রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেয়া শুরু মিয়ানমারের জান্তার
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫:২১, আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২১, ১৫:২৪
মিয়ানমারের সামরিক সরকার দেশটির কারাগার থেকে কয়েক শত জান্তাবিরোধী রাজনৈতিক বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। সোমবার রাতে ইয়াঙ্গুনের ইনসেইন কারাগার থেকে তাদের মুক্তি দেয়া হয় বলে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে জানানো হয়।
এর আগে সোমবার মানবিক বিবেচনায় মিয়ানমারে কারাগারে বন্দী থাকা বা ফেরারি পাঁচ হাজার ছয় শ'র বেশি জান্তাবিরোধী আন্দোলনের কর্মীকে সাধারণ ক্ষমার আওতায় ছেড়ে দেয়ার ঘোষণা দেয় জান্তা সরকার।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে জানানো হয়, মুক্তি পাওয়া বন্দীদের মধ্যে দেশটির সাবেক স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চির ক্ষমতাচ্যুত ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির মুখপাত্র মনেওয়া অং শিন ও বিখ্যাত কমেডিয়ান জারগানারও রয়েছেন।
জান্তাবিরোধী আন্দোলনের কর্মীরা অবশ্য বলছেন, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা জোট আসিয়ানের সম্মেলনের আমন্ত্রণ থেকে মিয়ানমারের জান্তাপ্রধানকে বাদ রাখায় আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি পুনরুদ্ধারে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
জাতিসঙ্ঘের মিয়ানমার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজ এই উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তবে মুক্তি পাওয়া এই বন্দীদের শুরুতেই গ্রেফতার করা 'নিকৃষ্টতর' ছিলো বলে টুইট বার্তায় জানান তিনি।
The junta is releasing political prisoners in Myanmar not because of a change of heart, but because of pressure. Denying the junta money, weapons and legitimacy is the best way the world can support the people of Myanmar. Statement below https://t.co/Q4iSPaorah pic.twitter.com/UedwDni4UU
— UN Special Rapporteur Tom Andrews (@RapporteurUn) October 18, 2021
তিনি বলেন, 'মিয়ানমারে জান্তার রাজনৈতিক বন্দীদের মুক্তি দেয়া তাদের মনের পরিবর্তনের কারণে নয়, বরং চাপের কারণে।'
তবে সোমবার ঠিক কতজন মুক্তি পেয়েছেন, তা জানা যায়নি।
১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। পরে ১ আগস্ট জরুরি অবস্থার মেয়াদ ২০২৩ সালের আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানোর ঘোষণা দেন জান্তা প্রধান জেনারেল মিন অং লাইং।
গত বছরের নভেম্বরে দেশটিতে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।
সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।
গত ৭ সেপ্টেম্বর মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট দেশের সাধারণ মানুষকে সামরিক জান্তার আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে সর্বাত্মক যুদ্ধের ঘোষণা দেয়।
এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) জানিয়েছে, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে সোমবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত এক হাজার এক শ' ৮১ জন নিহত হয়েছেন।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন নয় হাজার ৪৩ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন সাত হাজার তিন শ' ৫৫ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি রয়েছে আরো এক হাজার নয় শ' ৮৯ জনের নামে।
সূত্র : রয়টার্স
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা