২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`
করোনাভাইরাস

চীনে নতুন রোগীর সংখ্যা কমার দাবি, সন্দিহান ডব্লিউএইচও

চীনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা এখন পর্যন্ত ১৬৬৫। - ছবি : বিবিসি

চীন দাবি করেছে পর পর তিন দিন নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা কমেছে।

চীনা কর্মকর্তারা রোববার নতুন ২০০৯ জন নতুন রোগীর খবর দিয়েছেন যে সংখ্যা কয়েকদিন আগেও তুলনায় অনেক কম। নতুন করে মারা গেছেন ১৪২ জন।

ক’দিন আগেও প্রতিদিন নতুন করে আক্রান্ত মানুষের যে সংখ্যা পাওয়া পাওয়া যাচ্ছিল তা চরম ভীতি তৈরি করেছিল।

বৃহস্পতিবার এক দিনেই ১৪ হাজার নতুন রোগীর সন্ধান পাওয়া যায়। সেই তুলনায় আজকের দেয়া ২০০৯ জনের সংখ্যাটি কিছুটা স্বস্তির।

চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন বলছে, রোববারের নতুন রোগীর সংখ্যা প্রমাণ করছে যে, করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সরকারের পদক্ষেপগুলো কাজে দিচ্ছে।

মিউনিখে নিরাপত্তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে শনিবার চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এখন তাদের নিয়ন্ত্রণের ভেতর।

তবে চীন সরকার সাফল্যের দাবি করলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এখনো সন্দিহান।

মিউনিখে ওই একই সম্মেলনে ডব্লিউএইচও’র প্রধান টেড্রোস আধানোম গ্রেবিয়েসাস শনিবার বলেন, করোনাভাইরাস মহামারি কোন দিকে যাবে তা ধারণা করা এখনো অসম্ভব।

চীন কোন প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এই রোগ শনাক্ত করছে, তার বিস্তারিত জানতে চেয়েছে ডব্লিউএইচও। এই সংস্থার একটি বিশেষজ্ঞ দলকে চীনে পাঠানো হচ্ছে।

বেইজিংয়ে ঢুকলেই ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইন
ওদিকে ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসার দাবি করলেও, স্বাভাবিক জীবন যাপনের ওপর নিয়ন্ত্রণ আরো কঠোর করেছে চীনা সরকার।

যেখান থেকে করোনাভাইরাস প্রথম ছড়িয়েছে, সেই হুবেই প্রদেশের কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষজন যেন বাড়ির বাইরে না যায়।

খাবার এবং অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে যাতে তাদের দোকানে না যেতে হয়।

প্রাইভেটকার আপাতত নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

হুবেই’র রাজধানী শহর উহান এখন কার্যত অবরুদ্ধ।

শুধু হুবেই নয়, চীন জুড়ে কোটি কোটি মানুষ এখন নানা মাত্রার বিধিনিষেধের মধ্যে জীবনযাপন করছেন।

রাজধানী বেইজিংয়ের পৌর কর্তৃপক্ষ নির্দেশনা জারী করেছেন, শহরে কেউ ঢুকতে চাইলে তাকে ১৪ দিন স্বেচ্ছায় কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। এ ক’দিন বাইরে ঘোরাফেরা করা যাবে না। নির্দেশ ভাঙলে কড়া শাস্তি।

ব্যবহার করা ব্যাংক নোট নতুন করে বাজারে ছাড়ার আগে সেগুলোকে জীবাণুমুক্ত করার কর্মসূচি নিয়েছে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

এ নিয়ে এখন পর্যন্ত চীনে ৬৮ হাজারেরও কিছু বেশি মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মারা গেছে ১ হাজার ৬৬৫ জন।

চীনের বাইরে মোট ৩০টি দেশে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত হওয়া গেছে। আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ শ’ ছাড়িয়ে গেছে। ফ্রান্স, জাপান, হংকং এবং ফিলিপিন্সে একজন করে মোট চারজন মারা গেছে।

চীনের বাইরে যে কমপক্ষে ৫০০ লোক নিশ্চিতভাবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে, তাদের মধ্যে জাপানে নোঙর করা ডায়মন্ড প্রিন্সেস নামের একটি প্রমোদ জাহাজেই সংক্রমিত হয়েছেন ৩৫৫ জন।

আমেরিকা, কানাডা এবং হংকং ডায়মন্ড প্রিন্সেস থেকে তাদের নাগরিকদের নিয়ে যাচ্ছে।

ওদিকে, মালয়েশিয়া রোববার জানিয়েছে, তারা চীন থেকে ছেড়ে আসা বা চীনা কোনো বন্দরে ভিড়েছে - এমন কোনো প্রমোদ জাহাজকে তাদের দেশে ঢুকতে দেবে না।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement