২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

সাবেক মুখ্য সচিব ড. সামাদ আর নেই

- ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব ও তৎকালীন বিনিয়োগ বোর্ডের (বিওআই) চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. এস এ সামাদ বুধবার বিকেলে বারিধারায় নিজ বাসভবনে মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন। তার বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।

ড. সামাদের ভাতিজা জামিলুর রব বলেন, বারিধারায় নিজ বাসায় তিনি ঘুমন্ত অবস্থায় মারা গেছেন।’ তিনি বলেন, মস্তিষ্কের জটিলতার জন্য চিকিৎসা নিয়ে সিটি হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার এক দিন পর চিরকুমার সামাদ মারা গেলেন। রব বলেন, ড. সামাদ সুস্থ হয়ে উঠছিলেন।

দেশের শীর্ষস্থানীয় এ অর্থনীতিবিদের প্রথম নামাজে জানাজা বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় ১ নম্বর রোডের বারিধারা জামে মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। তিনি জানান, জোহরের নামাজের পর দ্বিতীয় নামাজে জানাজা শেষে ড. সামাদকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায় তার পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।

পেশাদার সরকারি কর্মকর্তা সামাদ এর আগে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগে শিক্ষকতা করেছেন। ড. সামাদ ১৯৪২ সালে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ও বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিষয়ে অধ্যয়ন করেন।

১৯৭৯ সালে বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।
বিশিষ্ট আইনজীবী সৈয়দ আবদুল গনির ছেলে ড. সামাদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বোস্টন স্টেট কলেজ, বোস্টন বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রশাসনিক স্টাফ কলেজ, জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে শিক্ষাবিদ, পেশাদার অর্থনীতিবিদ ও আন্তর্জাতিক বেসামরিক কর্মকর্তা হিসেবে অর্থনীতি পড়ান।

আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ে তিনি পাবলিক সেক্টর সংস্কারসংক্রান্ত কয়েকটি জাতীয় কমিটির নেতৃত্ব দেন। ১৯৮০-এর দশকের গোড়ার দিকে রাষ্ট্রপতির অর্থনৈতিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯৬ সালে ভারতের সাথে ঐতিহাসিক গঙ্গার পানিরণ্টন চুক্তি ও ১৯৯৭ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতির (পিসিজেএসএস) সাথে শান্তি চুক্তিতে পৌঁছার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

নব্বইযয়ের দশকের শেষের দিকে তাকে পূর্ণ সচিবের পর্যাদায় তৎকালীন বিওআইর নির্বাহী চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের (সিএসপি) সদস্য হিসেবে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (এডিসি) দায়িত্ব পালনকালে সামাদ পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করে মুজিবনগর সরকারে যোগ দেন।
তিনি ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত (অবসরের আগ পর্যন্ত) মুজিবনগর কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধা) কল্যাণ সমিতির সভাপতি ছিলেন।

সামাদ ১৯৯০ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত কুয়ালালামপুরে জাতিসঙ্ঘের এশিয়া ও প্যাসিফিক ডেভেলপমেন্ট সেন্টারে (এপিডিসি) অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও তথ্য তথ্যযুক্তিবিষয়ক প্রোগ্রাম ডিরেক্টরের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৯২ ও ১৯৯৭-এর মধ্যবর্তী সময়ে এ অঞ্চলের বৃহত্তম সামাজিক বিজ্ঞান উন্নয়ন অধ্যয়ন নেটওয়ার্ক, এডিআইপিএর নির্বাহী সচিব ছিলেন।

তার মৃত্যুতে শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসাথে তার রূহের মাগফেরাত কামনা ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী।

সূত্র : বাসস


আরো সংবাদ



premium cement