২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

হারিয়ে যাচ্ছে সোনালি দিনগুলো

-

বহুদিন হলো মিষ্টি রোদের ছোঁয়া লাগেনি গায়ে। তিনতলার ব্যালকনি থেকেই দেখতে হয় সূর্য ওঠা-নামার দৃশ্য। পাহাড় দেখা হয়নি আরো দীর্ঘদিন, বাসার অদূরে ময়লার স্তূপের পাহাড় দেখতে হয় ঘরের জানালা দিয়ে। বহুদিন হলো বন্ধুদের সাথে সস্তা মোড়ের আড্ডায় চা-কফি খাওয়া হয়নি, ঘরের চার দেয়ালের মাঝেই মেটাতে হয় সেই তৃপ্তি। অনলাইন, পত্রিকা আর বইয়ের পাতায় চোখ বুলিয়েই দিন কেটে যায়। কোন ফাঁকে বসন্ত এসে হাওয়ায় মিশে গেছে টেরও পাইনি। রোদেলা দুপুর এখন অচেনা এক রঙধনু।
গত দেড়টি বছর এভাবেই কেটে গেল জীবন থেকে। যে জীবনে সকালের মিষ্টি রোদ, ক্লান্ত দুপুর আর বিকেলের মৃদু বাতাসের বড্ড অভাব। এ জীবনে গল্প করার মানুষ নেই, কাছে আসার সঙ্গী নেই। আছে শুধু নিঃসঙ্গতা আর ভীতি। করোনা নামক অদৃশ্য এক শক্তির ভয়ে আমরা আজ আতঙ্কিত। ঘরে-বাইরে শুধুই মৃত্যুভয়! এরই মধ্যে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হয়েছে লাখো প্রাণ। এই ভয়ে কতজন যে জীবিকা হারিয়েছে, কত মানুষ শহর ছেড়ে গ্রামের পথ ধরেছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই!
মাঝে মাঝে ভাবনার জগতে হারিয়ে যাই। একা একা বিড়বিড় করে কথা বলি নিজের সাথে। ভাবনাগুলোকে অক্ষরে আনার চেষ্টা করি। কিন্তু বারবার ব্যর্থ হই নিজের কাছে। স্রষ্টার পরীক্ষার কাছে আমাদের ভাবনাগুলো যে বড়ই ঠুনকো। ভাবনাহীন এভাবেই কেটে যাচ্ছে দিনগুলো। সময়কে কোনোভাবেই ধরে রাখতে পারছি না। সত্যিই তো, সময় কী কারো কথায় থেমে থাকে, ও তো নদীর স্রোতের মতো বয়ে চলে। যার লাগাম টানা ক্ষুদ্র মানুষের সাধ্যের বাইরে।
হারিয়ে যাওয়া দিনগুলো কখনো ফিরে পাওয়া যায় না। কোনো অজুহাত খাটে না তার কাছে। পরিশ্রম আর মেধা দিয়ে জয় করে নিতে হয় তাকে। কালের গর্ভে হারিয়ে যাচ্ছে আরো একটি বছর। সময়ের অতল গহ্বরে কর্মহীন হয়েই আমরা ডুবে যাচ্ছি। পেছন থেকে ফেরানোর কেউ নেই। আঁধার দিন দিন ঘনিয়ে আসছে। কর্মব্যস্ততার এই শহরে সবাই যেন কর্মহীন। ঘরবন্দী জীবনযাপন। শহরটা কেমন শান্ত হয়ে যাচ্ছে।
এই করোনাকালীন সময়ে অর্থনৈতিক ধস নেমেছে অনেক পরিবারে। বহু শিক্ষার্থীর জীবনে নেমে এসেছে অন্ধকার। অনেকের রঙিন স্বপ্নগুলো ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। অনেকে আবার সেই স্বপ্নের পথ চেয়ে বসে আছে মাসের পর মাস। তবুও মানুষ বেঁচে আছে। সত্যিই, এটাকে বেঁচে থাকা বলে না! স্বপ্নগুলো কী বাস্তবে রূপ নেবে কখনো! সময় যে শেষের পথে। এসব ভাবনা রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে। চোখের নিচে কালো দাগ পড়ে গেছে। শুধুই যে আমি তা কিন্তু নয়, আমার মতো আরো হাজার মানুষের মনের আকুতি এগুলো।
অপেক্ষার প্রহর কিছুতেই কাটছে না। অধ্যয়ন জীবনের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি ছুটি এটি। ১৫ বছরের শিক্ষাজীবনে এমন লম্বা বিরতি কখনো আসেনি। করোনার শুরুতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হয়ে গেছে। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা নিয়ে বেশ চিন্তিত। ভবিষ্যৎ শিক্ষা নিয়ে বড় ধরনের ক্ষতির আশঙ্কায় ভুগছে লাখো তরুণ শিক্ষার্থী। এই সময়ের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা আদৌ সম্ভব কী! পেছনের দিনগুলো কি কখনো ফিরে পাবো?
জীবনের এই ক্লান্তিলগ্নে তবুও স্রষ্টার কৃতজ্ঞতা আদায় করি। সোনালি দিনগুলো হয়তো হারিয়ে যাচ্ছে, একেকটা সুখের মুহূর্ত হয়তো বালিচাপা পড়ছে; কিন্তু আপন মানুষগুলোকে আর হারাতে চাই না। প্রিয় মানুষদের বিচ্ছেদের চেয়ে একলা ঘরে বন্দী থাকা খুব একটা কষ্ট মনে হয় না। তবুও ভালোবাসা টিকে থাকুক প্রতিটি প্রাণে। প্রতিটি হৃদয় জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত হোক। আঁধার কেটে আলো জ্বলে উঠুুক। আগামীর পথচলা হোক আরো সুগম এই কামনা সদা হৃদয়ে।হ


আরো সংবাদ



premium cement
সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী একনেকে ৮৪২৫ কোটি টাকার ১১ প্রকল্প অনুমোদন সান্তাহারে ট্রাকের চাকায় পিষ্ট হয়ে যুবক নিহত জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : আব্দুর রহমান যুক্তরাষ্ট্রের সেতু ভাঙ্গার প্রভাব পড়বে বিশ্বজুড়ে! নাশকতার মামলায় চুয়াডাঙ্গা বিএনপি-জামায়াতের ৪৭ নেতাকর্মী কারাগারে হারল্যানের পণ্য কিনে লাখপতি হলেন ফাহিম-উর্বানা দম্পতি

সকল