২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

অবশেষে ভাঙা হচ্ছে বিজিএমইএ ভবন  

-

রাজধানীর হাতিরঝিলে তৈরী পোশাকশিল্প মালিকদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ চলছে। গত বুধবার কাওরানবাজারসংলগ্ন বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করেন গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম। দীর্ঘ সময় ধরে এ ভবন ভাঙার বিষয়টি আলোচিত হয়ে আসছিল। এ ভবন পুরোটা ভাঙতে ছয় মাস সময় লাগবে বলে জানা গেছে। চট্টগ্রামভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ফোর স্টার এন্টারপ্রাইজ ভবন ভাঙার কাজ করছে। এ কাজে তারা কোনো অর্থ নিচ্ছে না।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট এক রায়ে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটিকে ‘হাতিরঝিল প্রকল্পে একটি ক্যান্সারের মতো’ উল্লেখ করেন। হাইকোর্ট এ রায় প্রকাশের ৯০ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেন। কিন্তু প্রায় ৯ বছর লাগল এ ভবন ভাঙার কাজ শুরু করতে।
গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম জানিয়েছেন, হাতিরঝিলের মতো নয়নাভিরাম এলাকায় এই ভবন বিষফোঁড়ার মতো ছিল। সর্বোচ্চ আদালতের রায়ে এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এটির ভাঙার কাজ আজকে উদ্বোধন করা হলো। এটার জন্য রাজউকের কোনো অর্থ খরচ করতে হচ্ছে না। রাজউককে উল্টো ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানটি এক কোটি দুই লাখ ৭০ হাজার টাকা দিচ্ছে। ভবন ভাঙার কাজ করতে সর্বোচ্চ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্রতিনিধি, বুয়েটের বিশেষজ্ঞ এবং নগর পরিকল্পনাবিদরা এই কার্যক্রম নিয়মিত তদারকি করবেন। র্যাংগস ভবন ভাঙার সময় যে দুর্ঘটনা ঘটেছিল, তা যাতে না হয় সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা নেয়া হয়েছে।
কাওরানবাজারে বিজিএমইএর বর্তমান ভবনটি দুটি বেসমেন্টসহ ১৬ তলা। বিজিএমইএ ব্যবহার করে চারটি তলা। বাকি জায়গা দুটি ব্যাংকসহ বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। তবে আইনি জটিলতার কারণে তাদের মালিকানা বুঝিয়ে দেয়া হয়নি। ভবনের ওপরের দুই তলা নিয়ে বিলাসবহুল ‘অ্যাপারেল ক্লাব’ করা হয়েছে। সেখানে সংগঠনের সদস্যদের জন্য সুইমিং পুল, ব্যায়ামাগার, রেস্টুরেন্ট ও সভাকক্ষ আছে। বড় আকারের একটি মিলনায়তনও আছে।
ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ফোর স্টারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিজিএমইএ ভবন ভাঙার কাজ শুরু হয়েছে পুরোদমে। এর জন্য সেফটি নেট ও কভার রাখার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ভাঙার পর প্রতিদিন জড়ো হওয়া আবর্জনা একটি নির্দিষ্ট জায়গায় রাখা হবে, পরে তা চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হবে।
২০১১ সালের ৩ এপ্রিল হাইকোর্ট ভবন ভাঙার নির্দেশ দেয়ার পর এর বিরুদ্ধে বিজিএমইএ লিভ টু আপিল করে। ওই আপিল ২০১৬ সালের ২ জুন আপিল বিভাগে খারিজ হয়। রায়ে বলা হয়, ভবনটি নিজ খরচে অবিলম্বে ভাঙতে আবেদনকারীকে (বিজিএমইএ) নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে। এতে ব্যর্থ হলে রায়ের কপি হাতে পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে রাজউককে ভবনটি ভেঙে ফেলতে নির্দেশ দেয়া হলো। পরে ভবন ছাড়তে উচ্চ আদালতের কাছে সময় চায় বিজিএমইএ। প্রথমে ছয় মাস এবং পরে সাত মাস সময়ও পায় তারা। সর্বশেষ গত বছর নতুন করে এক বছর সময় পায় সংগঠনটি। সে সময় তারা মুচলেকা দেয়, ভবিষ্যতে আর সময় চাওয়া হবে না।


আরো সংবাদ



premium cement