২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর আফিম উৎপাদন ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর আফিম উৎপাদন ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। - ছবি : বিবিসি

মিয়ানমারে আফিমের উৎপাদন ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যা গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছেছে বলে জাতিসঙ্ঘ বলছে।

ওই দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের বছর ২০২১ সালে আফিমের উৎপাদন ছিল ৪২৩ মেট্রিক টন। কিন্তু ২০২২ সালে তা বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ - ৭৯৫ টন হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ মনে করে, মিয়ানমারে জনগণের অর্থনৈতিক দুর্দশা-নিরাপত্তাহীনতা ও হেরোইন তৈরিতে ব্যবহৃত আফিম রেজিনের মূল্যবৃদ্ধি আফিমের উৎপাদন বৃদ্ধির কারণ। ওই সামরিক অভ্যুত্থান মিয়ানমারের বেশিরভাগ অংশকে রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের দিকে ঠেলে দিয়েছে যা এখনো চলছে।

জাতিসঙ্ঘের মাদক ও অপরাধবিষয়ক দফতর ইউএনওডকের আঞ্চলিক প্রতিনিধি জেরেমি ডাগলাস বলছেন, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমারের অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা ও শাসনব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়েছে। উত্তরাঞ্চলীয় শান প্রদেশ ও সীমান্তবর্তী প্রত্যন্ত রাজ্যগুলোর সংঘর্ষ-প্রবণ অঞ্চলের কৃষকদের আফিম চাষে ফিরে যাওয়া ছাড়া বিকল্প ছিল খুবই কম।

মিয়ানমার, থাইল্যান্ড ও লাওসের সীমানা যেখানে মিলিত হয় তাকে তথাকথিত ’গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’ বলা হয়। ওই অঞ্চলটি ঐতিহাসিকভাবে আফিম ও হেরোইন উৎপাদনের একটি প্রধান উৎস।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জাতিসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে মিয়ানমারের অর্থনীতি দেশে-বিদেশের নানা চাপের মুখোমুখি হয়, যেমন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ও ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতি। এসব ঘটনা আফিম চাষ সম্প্রসারণে কৃষকদের ‘জোর প্রণোদনা’ প্রদান করে।

আফগানিস্তানের পর মিয়ানমারই বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম আফিম উৎপাদনকারী দেশ। বিশ্বজুড়ে বিক্রি হওয়া সবচেয়ে বেশি হেরোইনের উৎস এই দু’টি দেশ। জাতিসঙ্ঘের হিসাব অনুযায়ী, মিয়ানমারে উৎপন্ন আফিমের অর্থনৈতিক মূল্য বছরে ২০০ কোটি ডলার। আর পুরো অঞ্চলে হেরোইন ব্যবসার মূল্য প্রায় এক হাজার কোটি ডলার।

গত এক দশকে আফিমের বিকল্প শস্য উৎপাদন প্রকল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে আফিমের গাছ পপি চাষ কমে আসছিল। কিন্তু জাতিসঙ্ঘের পরিচালিত বার্ষিক আফিম জরিপে দেখা যাচ্ছে, মিয়ানমারে আবারো আফিম উৎপাদন বেড়েছে। ২০১৩ সালের পর ২০২২ সালেই সর্বোচ্চ আফিম উৎপাদিত হয়েছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে জাতিসঙ্ঘ মিয়ানমারে কৃত্রিম মাদক উৎপাদনের ওপরও নজর রাখছিল। তারা দেখছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে মিয়ানমারের যুদ্ধ-বিধ্বস্ত সীমান্ত এলাকায় সক্রিয় সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলির তহবিলের প্রধান উৎস হিসেবে কৃত্রিম মাদক আফিমের চাষকে ছাড়িয়ে গেছে।

আফিম চাষে সিনথেটিক মাদকের চেয়ে অনেক বেশি শ্রমের প্রয়োজন হয়। ফলে কৃত্রিম মাদক তৈরি ওই দেশে একটি আকর্ষণীয় অর্থকরী পণ্য হিসেবে পরিণত হয়েছে। এর কারণ, সেনা অভ্যুত্থানের পর অর্থনৈতিক সঙ্কটে মিয়ানমারের কর্মসংস্থানের অনেক বিকল্প উৎস কমে গেছে।

জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তা জেরেমি ডাগলাস বলছেন, মিয়ানমারের প্রতিবেশী দেশগুলোর উচিত এই পরিস্থিতির মূল্যায়ন করা ও সমাধানের পথ খুঁজে বের করা। তাদের কিছু কঠোর পদক্ষেপের কথা বিবেচনা করতে হবে।

মিয়ানমারে ইউএনওডকের কান্ট্রি ম্যানেজার বেনেডিক্ট হফম্যান বলছেন, বেলা শেষে আফিম চাষ আসলেই একটি অর্থনৈতিক বিষয়। শুধু পপিক্ষেত ধ্বংস করে এর সমাধান করা যাবে না। বিকল্প আয় ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ছাড়া আফিম চাষ ও উৎপাদন সম্ভবত বাড়তেই থাকবে।
সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল