২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঢিমেতালে কৃষি তথ্য শক্তিশালীকরণ প্রকল্প

- ছবি : সংগৃহীত

দুর্বলতার জালে ঢিমেতালে বাস্তবায়ন হচ্ছে কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য-যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্প। যার কারণে প্রকল্পটির মাত্র ৫২ দশমিক ৮৭ শতাংশ বাস্তবায়নেই মেয়াদ শেষ। বিভিন্ন জটিলতার জাল প্রকল্পটিকে ঘিরে রেখেছে। নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পটি সমাপ্ত হবে না বিধায় এখন ব্যয় ৪১ কোটি ২০ লাখ টাকা বা ৫৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ বাড়ানোর পাশাপাশি মেয়াদ আরো দুই বছর বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।

আর এই সংশোধিত প্রস্তাবনা পরিকল্পনা কমিশন থেকে জাতীয় অথনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদনের জন্য আগামীকাল মঙ্গলবার পেশ করা হচ্ছে।

প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: সাইফুল ইসলাম জানান, মেট্রোরেল ও করোনার কারণে প্রকল্প পিছিয়ে গেছে। মেট্রোরেলের কারণে ৯ মাস বিলম্ব ঘটেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবনা থেকে জানা গেছে, কৃষি তথ্য সার্ভিসের ভৌত অবকাঠামোগত সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য আটটি আঞ্চলিক অফিস ভবণ নির্মাণ, একটি কমিউনিটি রেডিও ভবন নির্মাণ, ঢাকা আঞ্চলিক অফিস ও প্রেসের জন্য একটি সাততলা ভবণ নির্মাণ, বিদ্যমান ৪৯৯টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের (এআইসিসি) কার্যক্রম জোরদার করা, বিদ্যমান প্রেস শাখার সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য মুদ্রণ ও মুদ্রণ সংশ্লিষ্ট আধুনিক যন্ত্রপাতি সংযোজন, মানবসম্পদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য ছয় হাজার ৯৫৫জন এআইসিসি সদস্য ও কর্মকর্তা প্রশিক্ষণ প্রদান, ৬৮ কোটি ৭০ লাখ ৯০ হাজার টাকা ব্যয়ে কৃষি তথ্য সার্ভিস আধুনিকায়ন ও ডিজিটাল কৃষি তথ্য-যোগাযোগ শক্তিশালীকরণ প্রকল্পটি চলতি ২০২০ সালের জুনে সমাপ্ত হবার কথা ছিল। গত ২০১৮ সালের মার্চে প্রকল্পটি একনেক সভা থেকে অনুমোদন দেয়া হয়।
দেশের ১২টি জেলায় এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এখন জুন পর্যন্ত অগ্রগতি ৫২ দশমিক ৮৭ শতাংশ। যার জন্য খরচ হয়েছে মূল বরাদ্দের ৩৬ কোটি ৩২ লাখ ৯১ হাজার টাকা বা ৫০ দশমিক ৭২ শতাংশ।

সম্প্রতি কৃষি মন্ত্রণালয়ে প্রকল্পটি পর্যালোচনা করা হয়। পর্যালোচনার তথ্যানুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২৭ শতাংশ এবং ভৌত বা বাস্তব অগ্রগতি ৫২ শতাংশ। আর জুন পর্যন্ত ছয় মাসে অগ্রগতি মাত্র দশমিক ৮৭ শতাংশ। টাকা খরচ ঠিকই হয়েছে ছয় মাসে কিন্তু অগ্রগতি নেই। প্রকল্পের মেয়াদ শেষ। বলা হয়েছে, ৯টি অফিস ভবনের মধ্যে ছয়টির ঢালাই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। গাড়ি, মিনিবাস কেনা হয়েছে। কৃষক ও কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। ১৯ জন কর্মকর্তা বিদেশ ভ্রমণও করেছেন।

প্রকল্প পরিচালক ওই পর্যালোচনা সভায় জানান, ঢাকা আঞ্চলিক অফিস ভবন তুলা উন্নয়ন বোর্ডের নির্মিতব্য ভবন নির্মাণ করার প্রস্তাব থাকলেও জায়গা প্রাপ্তিতে জটিলতা দেখা দেয়। ফলে ওই অফিস নির্মাণ করা সম্ভব হয়নি। পিএসসি সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রেস ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে ঢাকা আঞ্চলিক অফিস নির্মাণের প্রক্রিয়া চলমান আছে। প্রেস ভবনের যন্ত্রপাতি সংরক্ষণের জন্য একটি অস্থায়ী শেড নির্মাণ করা হয়েছে। প্রেসের যন্ত্রপাতি স্থানান্তর শেষ হলেই সেখানকার পুরাতন ভবন ভেঙে নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।

এ ছাড়া বিএডিসির পরিত্যক্ত গুদাম থাকায় এবং তা অপসারণে জটিলতা দেখা দেয়ায় ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করতে বিলম্ব হয়েছে। প্রকল্পটি অনুমোদনের সময় ২০১৫ সালের গণপূর্ত অধিদফতরের রেট শিডিউল অনুসরণ করে ব্যয় প্রাক্কলন করা হয়। এখন নতুন রেট হলো ২০১৮ সালের। ফলে সে অনুযায়ী ব্যয় নির্ধারণ করতে হবে। ঢাকা ও ময়মনসিংহ আঞ্চলিক অফিস ভবন বাদে বাকি সাতটি ভবন ডিএই ও এসআরডিআইয়ের বিদ্যমান ভবনের ঊর্ধ্বমুখী সম্প্রসারণের মাধ্যমে নির্মাণ করা হচ্ছে।

জানা গেছে, ওইসব অফিসের জন্য ডিপিপিতে কোনো গ্যারেজ ও পানি সরবরাহ করার নলকূপ স্থাপনের সংস্থান রাখা হয়নি। এখন এগুলো অন্তর্ভুক্ত করার জন্য প্রকল্প পরিচালক প্রস্তাব করেছেন। এ ছাড়া আধুনিক প্রেস নির্মাণের জন্য অতিরিক্ত ৩৬ কোটি ২৭ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে। পাশাপাশি কৃষি তথ্য সার্ভিসের বিদ্যমান ৪৯৯টি কৃষি তথ্য ও যোগাযোগ কেন্দ্রের কার্যক্রম জোরদার করার নিমিত্তে আরো ৩০ কোটি ৫৭ লাখ টাকাসহ প্রকল্পের মেয়াদ দুই বছর বৃদ্ধি এবং প্রাক্কলিক ব্যয় ৮৩ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় বৃদ্ধি করার জন্য প্রস্তাব দেয়া হয়েছে পরিচালকের পক্ষ থেকে। আর এখন পিইসির পর প্রথম সংশোধনীতে এসে সেই খরচ ১০৯ কোটি ৯১ লাখ ৮ হাজার টাকা করা হয়েছে।

কৃষি সচিব স্বাক্ষরিত কার্যপত্রে বলা হয়েছে, আধুনিক প্রেস ভবন নির্মাণে প্রয়োজনীয় ন্যূনতম যন্ত্রপাতি ক্রয়ের সংস্থান রেখে প্রকল্পের মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর ব্যাপারে সম্মত হয়েছে মন্ত্রণালয় কমিটি। তবে এই অর্থবছরে প্রকল্পের জন্য ২০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়ার ব্যাপারে সম্মত হয়েছে। প্রকল্পটির বাস্তবায়ন পিপিআর-২০০৮ অনুসরণের জন্য সচিবের পক্ষ থেকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। পণ্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে গুণগত মান রক্ষা করতে হবে।

প্রকল্প পরিচালক কৃষিবিদ ড. মো: সাইফুল ইসলামের সাথে গতকাল তার মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, এই প্রকল্পে আমাদের যেহেতু কনস্ট্রাকশনের কাজ, তার মূল হলো প্রেস ভবন নির্মাণ। প্রেস ভবন জায়গার উপর দিয়ে হচ্ছে মেট্রো রেল। এটা যাওয়ার কারণে টেকনিক্যাল ইস্যুতে তাদের পারমিশন নিতে হয়েছে। কারণ ওটা বিল্ডিংয়ের ঠিক উপর দিয়ে যাচ্ছে। তারা ওটা নতুন করে কারিগরি সম্ভাব্যতা যাচাই করতে ৯ মাসের মতো সময় নিয়েছে। এখন মেট্রোরেল প্রকল্প থেকে এই প্রকল্পের কাজের ক্ষেত্রে অনুমতি দিয়েছে। এখানেই আমরা পিছিয়ে গেছি।

তিনি বলেন, করোনার কারণে আমাদের প্রকল্পের সব জায়গায় নির্মাণকাজ বন্ধ ছিল। এখন আবার আস্তে আস্তে চালু হচ্ছে।


আরো সংবাদ



premium cement
এবারের আইপিএলে কমলা ও বেগুনি টুপির লড়াইয়ে কারা সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে সন্ত্রাসনির্ভর হয়ে গেছে : রিজভী রাশিয়ার ৯৯টি ক্ষেপণাস্ত্রের ৮৪টি ভূপাতিত করেছে ইউক্রেন আওয়ামী লীগকে ‘ভারতীয় পণ্য’ বললেন গয়েশ্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতে দাগনভুঞার যুবক নিহত কাশ্মিরে ট্যাক্সি খাদে পড়ে নিহত ১০ অবশেষে অধিনায়কের ব্যাপারে সিদ্ধান্তে পৌঁছল পাকিস্তান জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য

সকল