২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

স্নিগ্ধ সকালের মিষ্টি রোদ

স্নিগ্ধ সকালের মিষ্টি রোদ -

সকালবেলা। সূর্যের সোনালি কিরণ ছড়িয়ে পড়ছে প্রকৃতির মায়াবি মুখে। প্রতিদিনের এই স্নিগ্ধ সকাল আমার কাছে খুবই প্রিয়। তাই প্রায় সময়ই ফজরের পর এই নির্মল আবহাওয়া বা প্রকৃতি উপভোগ করতে একটু হাঁটাহাঁটি করি। তবে আজ বাড়িতে আছি, জানালার পাশেই বসে আছি। কিন্তু ভালো লাগছে না। একটা সময় নদীর পাড়ে চলে এলাম। চেয়ারটা টেনে বসে পড়লাম নদীর গা ঘেঁষা সারি সারি গাছের ছায়ায়, বাতাসে দোল খাচ্ছে তার বাড়ন্ত পাতাগুলো। মাথার উপর দিয়ে একঝাঁক অচেনা পাখি মিষ্টিমধুর কলরবে ডানা মেলে উড়ে যাচ্ছে কোথাও। ভাবছি, ইশ! আমিও যদি পারতাম উড়ে যেতে, ওই পাখিদের সাথে স্বপ্নের রঙিন ঠিকানায় দূর-বহুদূর! কিন্তু অসম্ভব, অসাধ্য আর অক্ষমতার দুয়ার পেরিয়ে আমি কি পারব যেতে! পারব না।
তাই সেই স্বপ্নের ছবি সযতেœ বারবার আঁকি হৃদয়ের ধূসর পাতায়। মুঠো মুঠো শুভ্র মেঘমালা ভেসে যাচ্ছে এক গন্তব্যে, কী জানি কোথায়! কোন ঠিকানায়! একটু দাঁড়ানোর অবকাশ যেন তাদের নেই। আমার ব্যথা কি ওরা বোঝে? ভাবি আর চোখ বন্ধ করে আবার তাকাই। যখন সূর্যের প্রতিবিম্ব আমার দৃষ্টিতে প্রতিভাত হয়। তখন ভাবি! সূর্য তো আমার দিকে তাকিয়ে আছে। হয়তো বা সে আমার ব্যথা কিছুটা বুঝে। হয়তো সে চুপিচুপি বলছে- তুমি মেঘের দিকে তাকিয়ে কষ্ট পাও কেন? কষ্ট পেও না। ভাবতে পারো ওরা সময়ের মতোই বাধাহীন। সময় যেমন কখনো দাঁড়িয়ে থাকে না, শত কামনা তুচ্ছ করে চলে যায় এক অবিরাম গতিতে। সময়কে তো আর দেখা যায় না। বরং মেঘমালাকে দেখা যায়। তাই এই মেঘমালাকে দেখে তুমি উপলব্ধি করো, ভেবে নাও, সময়ও এই মেঘমালার মতোই। এখন সে মেঘমালা হয়ে চলে যাচ্ছে। তাই মেঘমালা থেকেই কিন্তু তুমি শিক্ষা নিতে পারো। মেঘমালা যেভাবে সময়ের চলন্ত রূপ নিয়ে সব কিছু পেছনে ফেলে চলে যায়, তেমনি তুমিও সব অবসন্নতা, জড়তা, ব্যথা-বেদনা, দুঃখ-হতাশা, অপ্রাপ্তির বঞ্চনা আর না পাওয়ার বেদনা, নিরাশার প্রাচীর মাড়িয়ে, সব কিছু পেছনে ফেলে এগিয়ে যাও সম্মুখপানে। আর এই হিম্মত রাখো যে, তুমি সফল হবেই হবে, ইনশাআল্লøাহ।
অতঃপর হঠাৎ ফিরে এলাম নিজের মধ্যে, নিজের ভুবনে। আর মনোযোগ দিয়ে খুব ভালোভাবে ভেবে দেখলাম তাই তো! সময় তো থেমে থাকে না, তাহলে আমি বা আমরা কেন নিশ্চল ভাবনার মাঝে ডুবে থাকব? বরং আমাদের তো সময়ের সাথে রাগ নয়, মিতালী পাততে হবে। সে চলে যাচ্ছে যাক। তাতে ক্ষতি কি? আমরাও তার সাথে অর্থাৎ সময়ের সাথে পাল্লøা দিয়ে জীবনকে সফলরূপে এগিয়ে নিয়ে যাব। আর ওই আকাশের মতো উদার, পাখির মতো স্বাধীন, স্নিগ্ধ সকালের মতো নির্মল ও সাগরের মতো বিশাল মনের অধিকারী হওয়ার আপ্রাণ চেষ্টা করব। সূর্যের কাছ থেকে শিক্ষা নিয়ে তার মতোই কিরণ ছড়িয়ে হেসে উঠব। এভাবেই একদিন অপসংস্কৃতির অন্ধকার দূরীভূত করে, সন্ধ্যার আঁধারে আলো জ্বালিয়ে স্নিগ্ধ সকালের মতো পৃথিবীকে আলোকিত করবে, ইনশাআল্লøাহ।

 


আরো সংবাদ



premium cement