২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

নকল

নকল -


আমি প্রাইভেট পড়ানোর সময় তৃতীয় শ্রেণীর একছাত্রকে বললাম ‘প্যারেন্টস’ (ঢ়ধৎবহঃং) ইংরেজি প্যারাগ্রাফটি ভালোভাবে শিখতে।
কারণ, এই প্যারাগ্রাফটি পরীক্ষায় আসতে পারে। ছাত্রটি গাইড বের করে প্যারাগ্রাফটি দেখে বলল- স্যার, গাইডের মধ্যে অনেক কঠিন কইরা ল্যাখা, আপনে একটু সহজ কইরা ল্যাইখা দেন।
আমি তাকে তার পিতা-মাতার নাম দিয়েই প্যারাগ্রাফটি সহজ করে লিখে দিলাম।
রাত পোহালেই ইংরেজি পরীক্ষা দিতে যাবে।
সকাল দিকে আমি তার বাড়ির সামনে দিয়েই একটি বিশেষ কাজে যাচ্ছিলাম।
ছাত্রটির সাথে দেখা হলো।
আমাকে সালাম দিলো, আমি সালামের জবাব দিয়ে বললাম-
: যা যা শিখতে বলেছি তা শেখা হয়েছে তো?
: হ স্যার,অইছে। স্যার, প্যারেন্টস প্যারাগ্রাফটা আইব তো?
: এটাই আসার সম্ভাবনা বেশি। যদি আসে, যেভাবে লিখে দিয়েছি ঠিক সেভাবেই লিখে দিবে।
: ঠিক আছে, স্যার।
আমি আমার কাজে চলে গেলাম। ছাত্রও তার সময় মতো পরীক্ষা দিতে চলে গেল।
আমি আমার কাজ শেষে বিকেলের দিকে বাড়িতে আসার পথে ছাত্রটির মায়ের সাথে দেখা হলো। আমাকে দেখেই নাজায়েজ গালাগালি করতে থাকে। আমার মাথা তো খুব গরম হয়ে গেল।
তবুও আমি আমার মাথা ঠাণ্ডা রেখে তার মাকে নম্রভাবে বললাম-
: কী হয়েছে? আমাকে অযথা গালাগালি করতেছেন কেনো? আমি তো কিছুই বুঝতে পারতেছি না।
তারপর, আমার দিকে বড় বড় চোখ করে তাকিয়ে বললেন-
: তুই কেমন স্যার? আমার পোলা রে নকল করা শিখাইয়া দিসছ।
আমি বিস্মিত হয়ে বললাম-
: কোনো স্যার চায় না, তার কোনো ছাত্র নকল করুক। আপনে কী বলতেছেন?
আপনার মাথা ঠিক আছে তো? তারপর, তার মা বললেন-
: তোর ল্যাগা, আমার পোলা রে পরীক্ষার হল থ্যাইকা বাইর কইরা দিছে। আমি আমার পোলারে অনেক মারছি।
তুই অরে ল্যাইখা দেস নাই নকল করার ল্যাগা?
: হ্যাঁ, দিয়েছিলাম একটি প্যারাগ্রাফ। নকল করার জন্য নয়, ওটা শেখার জন্য। কারণ, ওইটা আসার সম্ভাবনা আছে, তাই ভালোভাবে শিখতে বলছিলাম। আমার ওই লেখার পৃষ্ঠা ছিঁড়ে নিয়ে উই যে নকল করে লিখবে তা তো আমি ভাবিনি। আরো তো ছাত্র আছে আমার, তারা তো আজ পর্যন্ত এমন কিছু করল না।
আপনার ছেলে দু’লাইন বেশি বুঝে দেখেই এ অবস্থা!
এভাবে কিছুক্ষণ তর্কবিতর্ক হয়ে গেল।
অবশেষে তার মা, তা বুঝতে পারলেন- আমি যে তাকে নকল করতে বলিনি।


আরো সংবাদ



premium cement