২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১, ১৩ শাওয়াল ১৪৪৫
`

একটি শহরই ডুবিয়ে দিয়েছিল চীন!

দিনভর কোলাহলমুখর থাকা ওই শহরের নাম ছিল শি চেং। - ছবি : বিবিসি

চকচকে রাস্তা, একতলা-দোতলা সমস্ত বাড়ি, পাথর দিয়ে নির্মিত মন্দির। অলিতে গলিতে সাঁতার কেটে গেলে এখনো চোখে পড়ে ড্রাগনের কারুকার্য করা মূর্তি। সবই রয়েছে এই শহরে, শুধু মানুষের দেখা মেলে না। অনেক বছর আগে এক বিশেষ কারণে চীন সরকার পানিতে ডুবিয়ে দিয়েছিল এই গোটা শহরকে!

দিনভর কোলাহলমুখর থাকা ওই শহরের নাম ছিল শি চেং। চীনের ঝেজিয়াং প্রদেশের অন্তর্গত ছিল শহরটি। জমজমাট শহরটি ঝেজিয়াংয়ের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক কাজকর্মের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছিল সে সময়। হঠাৎ এমন কী হয়েছিল যাতে গোটা শহরকে ডুবিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছিল চীন সরকার?

পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ১৯৫৯ সালে বাঁধ নির্মাণের প্রয়োজন ছিল। চীন সরকার ঝেজিয়াং প্রদেশের শি চেং শহরের উপকণ্ঠে বাঁধ নির্মাণ করবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। পানিবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য হ্রদের প্রয়োজন। কিন্তু ঝেজিয়াংয়ে তেমন কোনো হ্রদ ছিল না। বাধ্য হয়ে কৃত্রিম ভাবে হ্রদ বানাতে শুরু করে চীন।

শি চেং শহরটি ছিল ফাইভ লায়ন পর্বতের পাদদেশে। শহরের চারদিক পাহাড় দিয়ে ঘেরা ছিল। তাই চীন সরকার সে সময় এই শহরটিকেই হ্রদে পরিণত করার মনস্থির করে। শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া জিনান নদীকে কেন্দ্র করেই ওই হ্রদ বানানো হয়েছিল।

পানি ধরে রাখার জন্য বাঁধ নির্মাণ করে এবং ওই পর্বতের পাদদেশে পানি ভরে হ্রদ বানিয়ে ফেলে চীন। এই হ্রদের পানিই নিমজ্জিত হয়ে যায় গোটা শহর। ১৩০ ফুট নিচে তলিয়ে যায় শহরটি।

কৃত্রিমভাবে সৃষ্ট হ্রদটির নাম রাখা হয় কুইআনদাও হ্রদ। ৬২ বছর ধরে এভাবেই পানির তলায় ডুবে রয়েছে শহরটি। রাস্তাঘাট, মন্দির, ঘরবাড়ি সবই রয়েছে আগের মতোই। এই হ্রদের উপর নির্মিত বাঁধটির নাম দেয়া হয় জিনান।

বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের সবুজ সঙ্কেত মেলার পর থেকেই ভাগ্য বদলাতে শুরু করেছিল শহরের বাসিন্দাদের। এক এক করে সকলকেই নিজের ঘরবাড়ি ছেড়ে চলে যেতে হয়। শহর পুরোপুরি খালি করে দেয়ার পর তা পানিতে ভরে দেয়া হয়।

চারদিকে পাহাড়ে ঘেরা থাকায় শহরে পানি ভরে ফেলতেও সুবিধা হয়েছিল। হ্রদ তৈরি হওয়ার পর ওই পাহাড়গুলোই এক একটি দ্বীপে পরিণত হয়। দ্বীপগুলোর আলাদা নামও রয়েছে।

কোনোটি পক্ষী দ্বীপ, কোনোটি বাঁদর দ্বীপ এবং কোনোটি সাপের দ্বীপ। একটি দ্বীপে গেলে নাকি আবার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে যায়। হ্রদ জুড়ে ছোট-বড় মিলিয়ে এমন এক হাজারের বেশি দ্বীপ রয়েছে।

৫৭৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে হ্রদটি। তার মধ্যে মাত্র ৮৬ বর্গ কিলোমিটার অংশ জুড়ে রয়েছে দ্বীপগুলো। জিনান বাঁধই হলো পানিবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নির্মিত চীনের প্রথম বাঁধ।

শি চেং শহরটির এখন ‘লায়ন সিটি’ নামে পরিচিত। লায়ন পর্বত থেকেই এর নামকরণ। চীনের ‘লায়ন সিটি’ যেন বাস্তবের আটলান্টিস। নিমজ্জিত এই শহরে পর্যটকরাও ঘুরে দেখতে পারেন।

সূত্র : বিবিসি, আনন্দবাজার

দেখুন:

আরো সংবাদ



premium cement
ছোট দেশ কাতার অর্থনীতি ও কূটনীতিতে যেভাবে এত এগোল আশুলিয়ায় ছিনতাইকারীর হামলায় আহত নারীর মৃত্যু ‘মুসলিমদের সম্পদ পুনর্বণ্টন’ অভিযোগ মোদির, এফআইআর সিপিএমের প্রথম ধাপের উপজেলা ভোটে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিখ্যাত চালকবিহীনবিমানের আবিষ্কারক কটিয়াদীতে আসছেন গাজার গণকবরের ‘বিশ্বাসযোগ্য ও স্বাধীন’ তদন্তের আহ্বান জাতিসঙ্ঘের চতুর্থ ধাপের উপজেলা নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা পেকুয়ায় জমি নিয়ে সংঘর্ষে আহত ১৪ তড়িঘড়ি ও জোরপূর্বক একীভূতকরণ ব্যাংকিং খাতে অব্যাহত দায়মুক্তির নতুন মুখোশ : টিআইবি লেবাননে ইসরাইলি হামলায় ইরান সমর্থিত যোদ্ধা নিহত জিম্বাবুয়ে সিরিজের জন্য ক্যাম্পে ডাক পেলেন ১৭ ক্রিকেটার, নেই সাকিব-মোস্তাফিজ

সকল