২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫
`

জিন্দা লাশ

-

অবশেষে নিরাপত্তাকর্মীরা এসে নিয়ে গেল বৃদ্ধ জিয়াংহুর নির্জীব দেহটা প্লাস্টিকের ব্যাগে পুরে। বিপতœীক জিয়াংহু এবং তার দু’সন্তান আগে থেকেই ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে কোয়ারেন্টিনে আবদ্ধ ছিল। কোভিড-১৯ ওদের তিনজনের সংসারটাকে নিমিষে ছারখার করে দিলো। বৃদ্ধ বাবার সর্দিজ্বর-কাশি দুভাইকে অতিমাত্রায় সচেতন করে তুলছিল। বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের আক্রমণে জনমন আতঙ্কিত। চীনের উবেই প্রদেশ থেকেই যার উত্থান। সেই প্রদেশেরই ছোট্ট শহর উয়াংসা। মনোরম প্রাকৃতিক পরিবেশে ঘেরা তৃপ্তমধুর দিনযাপনে অভ্যস্থ সহজ সরল মানুষগুলো এখন উ™£ান্ত উদ্বাস্তুর মতো নিজভূমে পরাহত। অনুর চেয়েও অণুুজীব এই ভাইরাসের কাছে আজ সব পরাস্থ।
মাতৃহীন দুই ভাই। ওদের শরীরে করোনার কোনো লক্ষণ নেই। তাই বলে কি সতর্কতাও নেই? হ্যাঁ সে জন্যই দুভাই স্বঘোষিত কোয়ারেন্টিন পালন করছিল। বাবা অসুস্থ হয়ে পড়ার পর থেকে সপ্তাহের দিনগুলোকে ভাগ করে নিয়ে পালাক্রমে দু’ভাই খাবার তৈরি করে নিজেরা খায়। বাবার কক্ষের সামনেও রেখে যায়। কিন্তু আজ সকাল থেকেই বাবার কোনো সাড়া না পেয়েই লারাংহু কল দিয়েছিল জরুরি বিভাগে।
মধ্যরাত। চারদিক নির্জন-সুনসান। নিথর বাতাস। শহরজুড়ে হোম কোয়ারেন্টিন। প্রাণচঞ্চল মানুষগুলো এখন করোনাতঙ্কে দিন গুনছে। কেউ হাসপাতালের ভেন্টিলেটরে কেউবা বাড়িতেই আইসোলেশনে সময়কে বয়ে বেড়াচ্ছে অপাঙ্ক্তেয় বোঝার মতো।
জিয়াংহুর প্রতিবেশীরা তো আগেই খিল এঁটেছে। নিজ নিজ নিরাপত্তার বলয়ে। যেদিন টেস্ট রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানাজানি হয়ে গেছে সেদিন থেকেই ওরা করেছে অবরুদ্ধ নিজেদের। ভয়ে ওদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। নারীবিহীন সংসারে তিন পুরুষের এই একাকিত্ব জীবন বিষিয়ে উঠছিল যেন।
ধীরে ধীরে শারীরিক, মানসিক সব শক্তি হারিয়ে থার্মোমিটারের পারদের মতো জীবন ওদের ওঠা-নামা করছে।
যদিও আজ করোনাক্রান্তের ১৫ দিন চলছে, দ্বিতীয় টেস্ট করানোর কথা। কিন্তু কি দুর্ভাগ্য দু’ছেলেকে ভড়কে দিয়ে বৃদ্ধ জিয়াংহু পরলোকে আজীবনের যাত্রায় পাড়ি জমাল!
তবু মেনে নিতে হবে নিয়তি! বাবাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় পাড়ি দিতে হবে এ ইহলোক। তাই শোকের সাথেই চলছে শেষকৃত্যের আয়োজন।
যথারীতি চিতায় আগুন জ্বলে উঠল। আগুনের তাপে প্লাস্টিকে মোড়ানো বস্তাবন্দী দেহটা নড়েচড়ে উঠল যেন। ভেতরের মানুষটা কিছু বলতে চায়। কিন্তু আপ্রাণ চেষ্টাতেও দুর্বল ক্ষীণ শরীরে নিজকে মুক্ত করা কঠিন হয়ে গেল তার। চিৎকার করতে চাইল গগণবিদারীÑ ‘আমি মরিনি, মরিনি এখনো। জ্বরের প্রকোপে চেতন হারিয়ে পড়েছিলাম মাত্র!’
কিন্তু কে শোনে কার আকুতি। আগুনের লেলিহান শিখা ততক্ষণে আকাশচুম্বী। তবু বিকট চিৎকারে কিছু বুঝে ওঠার আগেই শ্মশানে কর্তব্যরত বাহিনী প্রাণ নিয়ে দে দৌড়।
এই বুঝি করোনার প্রেতাত্মা বেরিয়ে পড়ল প্লাস্টিকের ব্যাগ থেকে, ধাওয়া করল পিছু পিছু!
শুধু বুঝল না কেউ মুখবাঁধা ব্যাগ থেকে জীবন্ত লাশটি বের হতে পারল না কোনোভাবেই। কিন্তু ভূত নামে অঙ্গার হলো করোনাতঙ্কের জ্বলন্ত চিতায়!হ

 


আরো সংবাদ



premium cement
বান্দরবানে বৃষ্টির চেয়ে চোখের পানি ফেলে বিশেষ নামাজ চকরিয়ায় যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা, গ্রেফতার ৭ উপজেলা নির্বাচনে ব্যর্থ হলে গণতন্ত্র ক্ষুণ্ন হবে: সিইসি বাগাতিপাড়ায় ইসতিসকার নামাজ পরিবর্তনশীল জলবায়ুর জন্য কাসাভা উপযুক্ত, হেক্টরপ্রতি ফলন ৩৫-৫০ টন : বাকৃবি অধ্যাপক বৃষ্টির জন্য হাকাকার, সাভারে ইসতিসকার নামাজ আদায় বরিশালে সালাতুল ইসতিসকার আদায় অর্ধ শতাব্দীতে ভ্যাকসিন সাড়ে ১৫ কোটি লোকের জীবন বাঁচিয়েছে : বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা আল্লাহর রহমত কামনায় সকলকে সিজদাহ অবনত হতে হবে-মাওলানা দেলোয়ার হোসাইন কাউখালীতে বৃষ্টির জন্য কাঁদলেন মুসল্লিরা ভাঙ্গায় বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায়

সকল