২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
প্রেসিডেন্টকে পার্লামেন্টের মাধ্যমে অপসারণের দাবি

তিউনিসিয়ায় নারী প্রধানমন্ত্রী নিয়োগ

তিউনিসিয়ার নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন নাজলা বৌদেন রামদান। - ছবি : সংগৃহীত

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ খুব অল্প পরিচিত বিশ্ববিদ্যালয় ইঞ্জিনিয়ার নাজলা বৌদেন রামদানেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তিনি এর আগে বিশ্ব ব্যাংকের সাথে কাজ করেছেন। দেশটির প্রায় সব ক্ষমতা কুক্ষিগত করার প্রায় দুই মাস পর নাজলাকে নিয়োগ দিলেন তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট।

গত সপ্তাহে ঘোষিত বিধানের অধীনে নাজলাকে দ্রুত একটি নতুন সরকার গঠনের কথা জানান প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদ।

এমন এক সময় তিউনিসিয়ার নেতৃত্ব দেবেন নাজলা যখন নানামুখী চাপের মধ্যে রয়েছে দেশটি। গত জুলাই মাসে আগের প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন সাইদ। এ সময় পার্লামেন্ট স্থগিত করে দেশের প্রায় পুরো নির্বাহী ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন তিনি। এরপর থেকেই নতুন একটি সরকার গঠনের ব্যাপারে দেশের ভেতর ও বাইরে থেকে ব্যাপক চাপের মধ্যে ছিলেন সাইদ।

এদিকে প্রেসিডেন্ট কায়েস সাইদকে পার্লামেন্টের মাধ্যমে বরখাস্তের আহ্বান জানিয়েছেন মুভমেন্ট পার্টির মহাসচিব লামিয়া আল-খামারি। তিনি বলেছেন, সংলাপের জন্য হাতের কাছে থাকা সব সুযোগ নষ্ট করেছেন এবং পার্লামেন্টের তাকে বরখাস্ত করার সময় এসেছে। আল-কুদস আল-আরাবিকে এ কথা বলেন মুভমেন্ট পার্টির মহাসচিব লামিয়া আল-খামারি। তিনি বলেন, কাইস সাইয়েদ অভ্যুত্থান করার সময় যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছেন তাতে তিনি ‘যুক্তি ও বিচারবুদ্ধির সব ধরনের সীমাই অতিক্রম করেছেন।’

তিনি ব্যাখ্যা করেন, ‘সাইয়েদের পদক্ষেপের ফলে প্রেসিডেন্টের আদেশ সংবিধানের চেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠেছে এবং প্রেসিডেন্টের আদেশে দেশের সংবিধান বাতিল হয়ে গেছে। তাই তাকে অপসারণ করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি সংসদের সভাপতি পদ থেকে রাশেদ গানুশির পদত্যাগ এবং তার দলের উপসভাপতির সংসদের নেতৃত্ব গ্রহণকে সমর্থন করি। কারণ এর মধ্য দিয়ে ঘানুচি দেশের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিলেন এবং যারা তাকে চলমান সঙ্কটের অংশ হিসেবে দেখছে তাদের অভিযোগ নাকচ করলেন।’

তিনি বলেন, ‘অতঃপর কাইস সাইয়েদের সংবিধান ও সরকার ব্যবস্থার বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান, আইন লঙ্ঘন এবং সাংবিধানিক শপথ লঙ্ঘনের কারণে তার প্রতি আস্থা প্রত্যাহারের জন্য একটি অনুমিত সংসদীয় অধিবেশন আহ্বান করতে হবে। আমি এই অধিবেশন আয়োজনের পক্ষে, কিন্তু ঘানুচি পদত্যাগ করার পর।’

তিনি বরেন, ‘আমি বিশ্বাস করি সাইয়েদের সাথে সংলাপের সময় চলে গেছে। এখন সমাধান হচ্ছে তাকে একঘরে করা, কারণ অভ্যুত্থানের জন্য গত দুই মাসে তিউনিসিয়া, তিউনিসিয়ার অর্থনীতি এবং বিশ্বে তিউনিসিয়ার ভাবমূর্তিকে অনেক মূল্য দিতে হয়েছে।’

২৫ জুলাই রাষ্ট্রপতি কাইস সাইয়েদ সংবিধানের ৮০ অনুচ্ছেদের উদ্ধৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রী হিশাম মেশিশিকে বরখাস্ত করেন, সংসদের কাজ ৩০ দিনের জন্য স্থগিত করেন, মন্ত্রীদের অনাক্রম্যতা প্রত্যাহার করেন এবং একটি নতুন সরকার গঠন না হওয়া পর্যন্ত নিজেকে নির্বাহী কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।

সরকারের অর্থনীতি পরিচালনা এবং করোনাভাইরাস মোকাবিলার সমালোচনা করে তিউনিসিয়ার বেশ কয়েকটি শহরে সহিংস বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরে এই পদক্ষেপ এসেছে। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।

দেশের বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এই পদক্ষেপকে ‘সংবিধানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থান’ এবং ২০১১ সালের বিপ্লবের সাফল্যের পরিপন্থী বলে সমালোচনা করেছে।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর


আরো সংবাদ



premium cement