২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ডিএসসিসি’র ৬৭৪১.২৮ কোটি টাকার বাজেট ঘোষণা

- ছবি : বাসস

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৬ হাজার ৭৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করেছে।

বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনে এ বাজেট ঘোষণা করেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। মেয়র পদে দায়িত্ব নেয়ার পর এটি তার তৃতীয় বাজেট ঘোষণা।

তিনি জানান, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১২৬৬.৫০ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৮৭৯.৬৫ কোটি টাকা।

মেয়র বলেন, ‘ডিএসসিসি ২০২০-২১ আর্থিক বছরে ৭০৩.৩১ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণ করেছে। তিনি বলেন, আজ আমি আনন্দের সাথে জানাতে চাই যে, বিগত অর্থবছরে আমরা রাজস্ব আদায়ে পূর্বেকার সেই মাইলফলক অতিক্রম করে নতুন ইতিহাস গড়তে সমর্থ হয়েছি। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমরা করপোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৮৭৯.৬৫ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছি।’

এর আগে, গত ২৬ জুলাই নগর ভবনের মেয়র হানিফ অডিটোরিয়ামে ডিএসসিসি’র দ্বিতীয় পরিষদের পঞ্চদশ করপোরেশন সভায় সর্বসম্মতভাবে এ বাজেট অনুমোদন দেয়া হয়। পাশাপাশি ২০২১-২২ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটও অনুমোদন দেয়া হয়।

করপোরেশনের আয়ের খাতগুলো বর্ণনা করে মেয়র বলেন, গৃহ কর বাবদ গত অর্থবছরে আয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪০ লাখ টাকা, যা করপোরেশনের ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০২০-২১ অর্থবছরে গৃহ কর বাবদ আয় ছিল ২৫৪ কোটি ৮৫ লাখ টাকা এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ১৮২ কোটি টাকা। সুতারাং, ২০২১-২০২২ অর্থবছরে এই খাতে আহরণ বেড়েছে প্রায় ৭০ কোটি টাকা। সুতরাং বিগত ২ বছরে গৃহ কর আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার ৭৮ শতাংশের চাইতেও বেশি।

গত অর্থবছরে ট্রেড লাইসেন্স বাবদ রাজস্ব আহরণ হয়েছে ৭৫ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। বিগত ২ বছরে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে প্রায় ৩৭ শতাংশ। কোরবানি উপলক্ষে অস্থায়ী পশুর হাটের ইজারা থেকে গত অর্থবছরে আয় হয়েছে ২৩ কোটি ১৭ লাখ টাকা, যা ২০২০-২১ অর্থবছরে ছিল ১৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। বিগত ২ বছরের ব্যবধানে এ খাতে ২৮৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে। টয়লেট, পার্কিং, কাঁচাবাজার, ভাগাড় ইত্যাদি ইজারা থেকে গত অর্থবছরে ১৫ কোটি ১৯ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। সামষ্টিকভাবে ২ বছরের ব্যবধানে এ খাতে আয় বেড়েছে প্রায় ৩৩৮ শতাংশ।

তিনি বলেন, দায়িত্বভার গ্রহণের পর ২০২০-২১ অর্থবছরে মেয়র হানিফ উড়ালসেতু থেকে প্রথমবারের মতো ৬ কোটি ৩১ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। বিগত অর্থবছরে এই আদায়ের পরিমাণ ছিল ৮ কোটি ২ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরে মোবাইল টাওয়ার ব্যবহার বাবদ মুঠোফোন কোম্পানীগুলো থেকে ১৯ কোটি ৮১ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ করা হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে এ খাতে ১১ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও তা অতিক্রম করে ১৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। বাজার সালামী খাতে গত অর্থবছরে রাজস্ব আদায় ১০৯ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ২০২০-২১ অর্থবছরের সাপেক্ষে এ খাতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে ২৮৫ শতাংশের বেশি। বাস/ট্রাক টার্মিনাল থেকে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৩ কোটি ৯৫ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে। গত ২ বছরের ব্যবধানে এ খাতে সাড়ে ৫০০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।

এছাড়াও স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ২০২১-২২ অর্থবছরে ১২৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকা ও বাজার ভাড়া খাতে ৩৫ কোটি ৮ লাখ টাকা রাজস্ব আহরণ হয়েছে।

মেয়র তাপস বলেন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে আমরা ৬৭৪১.৪২ কোটি টাকার বাজেট প্রাক্কলন করছি। ২০২২-২৩ অর্থবছরে গৃহ কর বাবদ ৪৫০ কোটি, বাজার সালামী বাবদ ২০০ কোটি, বাণিজ্য অনুমতি বাবদ ১৫০ কোটি, বাজার ভাড়া বাবদ ৩৫ কোটি, বিজ্ঞাপন কর বাবদ ১৫ কোটি, বাস-ট্রাক টার্মিনাল থেকে ১৬ কোটি, অস্থায়ী পশুর হাট ইজারা বাবদ ২২ কোটি, ইজারা (টয়লেট, পার্কিং, কাঁচাবাজার, ভাগাড় ইত্যাদি) বাবদ ৩০ কোটি, রাস্তা খনন ফিস বাবদ ৪০ কোটি, সম্পত্তি হস্তান্তর কর খাতে ১৫০ কোটি, মোবাইল টাওয়ার থেকে আয় বাবদ ৮ কোটি, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ উড়ালসেতু হতে ১০ কোটি, সামাজিক অনুষ্ঠান কেন্দ্রের ভাড়া বাবদ ৭ কোটি, যন্ত্রপাতি ভাড়া বাবদ ৪ কোটি ৫০ লাখ টাকা আয় করা যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, এছাড়াও সরকারি মঞ্জুরি (থোক) থেকে ৪০ কোটি ও সরকারি বিশেষ মঞ্জুরি বাবদ ২৫ কোটি এবং ডিএসসিসি, সরকারি ও বৈদেশিক সহায়তামূলক প্রকল্প খাতে ৪৮৮১ কোটি ৯ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রাপ্তির প্রত্যাশা করছি। ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের এগিয়ে চলার পথে সরকারের যথাযথ আর্থিক সহায়তা অব্যাহত থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

বাজেটে ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটে পরিচালন ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৩ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।

উল্লেখ্য, ব্যয়ের খাতগুলোর মধ্যে বেতন ভাতা বাবদ ২৮৫ কোটি, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানি ও গ্যাস বাবদ ৭৬ কোটি, মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ বাবদ ২৮ কোটি ৭০ লাখ, সরবরাহ বাবদ ৪৪ কোটি ৬৯ লাখ, মশক নিধনে ব্যবহৃত কীটনাশক বাবদ ২৫ কোটি, ভাড়া, রেটস ও কর খাতে ৮ কোটি ৬০ লাখ, কল্যাণমূলক ব্যয় বাবদ ১৩ কোটি ৩ লাখ, বিজ্ঞাপন ও প্রচারণা বাবদ ৪ কোটি ২৫ লাখ, ফিস বাবদ ১০ কোটি ৭৫ লাখ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বাবদ ১৫ কোটি ৫ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement