২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

জাপানে করোনার চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু আত্মহত্যায়

- প্রতীকী ছবি

এ বছর অক্টোবর মাসে যত লোক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন, তার থেকে অনেক বেশি মানুষ আত্মহত্যা করেছেন জাপানে। এমনই তথ্য উঠে এসেছে জাপান সরকারের দেয়া পরিসংখ্যানে। অক্টোবর মাসে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে ২০৮৭ জনের, উল্টো দিকে এই এক মাসে আত্মহত্যা করেছেন ২১৫৩ জন। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া এই তথ্যে অনেকেই চমকে যাচ্ছেন।

চিকিৎসকরা মনে করছে, করোনা কালের মানসিক অসুস্থতাই এর একমাত্র কারণ।

কী করে এই মানসিক অসুস্থতার জন্ম হচ্ছে? চিকিৎসকরা বলছেন, লিঙ্গ, শ্রেণির ভিন্নতায় আলাদা আলাদা রকমের মানসিক চাপ তৈরি হচ্ছে। কারোর চাকরি নেই, কেউ স্বামী-সন্তানকে নিয়ে চিন্তিত, কেউ ব্যবসায়িক কারণে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত, কেউ আবার নিজের শরীর স্বাস্থ্য নিয়ে এতটাই চিন্তিত হয়ে পড়ছেন যে তাদের মধ্যে মানসিক অবসাদ দেখা দিচ্ছে। আর সেই অবসাদই ঠেলে দিচ্ছে আত্মত্যার দিকে।

জাপান পৃথিবীর এমন একটি দেশ, যারা নিয়মিত আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করে। যেখানে আমেরিকা ২০১৮ সালে সর্বশেষ আত্মহত্যার পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে, সেখানে জাপান প্রায় প্রতিনিয়ত এই সংখ্যা প্রকাশ করে চলেছে। এই তথ্য জানিয়ে আলাদা করে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে নারীদের মানসিক অবস্থা নিয়েও।

বলা হয়েছে, নারীদের আত্মহত্যার প্রবণতা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। আগের থেকে অনেক বেশি সংখ্যায় নারী আত্মহত্যা করছেন। হোটেল, ফুড সার্ভিস ও রিটেল বাণিজ্যে বিপুল সংখ্যক নারী নিয়োগ করা হয়। সাধারণত সেখানে আংশিক সময়ের চাকরি করেন তারা। মহামারীর সময়ে কর্মহীন হতে হয়েছে অনেককে।

জাপানের নারীরা জানাচ্ছেন, করোনার অজুহাতে অনেকেরই চাকরি গিয়েছে। এক কথায়, জাপান সরকার নারীদের গুরুত্ব দিচ্ছে না বলে অভিযোগ। এছাড়া, যে মহিলাদের সদ্যোজাত সন্তান রয়েছে, তাদের মধ্যেও দুঃশ্চিন্তা বাড়ছে। সেই কারণে মানসিক অবসাদের পরিমাণ বাড়ছে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে, মহামারির মধ্যে ২৭ শতাংশ নারীদের মধ্যে মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি দেখা দিয়েছে। সেই তুলনায় পুরুষদের সংখ্যা অনেকটাই কম, মাত্র ১০ শতাংশ।

সমস্যা বাড়ছে শিশু, কিশোরদেরও। যাদের বয়স ২০ বছরের নীচে, তাদের মধ্যে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সামাজিক জীবন থেকে সরে আসা, স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে শিশু-কিশোরদের জীবনে চাপ বাড়ছে। অনেক সময়ে বাড়িতে হেনস্থার শিকার হতে হচ্ছে শিশুদেরও। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, মহামারির সময় জাপানের শিশুদের ৭৫ শতাংশ মানসিক সমস্যা ও চাপে ভুগছে।

কয়েক দিন আগেই, হানা কিমুরা নামে জাপানের একজন ক্রীড়াবিদ ও রিয়্যালিটি শো স্টার আত্মহত্যা করেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক নিন্দাজনক মেসেজ আসার ফলে তিনি আত্মহত্যা করেন বলে জানা যায়। মহামারিতে প্রভাব পড়েছে বিখ্যাত মানুষদের জীবনেও। সিনেমা, কনসার্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তাদের আয়ে প্রভাব পড়েছে।

কবে এই আত্মহত্যার প্রবণতা কমবে, তা নিয়েও খুব একটা স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারেননি জাপানের চিকিৎসকরা।

তারা বলেছেন, জাপানে শীত পড়ার সময়েই নতুন করে করোনা সংক্রমণের ভয় রয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ জাপানে শুরু হয়ে যেতে পারে। ফলে মহামারির প্রভাবে ধুঁকতে থাকা জাপানের অর্থনীতি আরো অনেক বড় ধাক্কার সামনে পড়তে পারে। এতে অবসাদ যে বাড়বে, সেটা এখনই নিশ্চিত করে বলা চলে।

সূত্র : আনন্দবাজার


আরো সংবাদ



premium cement
ঈদের ছুটিতে ঢাকায় কোনো সমস্যা হলে কল করুন ৯৯৯ নম্বরে : আইজিপি সিরাজগঞ্জে প্রাথমিক শিক্ষা অফিসের নৈশ প্রহরীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার ৬ দাবিতে উত্তাল বুয়েট, ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন মোরেলগঞ্জে মাছ ধরতে গিয়ে নদীতে ডুবে কিশোরের মৃত্যু আল-আকসায় কোনো ধরণের সহিংসতা ছাড়াই অনুষ্ঠিত হলো তৃতীয় জুমআর জামাত ‘পেশাগত স্বার্থে সাংবাদিকদের ঐক্যবব্ধ হতে হবে’ গাজাবাসীর প্রধান কথা- ‘আমাদের খাবার চাই’ অধিকার প্রতিষ্ঠায় দেশপ্রেমিক জনতার ঐক্যের বিকল্প নেই : ডা: শফিকুর রহমান সোনাগাজীতে জামাতে নামাজ পড়ে বাইসাইকেল পুরস্কার পেল ২২ কিশোর গফরগাঁওয়ে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল

সকল