২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দূরপ্র্রবাসে

-

দিনে যেমন অনেক সময় মেঘলাকাশের কারণে সূর্যের দেখা পাওয়া যায় না। ঠিক তেমনি আমাদের এই প্রবাস জীবনের মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা দুঃখ-কষ্টগুলোও কেউ দেখতে পারে না। কাউকে বুঝতে দিই না, আমরা কতটা যে দুঃখ-কষ্টের মাঝে আছি। কারণ, সুখের ভাগ সবাই নিতে পারে, দুখের ভাগ কেউ নেবে না। হঠাৎ করে মেঘে যেমন আলোকিত দিন কালো করে ফেলে, ঠিক তেমনি প্রবাস জীবনে কিছু কিছু সময়ে মেঘের মতো করে আমাদের মুখটি কালো করে ফেলি যখনই কিছু স্মৃতির কথা মনে পড়ে যায়। আবার যখন ভাবি আপনজন বলতে পাশে কেউ নেই, ঠিক তখনই চোখ দু’টি কান্নায় টলমল করতে থাকে।
প্রাকৃতিক নিয়মে যখন কালবৈশাখীর ঝড় বয়ে যায় তা সবাই বুঝতে পারে। কিন্তু আমাদের জীবনে মনের ভেতরে কালবৈশাখীর ঝড় প্রতিনিয়ত বয়ে যাচ্ছে তা কেউ বুঝতে পারে না। সবাই ভাবে আমরা কত সুখে আছি।
যারা দূরপ্রবাসে থাকে তারাই জানে প্রবাস কী মানে? আমরা যারা প্রবাসে আছি- সবকিছু ভুলে থাকতে পারলেও, ঈদ উৎসবের দিনগুলো ভুলে থাকতে পারি না। মনে পড়ে যায় অতীতে সেই ঈদ কাটানো সময়ের আত্মীয়স্বজন, মা-বাবা, ভাইবোন, বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে বিশেষ স্মৃতি। মনে ইচ্ছে থাকলেও তাদের সাথে সময় দিতে পারি না, একসাথে বসে গল্পও করতে পারি না। এই যেন আকাশ-পাতাল ব্যবধান। তারা কোথায়? আমরা কোথায়?
সামনে ঈদ উৎসবের দিনগুলোতে সময় দিতে পারব কি না তাও জানি না। কারণ, জীবনের গ্যারান্টি নেই। যেকোনো সময় চলে যেতে পারি এই দুনিয়া ছেড়ে। কেননা, প্রবাস জীবনটাই ঝুঁঁকিপূর্ণ।
সময় কারো জন্য অপেক্ষা করে না। সময় নদীর স্রোতের মতো বিরতিহীন চলতেই থাকে। নদীর স্রোত যেমন পেছনে ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। চলে যাওয়া সময়ও ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। সময় চলে সময়ের গতিতে। সময়, সময় মতো চলে যায়। দিন, মাস, বছরের নাম ঠিকই আছে। নামের কোনো পরিবর্তন নেই। পরিবর্তন হয়ে যায় শুধু পরিবেশ,আবহাওয়া আরো অনেক কিছু। ঠিক তেমনি আমাদের জীবন ঠিকই চলে যাচ্ছে।
যার যার ব্যক্তিগত নাম ঠিকই আছে। কিন্তু শুধু পরিবর্তন হচ্ছে অবস্থান। কেউ রোগে ভুগছে। কেউ দুশ্চিন্তায় নিজেকে শেষ করে ফেলছে। কেউ সুখের সাগরে ভাসছে। আবার কেউ সাঁতার না জেনে দুঃখের সাগরে ডুবে মরছে।
এভাবেই চলছে আমাদের প্রবাস জীবন। ভেতরের খবর নেয়ার মতো কেউ নেই। হাজারো দুঃখ-কষ্টের মাঝে থেকেও মা-বাবাকে বলি, তোমরা কেউ চিন্তা করো না। তোমাদের দোয়ায় ভালো আছি।
শুধু মনে পড়ে যায়-
বাড়িতে ফেলে আসা ঈদ উৎসবের দিনগুলোর, সেই সময়ের স্মৃতি। গেঁথে আছে মনের ভেতর যা আদৌ ভোলা সম্ভব নয়। যখন ভাবি সামনের ঈদে, বাড়ির সবাই একসাথে সময়টা কাটাতে পারব কি না তা ভাবতেই চোখের জল এসে পড়ে। কত মানুষ চলে গেল চোখের সামনে। এবার ঈদে অনেক প্রবাসী ভাই পাশে নেই। সময় হলেই যার যার স্থান ত্যাগ করতে হবে। চলে বা যেতে হবে আসল ঠিকানায়।
প্রবাস জীবনে ঈদের যে আনন্দ, তা আমরা বুঝব কী করে? ঈদের দিনে অনেকের কাজও করতে হয়। মন খুলে বাড়িতে কথা বলবে এর সময়টুকুও তেমন পাওয়া যায় না। খাবারের কথা বলতে গেলে মন এমনি এমনিই খারাপ হয়ে যায়। মায়ের হাতে ঈদের সেমাই রান্না করে খাওয়া মজাই আলাদা। কিন্তু এই দূরপ্রবাসে থেকে স্বাদটাও বুঝতে পারি না। বড় দুঃখজনক হলো- বাবা, চাচা, ভাইদের সাথে মিলে যেতেও পারব না ঈদগাহ মাঠে।
ভালো থাকুক সব প্রবাসীর মা-বাবাসহ আত্মীয়স্বজন। ভালো থাকুক সব প্রবাসী ভাইয়েরা।

 


আরো সংবাদ



premium cement
গ্যাটকো মামলা : খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে শুনানি ২৫ জুন বুড়িচংয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১ গলাচিপায় স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে ৩টি সংগঠনের নেতৃত্বে মানববন্ধন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে লাল গালিচা সংবর্ধনা ছেলে হারা মা সাথিয়ার কান্না যেন থামছেই না বৃষ্টির জন্য নারায়ণগঞ্জে ইস্তিস্কার নামাজ আদায় প্রবাসী স্ত্রী থেকে প্রতারণার মাধ্যেমে দেড় লাখ টাকা চাঁদা আদায়, ছাত্রলীগ নেতাকে শোকজ কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ভোটারের তালিকা চান হাইকোর্ট আশ্রয় নিলেন মিয়ানমারের আরো ৪৬ বিজিপি সদস্য উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে যুবককে কুপিয়ে হত্যা কক্সবাজারে ট্রেন লাইনচ্যুত, যোগাযোগ বন্ধ

সকল