২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

বাতাসে দুলছে কৃষ্ণচূড়ার লাল

-

‘কৃষ্ণচূড়া, লালে রাঙা আগুন ঝরা, প্রিয়ার খোঁপার ফুল। কৃষ্ণচূড়া, হাওয়ায় খেলা পাপড়ি দোলা, বধূর কানের দুল।’ গ্রীষ্মের গরম হাওয়ায়, কৃষ্ণচূড়ার নরম ছোঁয়ায় প্রকৃতি যেন নবরূপে আবির্ভূত। মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরির খেলায় সারি সারি কৃষ্ণচূড়া প্রকৃতিতে দিয়েছে যেন এক ভিন্নমাত্রা। লকডাউনের খপ্পরে জনমানবহীন শহরের পথে নীরবে সারি সারি গাছের ডগায় ফুটছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। এ যেন ঝলমলে নানা রঙের খেলা। কখনো কখনো বাতাসে দুলছে কৃষ্ণচূড়া ফুল। গাঢ় লাল, কমলা, হালকা হলুদ রঙের ফুলে ভরে গেছে প্রতিটি শাখা। দেখে সবার মনে পড়ে যাবেÑ ‘গন্ধে উদাস হওয়ার মতো উড়ে/তোমার উত্তরী কর্ণে তোমার কৃষ্ণচূড়ার মঞ্জুরী।’ কৃষ্ণচূড়া এক ধরনের বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ, যার ইংরেজি নাম ফ্লেম ট্রি (ঋষধসব ঞৎবব) এবং বৈজ্ঞানিক নাম ডেলোনিক্স রেজিয়া (উবষড়হরীজবমরধ)। এই গাছ চমৎকার পত্র-পল্লব এবং আগুনলাল কৃষ্ণচূড়া ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। যাকে রাজকীয় ফুলও বলা হয়। এটি ফ্যাবেসি (ঋধনধপবধব) পরিবারের অন্তর্গত একটি বৃক্ষ, যা গুলমোহর নামেও পরিচিত। বাংলাদেশে সাধারণত বসন্তকালে এ ফুল ফুটলেও গ্রীষ্ম পর্যন্ত চলে তার রাজত্ব। ফুলগুলো বড় চারটি পাপড়িযুক্ত। পাপড়িগুলো প্রায় আট সেন্টিমিটারের মতো লম্বা হতে পারে। কৃষ্ণচূড়া জটিল পত্রবিশিষ্ট এবং উজ্জ্বল সবুজ। প্রতিটি পাতা ৩০-৫০ সেন্টিমিটার লম্বা এবং ২০-৪০টি উপপত্রবিশিষ্ট। শহরের আনাচে কানাচে, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রাঙ্গণে দেখা মেলে গাছে ফুটে থাকা রক্তিম কৃষ্ণচূড়ার। ঝলমলে রঙের খেলা আর কখনো কখনো বাতাসে সোঁদা গন্ধে আপন ছন্দ তুলে ধরে প্রকৃতিতে। মন কেড়ে নেয় পথচারীদের। বিশেষ করে কীর্তনখোলার তীরে বরিশাল লঞ্চঘাটে দেখা মিলে প্রকৃতির সাজে সজ্জিত রাশি রাশি কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া দেখলে সবারই মনে হয় এ যেন নীল আকাশের বুকে প্রকৃতির এক লাল আল্পনা। কৃষ্ণচূড়ার এমন বাহারি রূপে মুগ্ধ হয়ে তাই তো কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন, ‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরী কর্ণে, আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে।’ গ্রীষ্মের খরতাপে দগ্ধ ধরাতলে ক্লান্ত মানবতার মাথায় সুশীতল ছায়া ও নয়নে তীব্র রঙের ঝলকানিতে মুগ্ধকর আবেশ ছড়িয়ে কৃষ্ণচূড়া ফুল জানান দেয় তার সৌন্দর্যের কথা। লকডাউনের এই সময় প্রকৃতিতে চোখ বুলালেই দেখা যায় এরকম টুকটুকে লাল রাজকীয় দৃশ্য।হ

 


আরো সংবাদ



premium cement