স্বচ্ছতার আনন্দে
- মেজবাহ মুকুল
- ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০১:১৮
পাকা কথা দেয়ার আগে কন্যার বাবা সায়দুল আলম বললেন- লেখালেখি করে কি সংসার চালাবে ছেলে? এমন বিস্ময় প্রকাশের প্রশ্ন ছুঁড়লেন ঘটকের মুখে।
ঘটক : ছেলে শুধু লেখালেখি করে তা না চাচা সাহেব। সে একজন সাংবাদিক। পত্রিকার সাব এডিটর। বেতন খুব খারাপ না। অন্যান্য পত্রিকায় লেখালেখি করেও ভালো সম্মানি পায়।
আলম : তা সব মিলিয়ে আর কত? ঠোঁট বাঁকিয়ে বললেন।
ঘটক : সব মিলিয়ে ২০ হাজার তো বটেই। ছেলের চাচা বাশার হকের দিকে তাকিয়ে বলল ঘটক।
আলম : ২০ হাজার! এ তো আমার মেয়ের মাসিক জুতা কেনার টাকাও না। ঢাকা শহরে একটি পরিবার বাস করতে হলে ন্যূনতম ছেলের বেতন চাই ৫০ হাজার। তা না হলে কি খাবে? কি পরবে? আগামী প্রজন্মের ভবিষ্যৎই বা কি?
কথাগুলো তাচ্ছিল্যের স্বরেই বললেন সায়দুল আলম। ছেলের চাচা বাশার হক এবার নড়েচড়ে বসলেন। বললেনÑ
বাশার : আলম ভাই কথা মোটে খারাপ বলেননি। আপনার এ চিন্তার দায় ছিল আমাদের সরকারের। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মালিকদের। আমাদের মতো সমাজ সচেতন মহলের। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার গদিতে বসে জনগণের সেবক হয়ে আমরা যদি আমাদের ঈমানের খেদমত করতাম তাহলে আজ এই দুরবস্থায় পড়তে হতো না। বিয়ের প্রসঙ্গেও কু-প্রশ্ন উঠত না।
আলম : কি বলতে চান পরিষ্কার করুন। ভ্রƒ কুঁচকে বললেন।
বাশার : আলম সাহেব বলতে চাই সূরা নূর-এর ৩২ নং আয়াতের কথা। ওই আয়াতে আল্লøাহ বলেছেন, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অবিবাহিত, তাদের বিয়ে সম্পাদন করে দাও এবং তোমাদের দাস ও দাসীদের মধ্যে যারা সৎকর্মপরায়ণ, তাদেরও। তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদের সচ্ছল করে দেবেন। আল্লøাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’
পরের আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লøাহ তায়ালা নিজ অনুগ্রহে যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের সামর্থ্য দান করেন, ততক্ষণ তারা সংযম অবলম্বন করবে এবং নিজ চরিত্র রক্ষায় যতœবান থাকবে।’ এই আয়াতে সামর্থহীনদের ধৈর্যধারণ করতে এবং উপরোক্ত আয়াতে অবিবাহিতদের বিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। আমাদের ছেলের আর্থিক সামর্থ্য রয়েছে। কিন্তু সংসারের চাহিদা তো আর একদিনে বাড়ে না। বাড়ে ধীরে ধীরে। তখন সব ছেলে পরিবার সচ্ছল রাখতে আল্লাহর অনুগ্রহ দিলে রেখে বেশি রিজিক অন্বেষণের চেষ্টা করে। মনে রাখবেন, আমরা চেষ্টাকারী। ফলাফলের মালিক তো আল্লাহ। এভাবেই আল্লøাহ বন্দার রিজিক বাড়ান। অথবা আল্লাহ যেমন ইচ্ছা করেন। যেহেতু আল্লাহ বলেছেন ‘তারা যদি নিঃস্ব হয়, তবে আল্লাহ নিজ অনুগ্রহে তাদেরকে সচ্ছল করে দেবেন।’ অতএব আল্লøাহর বিধান জানার পরও কেউ যদি তা মানতে গড়িমসি করে তবে সে ‘কুফরি’ করল।
আলম : দেখুন ভাই, বাস্তবতা তার চেয়েও ভয়াবহ। তাছাড়া আমি আল্লøাহর আয়াতকে অবিশ্বাস করি না।
বাশার : হ্যাঁ, আপনি বিশ্বাস করেন। কিন্তু ব্যবহারিক জীবনে এ আয়াতকে মানতে অনীহা প্রকাশ করাও কুফরি। আপনার ভুলে গেলে চলবে না, কুরআনই সময়ের শ্রেষ্ঠ বাস্তবতা। বস্তুত যে কুরআনের বাস্তবতা বা আয়াতকে অস্বীকার করল সে কুফরি করল।
আলম : না, আমি কাফের হইনি, যেহেতু আমার ঈমান আছে।
বাশার : (মুচকি হেসে) ভাই ঈমান আছে দাবি করলেই মুসলিম হওয়া যায় না। একজন মুসলিমের কাজ হলো ঈমানকে আমলে পরিণত করা। তবেই প্রকৃত মুমিন এবং মুসলিমের পরিচয় পাওয়া যায়। কিন্তু শুধু কথায় বিশ্বাস বিদ্যমান আর কাজে অবিশ্বাসী হলে তাকে প্রকৃত ঈমানদার বলা যায় না। কাজের ক্ষেত্রে ঈমানবিরোধী কাজ করলে সে হয় কাজের বেলায় কুফরি। আবার কথায় হলে তাকে বলা হয় কথার কুফরি। এবার ভাবুন আপনি। আপনি কথার কুফরি করেছেন কি না দেখুন। তেমন কিছু হলে এখনই আল্লাহর কাছে তাওবা করুন অনুনয়ের সাথে। আর বিয়েকে বেতনের শর্তে, লাগামহীন মোহর ধার্য করে, বংশের দোহাই দিয়ে কঠিন করে ফেলবেন না। ঈমানদার ও উত্তম চরিত্রের পাত্র-পাত্রী দেখে বিয়ে দেবেন। কেননা, রাসূল সা: বলেছেন, ‘তোমাদের কাছে যদি কেউ বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, তবে তার চরিত্র পছন্দনীয় হলে অবশ্যই বিয়ে সম্পাদন করে দাও। তা যদি না করো তাহলে পৃথিবীতে ফেতনা-ফ্যাসাদ ও চরম বিপর্যয় সৃষ্টি হবে।’ দেখছেন দ্বীনের বিধান ছেড়ে কিভাবে আমরা পথভ্রষ্ট হলাম।
কোরাস : কোরান আমার খুলে দিলো দিলের ঈমান/বর্বরতা পোড়ায়ে জ্বাললো আলোর নিশান/ আমার ভেতর ঢালে প্রভু হেরার আলো/ দিন দুনিয়ায় ভেদ করিয়া আঁধার কালো/ ঘুরেছি উন্মাদ উদ্যান মরু-মাঠে বেদুন/ না বুঝে ঐশি হেদায়া হারা ভবে নিত্যদিন/ গোমরা গোলাম আয় খুলেছে দয়াল দ্বার/ আজ দিন এলো সকল পাপী পাপ মোছার/ ত্রিভুবনে পৃথিবী আমার হলরে স্বাধীন/ আজই শুধি প্রভু চরণে মাথা লুটায়ে ঋণ।হ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা