১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মালয়েশিয়ায় লকডাউন নয়, শ্রমিকদের স্বাস্থ্যকর আবাসন নিশ্চিতের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

মালয়েশিয়ায় লকডাউন নয় শ্রমিকদের স্বাস্থ্যকর আবাসন নিশ্চিতের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর - ছবি- সংগৃহীত

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন জানিয়েছেন, জনগণের ওপর নতুন করে লকডাউন চাপানোর ইচ্ছা নেই তার সরকারের। আগে কয়েক দফা লকডাউন আরোপ করা হয়েছিল একান্ত বাধ্য হয়ে। দেশটিতে করোনার সংক্রমণের জন্য বিদেশী শ্রমিকদের দোষারোপ করে মালয়েশিয়ার সরকারপ্রধান আরো বলেন, বিদেশী শ্রমিক নিয়োগকর্তাদের উচিত শ্রমিকের জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশে আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করা। কারণ তারা অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে থাকার কারণেই করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি তৈরি হয়। তারাই ‘করোনার মূল উৎস’।

বৃহস্পতিবার কুয়ালালামপুরে শিল্প মালিক সংগঠনের সাথে এক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে দেয়া ভাষণে এসব কথা বলেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী।

এ সময় মহিউদ্দিন ইয়াসিন আরো বলেন, করোনা সংক্রমণের ৮৩ ভাগ উৎস হিসেবে কাজ করে বিদেশী শ্রমিকদের আবাসনগুলো। কারণ নিয়োগকর্তারা তাদের স্বাস্থ্যকর আবাসন ব্যবস্থা নিশ্চিত করে না। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তাদের রাখা হয়।

করোনা নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে বেসরকারি খাতের সংশ্লিষ্টদের অগ্রণী ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানান দেশটির প্রধানমন্ত্রী। মহিউদ্দিন ইয়াসিন বলেন, সকল কলকারখানার উৎপাদন সেক্টরে কঠোরভাবে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং সিস্টেম (এসওপি) মেনে দেশের প্রচলিত সরকারি আবাসন আইন ১৯৯০-এর ৪৪৬ ধারা অনুযায়ী বিদেশী শ্রমিকদের ন্যূনতম স্বাস্থ্যকর আবাসন নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট নিয়োগকর্তাদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ করছি।

মালয়েশিয়ায় বর্তমানে কোভিড-১৯ সংক্রমণ পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। শুক্রবার পর্যন্ত দেশটিতে করোনায় মোট আক্রান্ত হয়েছে তিন লাখ ৭০ হাজার ৫২৮ জন। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত সংখ্যা আড়াই হাজার। দেশটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৩৬৫ জনের। আর আক্রান্তদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন তিন লাশ ৫০ হাজার ৫৬৩ জন। বর্তমানে কোভিড-১৯ রোগী সংখ্যা ১৮ হাজার ৬০০ জন। এমন পরিস্থিতিতে দেশটিতে পুরোপুরি লকডাউন না থাকলেও মানুষের জীবনযাপন নিয়ন্ত্রিত।

এ দিকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী দেশটির করোনার ‘মূল উৎস’ হিসেবে বিদেশী শ্রমিকদের দায়ী করলেও তাদের মধ্যে মারা যাওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। এ পর্যন্ত মালয়েশিয়া প্রবাসী কোনো বাংলাদেশী শ্রমিকের মৃত্যু হয়নি এখানে। তবে তারা যে আক্রান্ত হচ্ছেন তা অস্বীকার করার সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট অনেকে।

কিছু দিন আগে দেশটিতে কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার নেতারা বলেছিলেন, মালয়েশিয়ার সরকার করোনার জন্য কেবল বিদেশী শ্রমিকদের অযাচিতভাবে দোষারোপ করে যাচ্ছে। অথচ তারা এ দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কিন্তু তাদের স্বাস্থ্যকর আবাসন নিশ্চিত করা হচ্ছে না।

এবার প্রধানমন্ত্রী বিদেশী শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্যকর আবাসনের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তুলে ধরায় এ পরিস্থিতির উত্তরণ হবে বলে মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন।


আরো সংবাদ



premium cement