২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

মিয়ানমারে প্রতিবাদের ভাষায় তিন আঙ্গুল কেন

মিয়ানমারে অভ্যুত্থান বিরোধী বিক্ষোভের প্রতীক তিন আঙ্গুল - ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর বিক্ষোভকারীরা রাস্তায় নেমে তিন আঙ্গুল উঁচিয়ে প্রতিবাদ করছেন। এর আগে ব্যাংককে সেনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনে একই ভাবে প্রতিবাদ করেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। প্রশ্ন হলো এই তিন আঙ্গুলের মানে কী?

যারা নিয়মিত হলিউড সিনেমা দেখেন, তারা হয়তো বিষয়টি স্মরণ করতে পারেন। তবে যাদের কাছে এই বিষয়টি একেবারেই নতুন, তারা হ্যাঙ্গার গেমস সিনেমাটি দেখে নিতে পারেন।

মার্কিন ঔপনাসিক সুজান কলিন্সের লেখা ‘দ্যা হ্যাঙ্গার গেমস’ উপন্যাস থেকে একই নামের চার সিনেমা তৈরি করা হয়। ২০১২ সালে প্রথম সিনেমাটি মুক্তি পায়।

ভবিষ্যতের পৃথিবীর উত্তর আমেরিকার কাল্পনিক পানেম রাষ্ট্রকে কেন্দ্র করে এগিয়েছে সিনেমাটির কাহিনী। ক্যাপিটল শাসিত রাষ্ট্রটি মোট ১২টি জেলায় বিভক্ত। ক্যাপিটলের ক্ষমতাসীনদের বিরুদ্ধে এই ১২ জেলার সাধারণ মানুষের ব্যর্থ এক বিদ্রোহের শাস্তি হিসেবে প্রতি বছর প্রত্যেক জেলা থেকে ১২-১৮ বছর বয়সী এক ছেলে ও এক মেয়েকে প্রাচীন রোমান গ্লাডিয়েটরদের মতোই ‘হ্যাঙ্গার গেমস’ নামের যুদ্ধের এক খেলায় বাধ্যতামূলকভাবে পাঠাতে হতো। জীবনবাজী রেখে এই প্রতিযোগিতার ফলাফল দু’টিই- হয় মৃত্যু না হয় শেষ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছে জয়ী হয়া।

কাহিনীর মূল চরিত্র ক্যাটনিস এভারডিনের বোন প্রিমোর্সকে ৭৪তম হ্যাঙ্গার গেমসের মেয়ে প্রতিযোগী হিসেবে লটারিতে বাছাই করা হয়। ১২ বছর বয়সী ছোট বোনকে রক্ষার জন্য ১৬ বছর বয়সী ক্যাটনিস স্বেচ্ছায় বোনের পরিবর্তে নিজেকে প্রতিযোগী হিসেবে উপস্থাপন করে। ক্যাটনিসকে প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত করার পর মঞ্চে নিয়ে আসা হলে উপস্থিত সবাইকে প্রতিযোগিতার নির্বাচকরা তাকে হাততালি দিয়ে স্বাগত জানানোর আহ্বান জানায়। কিন্তু সবাই সেখানে চুপ থেকে পুরনো বিদ্রোহের প্রতীক তিন আঙ্গুল উঁচিয়ে তার প্রতি সমর্থন জানায়।

সিনেমাটির এক পর্যায়ে সংলাপে ক্যাটনিস বিষয়টির ব্যাখ্যায় বলেন, ‘এটি আমাদের জেলার পুরনো ও বিরল এক অঙ্গভঙ্গি, প্রায়ই ব্যক্তির মৃত্যুর পর শেষ যাত্রার সময় এটি প্রদর্শন করা হতো। এর তিনটি অর্থ- কৃতজ্ঞতা,প্রশংসা এবং তোমার ভালোবাসার কারো কাছ থেকে বিদায়।’

মিয়ানমারের বিক্ষোভকারীরাও নিজেদের প্রিয়জন থেকে তিন আঙ্গুলের বিদায় নিয়ে বিক্ষোভে নেমেছেন। তাদের প্রতিজ্ঞা, হয় সামরিক জান্তার হাতে তারা প্রাণ দেবেন না হয় অং সান সু চিসহ মিয়ানমারের গণতান্ত্রিক শক্তির প্রতিনিধিদের তারা মুক্ত করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement