিনী আরো একটি ডিভিশন তৈরির কথা ভাবছে। নাম না প্রকাশের শর্তে শীর্ষ সেনাকর্মকর্তাদের একাংশ এ কথা জানিয়েছেন। প্যাংগং হ্রদের ও-পারে চীনা সেনাবাহিনীর ওয়াটার স্কোয়াড্রন ডিভিশনের মহড়া ইতিমধ্যেই লক্ষ করা গেছে। নতুন ডিভিশন এরই পাল্টা কৌশলী পদক্ষেপ বলে মনে করছেন ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা।

১৩৪ কিলোমিটার দীর্ঘ প্যাংগং হ্রদ পূর্ব লাদাখ ও পশ্চিম তিব্বতের মধ্যে বিস্তৃত। ২০২০ সালের মে মাসে গলওয়ান উপত্যকায় সংঘর্ষের পর থেকে পূর্ব লাদাখে ভারত ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা অব্যাহত রয়েছে। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ভারত এবং চীন প্যাংগংয়ের উত্তর এবং দক্ষিণ অংশে সেনাবাহিনী সক্রিয়তায় রাশ টানলেও মোতায়েন থাকা বাহিনী বহরে কমেনি। দু’দিকেই ৫০ থেকে ৬০ হাজার সেনা রয়েছেন এখন। চীন ৯২৮বি শ্রেণির আক্রমণকারী নৌকা মোতায়েন করে রেখেছে। তা দিয়ে চলছে ওই অঞ্চলে বাহিনী সংগঠিত করার কাজ। ওই ওয়াটার স্কোয়াড্রনে ২০টির বেশি নৌকা এবং ২০০ সেনাসদস্য রয়েছে বলে খবর। ৩৪৮৮ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে চীনা সেনার ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ড। ভারতের কয়েকজন সেনাকর্তার বক্তব্য, ওই কমান্ডের ওয়েস্ট সি ফ্লিটের একটি অংশ এই ওয়াটার স্কোয়াড্রন।

ভারতের শীর্ষ সেনাকর্তাদের একাংশের সূত্রে খবর, চীনের এই আগ্রাসী পদক্ষেপের জেরে ভারতীয় বাহিনীর মোতায়েনের বন্দোবস্ত নতুন করে খতিয়ে দেখার প্রয়োজন পড়েছিল। সেই সূত্রে সম্ভাব্য চীনা 'আগ্রাসনের' কথা ভেবে বাড়তি নিরাপত্তার খাতিরে নতুন ডিভিশনের কথা ভাবা হয়েছে। পূর্ব লাদাখে এখন নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে সেনার লে ভিত্তিক ‘১৪ কর্প’। উধমপুর-ভিত্তিক নর্দান কমান্ডের নিয়ন্ত্রণাধীন তারা। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারতের জোর বাড়াতে নয়া ডিভিশনে পদাতিক সেনার বেশ কিছু ব্রিগেড, অস্ত্রাগার ও অন্য ব্যবস্থাপনা থাকবে বলে খবর।

এক শীর্ষ সেনাকর্তা বলেন, 'চীনের জবাবে আমরাও ইস্পাতের কাঠামোর আধুনিক নৌকা মোতায়েন করেছি। চীনা নৌকার ধাক্কাতেও তার ক্ষতি হবে না। নজরদারির জন্য ১২টি নৌকা রয়েছে। আর প্রয়োজন দেখা দিলে যাতে হ্রদের মধ্য দিয়ে দ্রুত বাহিনী সংগঠিত করা যায়, সে জন্য রয়েছে আরও ১৭টি নৌকা।'

তবে নতুন ডিভিশন গঠনে সেনাসদস্যের সমস্যার দিকটি হলো রসদ এবং অর্থ। ভারতীয় সেনাবাহিনী সূত্রের খবর, উগ্রবাদ দমনের জন্য কাশ্মিরে মোতায়েন থাকা বাহিনীর একাংশকে নিয়ে আসার কথা ভাবা হচ্ছে। তবে তার জন্য কাশ্মিরের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ যে বাড়তে পারে, মাথার রাখা হচ্ছে সে কথাও। সেনাকর্তাদের একাংশের মতে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় যে হেতু পরিস্থিতি ক্রমাগত বদলে চলেছে, সেই জন্য বরাদ্দের টানাটানির মধ্যেও বাহিনীকে ভারসাম্য রেখে কাজ করে যেতে হবে।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা


আরো সংবাদ



premium cement