২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

ঢাকায় টাকা থাকে

-

জীবন সে এক আজব জিনিসের নাম। জীবনটা কারো কাছে অনেক সুখের একটি জিনিস। আবার কারো কাছে জীবন মানে যন্ত্রণা। পৃথিবীর একেক মানুষ হয় একেক রকম। আর তাদের প্রত্যেকের জীবনও হয় ভিন্ন ভিন্ন। কারো জীবনে সুখের সীমা থাকে না। আবার কারো কারো জীবনে দুঃখ-কষ্টের কোনো শেষ থাকে না। সুখটাকে মনে হয় যেন সে এক রূপকথার গল্প। কারণ সুখ তো শুধু বড়লোকের জন্য। আর গরিবের জন্য কষ্ট আর কষ্ট। তাদের কাছে সুখ বলতে এক বেলা পেট ভরে ভাত খাওয়া। আর কোনোভাবে জীবনযাপন করা। ঠিক তেমনি একটি কষ্টের বাস্তব চিত্র তুলে ধরছি। যা রাশেদ নামের একটি ছোট্ট ছেলের পরিবারে এসেছে। পড়তে গেলেই চোখের পানি চলে আসে। ছোট্ট ছেলে রাশেদ। মায়ের দুঃখ-কষ্ট দেখে আর সহ্য করতে পারল না সে । তাই এ ছোট্ট বয়সেই সংসারের দিকে তাকিয়ে তার চাচাতো ভাই ফারুকের সাথে ঢাকায় চলে এলো। আজ এক বছর হয়ে গেল তার বাবা তাদের রেখে অন্য জায়গায় নতুন একটি বিয়ে করেছে। তার পর থেকে তাদের আর কোনো খোঁজখবর নেয় না। তাই তাদের সংসার চলাতে আজ ছোট্ট রাশেদ বাড়ি ছেড়েছে। পরিবারে আছে রাশেদসহ তার একটি ছোট বোন। বোনের বয়স মাত্র সাত বছর হবে। আর রাশেদের বয়স ১৩ পার হয়ে ১৪ বছর। তার বাবা চলে যাওয়ার পর থেকে তার মা অনেক কষ্টে অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম করে তাদের সংসারটা এই পর্যন্ত নিয়ে এসেছে। রাশেদকে স্কুলে পড়াচ্ছিল। কিন্তু এখন আর পড়ানো সম্ভব নয়। দিন দিন যেন তাদের অভাব অনটন বেড়েই চলেছে। আর ছোট বোনটা এখনো অনেক ছোট বলে পড়তে দেয়নি তার মা। এভাবেই চলতে থাকে তাদের ছোট্ট সংসার। কিন্তু আজ অনেক দিন ধরে তার মা অসুস্থ। অসুস্থতা ধীরে ধীরে বেড়েই চলছে। তাই এখন আর অন্যের বাসায় কাজ করতে যেতে পারে না। ঘরে চাল ডাল খাবারের কোনো কিছুই নেই। এভাবে আর কত সহ্য করে থাকা যায়? তার মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল রাশেদ।
ডাক্তার বলে দিয়েছেÑ তার মা আর হয়তো বাঁচবে না। যদি তার মাকে বাঁচাতে চায় তাহলে অনেক টাকার প্রয়োজন হবে। মায়ের এই অসুস্থতা দেখে রাশেদ তার মাকে না জানিয়েই তার এক প্রতিবেশী ভাইয়ের সাথে ঢাকা চলে এলো। সে লোকমুখে অনেক শুনেছেÑ ঢাকায় নাকি টাকা ওড়ে। তাই রাশেদ মনে মনে ভাবল, যেভাবেই হোক না কেন আমি মায়ের চিকিৎসা করবই ইনশা আল্লøাহ! এ বলে রাশেদ চলে এলো তার ভাই ফারুকের সাথে। একদিন-দু’দিন করে তিন দিন পার হয়ে যায় কিন্তু রাশেদকে দেখতে না পেরে তার মা আরো বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ল। কয়েক দিন পর তার মা জানতে পারল তার আদরের রাশেদ ফারুকের সাথে ঢাকায় চলে গেছে কাজ করার জন্য। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া নেই। থাকার কোনো ভালো ব্যবস্থাও নেই। রাতে গাছের নিচে বা ব্রিজের নিচে শুয়ে রাতটা কাটিয়ে দেয়। তারপরও বাড়িতে আসে না। রাশেদের মা কত করে বলেছে, বাবা আমার টাকা লাগবে না। আমাকে ডাক্তার দেখাতে হবে না। তুমি বাড়ি ফিরে আসো তাহলে তোমার মুখটা দেখেই আমি সুস্থ হয়ে যাবো। কিন্তু রাশেদ ফিরে আসেনি। বারবার চিঠি পাঠানোর পরও রাশেদ ফিরে আসেনি। কয়েক মাস পার হওয়ার পর যখন রাশেদের অল্প কিছু টাকা জমা হলো। তখন রাশেদ টাকাগুলো দিয়ে ছোট বোনের জন্য সুন্দর একটা লাল জামা কিনে নিয়ে এলো বাড়িতে। বাড়িতে আসার পর দেখতে পেল তাদের বাড়িতে অনেক মানুষ ভিড় করে আছে। সামনে অগ্রসর হয়ে দেখতে পেল, যে মায়ের জন্য রাশেদ আজ ঢাকা গিয়ে মায়ের চিকিৎসার জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে কাজ করে টাকা নিয়ে এসেছে সেই মাকে মানুষরা মাত্র কবরে দাফন করে বাড়ির দিকে ফিরছে। ছোট্ট বোনটিকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ল রাশেদ। শেষমেশ মায়ের মুখটাও দেখার ভাগ্য হলো না ছোট্ট ছেলে রাশেদের।


আরো সংবাদ



premium cement
দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশেহারা : আমিনুল লিবিয়ায় নিয়ে সালথার যুবককে নির্যাতনের ঘটনায় মামলা, গ্রেফতার ১ মনুষ্য চামড়ায় তৈরি বইয়ের মলাট সরানো হলো হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আওয়ামী লীগকে বর্জন করতে হবে : ডা: ইরান আমরা একটা পরাধীন জাতিতে পরিণত হয়েছি : মেজর হাফিজ তরুণীর লাশ উদ্ধারের পর প্রেমিকসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা ভিয়েনায় মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রদূতদের ইফতারে ইসলামিক রিলিজিয়াস অথোরিটি আমন্ত্রিত এবার বাজারে এলো শাওমির তৈরি বৈদ্যুতিক গাড়ি সকল কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহিতার অনুভূতি থাকতে হবে : মাওলানা হালিম বিএনপি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি করে : ড. মঈন খান সাজেকে পাহাড়ি খাদে পড়ে মাহিন্দ্রচালক নিহত

সকল