২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

রোহিঙ্গাদের হাতকড়া পরিয়ে সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে!

একজন রোহিঙ্গা অভিযোগ করেছেন তাদেরকে হাতকড়া পরিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছে - ছবি : মিডলইস্ট আই

এবার সৌদি আরবে আশ্রয় নেয়া কয়েক শ’ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। তাদের স্থান হবে মিয়ানমার থেকে আগত রোহিঙ্গাদের সাথেই।

রোববার মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক ওয়েবসাইট মিডলইস্ট আইয়ে প্রকাশিত একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিতাড়নের জন্য জেদ্দার শুমাইসি ডিটেনশন সেন্টারে তাদেরকে সারি করে রাখা হয়েছে।

এদের মধ্যে কিছু রোহিঙ্গাকে হ্যান্ডকাপ পরিহিত দেখা যায়। জানা যায়, তারা তাদের বিতাড়ন প্রতিহত করতে চেয়েছিল।

রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে যিনি এই ভিডিওটি করেছেন, তিনি বলছেন, যাদেরকে বিতাড়ন করা হচ্ছে তাদেরকে গত ছয় বছর ধরে ডিটেনশন সেন্টারে আটকে রাখা হয়েছিল।

‘আমি এখানে পাঁচ থেকে ছয় বছর ধরে আছি। এখন তারা আমাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিচ্ছে। দয়া করে আমার জন্য দোয়া করবেন’, ভিডিওটিতে তাকে এ কথা বলতে শোনা যায়।

মিডলইস্ট আইয়ের কাছে আসা আরেকটি ভিডিওতে রোববারের জোর করে বিতাড়নের বর্ণনা রয়েছে।

ওয়েবসাইটটি জানিয়েছে, নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন রোহিঙ্গা বন্দী জানিয়েছেন, ‘তারা রাত ১২টার দিকে আমাদের সেলে আসে এবং আমাদেরকে ব্যাগ গুছিয়ে বাংলাদেশে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হতে বলে’।

‘এখন আমি হ্যান্ডকাফি পরিহিত আছি। এবং আমাকে এমন এক দেশে নেয়া হচ্ছে যেখান থেকে আমি আসিনি। আমি বাংলাদেশী না, আমি একজন রোহিঙ্গা।’

অবশ্য এদের অনেকেই ধর্মীয় কর্মসম্পাদন সংক্রান্ত ভিসায় সৌদি আরবে প্রবেশ করেছিলেন কিন্তু পরে তারা কাজের জন্য থেকে যান।

শুমাইসি ডিটেনশন সেন্টারে আটক কিছু রোহিঙ্গা জানিয়েছেন, তারা সৌদি পুলিশের হাতে আটকের আগ পর্যন্ত সারাজীবনই সৌদি আরবে ছিলেন। কিন্তু তাদের বৈধ কাগজপত্র না থাকায় পুলিশ তাদের আটক করে।

মিয়ানমারের মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রোহিঙ্গাদের বিশ্বের সবচেয়ে নিগৃহীত সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হিসেবে দেখা যায়।

২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে দেশটির সেনাবাহিনীর অভিযান, নির্যাতনের পর প্রায় ১০ লাখের মতো রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে।

এ জনগোষ্ঠীটি মিয়ানমারে দশকের পর দশক ধরে নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। দেশটির সেনা সরকার ১৯৬২ সালে ক্ষমতা দখলের পর ১৯৮২ সালে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেয়।

২০১২ সালে রাখাইনে বৌদ্ধদের সাথে রোহিঙ্গাদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সময় হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে জোর করে অন্তরীণ ক্যাম্পে আটক করা হয়।

জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট থেকে রোহিঙ্গা মানবাধিকার কর্মী নায় সান লিউইন আল জাজিরাকে বলেছেন, তারা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে অনুরোধ করেছেন যেন সৌদি আরবকে এ বিষয়টি বিবেচনার জন্য বলা হয়।

সূত্র : আল জাজিরা


আরো সংবাদ



premium cement