২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`
মিয়ানমারে অভ্যুত্থান

সেনা শাসনের বিরুদ্ধে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় লাখো বিক্ষোভকারী

সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা - ছবি : আলজাজিরা/রয়টার্স

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে দ্বিতীয়দিনের মতো বিক্ষোভ চলছে দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনের রাস্তায়। রোববার ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের মুক্তি ও সামরিক শাসন প্রত্যাহারের দাবিতে লাখো লোক বিক্ষোভে অংশ নেন।

বিক্ষোভকারীরা সু চির রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) পতাকার রঙে লাল বেলুন নিয়ে ইয়াঙ্গুনের রাস্তা প্রদক্ষিণ করেন। এ সময় তারা ’সামরিক শাসন চাই না, গণতন্ত্র চাই!’ স্লোগান দেন।

ঝাঁঝালো রোদের মধ্যে এনএলডির পতাকা উড়িয়ে ও তিন আঙ্গুলের প্রতিবাদী প্রতীকি চিহ্ন উঁচিয়ে তারা রাস্তায় দাঁড়িয়ে বিক্ষোভ করেন। এ সময় বিভিন্ন যানবাহনের চালকরা হর্ন বাজিয়ে বিক্ষোভের সাথে সংহতি প্রকাশ করে।

এর আগে ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী, তাতমাদাও দেশটিতে সেনা অভ্যুত্থান ঘটায় এবং প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট ও স্টেট কাউন্সিলর অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেফতার করে। সাথে সাথে দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করা হয়।

নভেম্বরের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে বেসামরিক প্রশাসনের সাথে সামরিক বাহিনীর কয়েক দিনের দ্বন্দ্বের পর এই অভ্যুত্থান ঘটে। ওই নির্বাচনে সুচির নেতৃত্বের ন্যাশনাল লীগ ফর ডেমোক্রেসি (এনএলডি) জয় লাভ করে, যা তাতমাদাও অস্বীকার করেছে।

এ দিকে শনিবার বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেসহ মিয়ানমারে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হলেও রোববার বিকেলে তা আংশিকভাবে চালু করা হয়।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক ইন্টারনেট সংযোগে বাধা তদারককারী সংস্থা নেট ব্লক জানিয়েছে, স্থানীয় সময় দুপুর ২টার পর থেকে মিয়ানমারে আংশিক ইন্টারনেট সংযোগ চালু করা হয়েছে।

গত সপ্তাহের সোমবার সেনা অভ্যুত্থানের পর শনিবার ইয়াঙ্গুনে রাস্তায় নামেন বিক্ষোভকারীরা। এ সময় তারা ‘সামরিক স্বৈরাচার ব্যর্থ হোক, গণতন্ত্রের জয় হোক’ বলে স্লোগান দেন।

ইয়াঙ্গুনে বিক্ষোভকারীরা নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন থাকা রাইফেলধারী পুলিশ সদস্যদের ফুল উপহার দেন।

এ দিকে মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালায় ও রাজধানী নেপিডোতে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

২০১১ সাল পর্যন্ত দীর্ঘ সেনা শাসনের অধীনে থাকা মিয়ানমারে দেশটির স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা জেনারেল অং সানের মেয়ে অং সান সু চির নেতৃত্বে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া শুরু হয়।

এর আগে, ১৯৮৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ১৫ বছর গৃহবন্দিত্বে ছিলেন সু চি। গণতন্ত্রের জন্য তার সংগ্রামের কারণে ১৯৯১ সালে তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার জয় করেন।

কিন্তু ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা মুসলিম অধিবাসীদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর দমন অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে সু চি আন্তর্জাতিক ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়। সেনাবাহিনীর পদক্ষেপের বিরুদ্ধে যথার্থ ব্যবস্থা ও প্রতিবাদ জানাতে ব্যর্থতায় সাবেক সমর্থকরা তার নিন্দা করেছিলেন।

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) বর্তমানে ওই অভিযানে মিয়ানমারের মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের তদন্ত করছে।

সূত্র : আলজাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement

সকল