২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

মিয়ানমারে জান্তা শাসনের পাঁচ মাসে নিহত ৭৫ শিশু, বন্দী ১০০০

মিয়ানমারে সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল দেখছে কয়েক জন শিশু - ছবি : আলজাজিরা/এএফপি

মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থানের গত পাঁচ মাসে দেশটিতে চলা বিক্ষোভের মধ্যে জান্তা সরকারের নিয়ন্ত্রিত সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় দেশটিতে ৭৫ শিশু নিহত হয়েছে। একই সময়ে প্রায় এক হাজার শিশুকে বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় বন্দী করা হয়েছে।

শুক্রবার জাতিসঙ্ঘের শিশু অধিকার কমিটির প্রধান মিকিকো ওটানি এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসঙ্ঘের শিশু অধিকার কমিটির কাছে 'বিশ্বাসযোগ্য তথ্য' রয়েছে যে, ১ ফেব্রুয়ারিতে সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে ৭৫ শিশু নিহত ও প্রায় এক হাজার শিশু গ্রেফতার হয়েছে।

মিকিকো ওটানি বিবৃতিতে বলেন, 'সামরিক অভ্যুত্থানের কারণে মিয়ানমারে শিশুরা অবরোধের মধ্যে এবং জীবনহানির বিপর্যয়ের মধ্যে রয়েছে।'

তিনি বলেন, 'প্রতিদিন বেপরোয়া সহিংসতা, এলোপাতাড়ি গুলি ও নির্বিচার গ্রেফতারির মুখোমুখি হচ্ছে শিশুরা।'

ওটানি আরো বলেন, 'তাদের দিকে অস্ত্র তাক করা হচ্ছে এবং তারা তাদের বাবা-মা ও ভাই-বোনদের সাথেও একই ঘটনা ঘটতে দেখছে।'

বিবৃতিতে আরো জানানো হয়, জাতিসঙ্ঘ শিশু অধিকার কমিটি মিয়ানমারে শিশু হত্যার কঠোর নিন্দা জানাচ্ছে, যাদের মধ্যে কয়েক জন নিজেদের বাড়ির ভেতরে থাকা অবস্থাতেই নিহত হয়েছে।

জাতিসঙ্ঘ শিশু অধিকার কমিটি ১৮ স্বাধীন বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত, যারা ১৯৯১ সালে স্বাক্ষরিত শিশু অধিকার সনদ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বাস্তবায়ন পর্যবেক্ষণ করার দায়িত্বে রয়েছেন। ওই সনদে স্বাক্ষর করা দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমারও রয়েছে।

এদিকে মিয়ানমারের অবস্থা পর্যব্ক্ষেণকারী থাইল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা অ্যাসিসটেন্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনারস (এএপিপি) তাদের দৈনিক প্রতিবেদনে জানায়, ১ ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে বিক্ষোভে সামরিক জান্তার দমন অভিযানে অন্তত নয় শ' ১২ জন নিহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বিক্ষোভ সংশ্লিষ্টতায় সামরিক জান্তার হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ছয় হাজার সাত শ' ৭০ জন। বর্তমানে বন্দী রয়েছেন পাঁচ হাজার দুই শ' ৭৭ জন। এছাড়া গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে আরো এক হাজার নয় শ' ৬৩ জনের নামে।

১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বিতর্কের জেরে এই অভ্যুত্থান ঘটায় সামরিক বাহিনী।

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে মিয়ানমারের বিভিন্ন শহরেই বিক্ষোভ শুরু হয়। বিক্ষোভকারীরা অং সান সু চিসহ বন্দী রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তির পাশাপাশি সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে আসছেন। শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হওয়া অহিংস বিক্ষোভকে সামরিক উপায়ে জান্তা সরকার দমন করতে গেলে বিক্ষোভকারীরাও বিভিন্ন স্থানে অস্ত্র হাতে নেয়।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement