১৮ এপ্রিল ২০২৪, ০৫ বৈশাখ ১৪৩১, ০৮ শাওয়াল ১৪৪৫
`

দোয়েল পাখির কথা

-

বাংলাদেশের জাতীয় পাখি দোয়েল আজ প্রায় বিলুপ্তির পথে! দুই টাকার কাগজের নোটে থাকলে সচরাচর দেখা যায় না দোয়েল। পটুয়াখালী জেলার গ্রামগঞ্জে, মাঠে-ঘাটে, বনে-জঙ্গলে, গাছে গাছে নানা ধরনের পাখি দেখা গেলেও কালের আবর্তে এখন আর চিরচেনা সেই পাখির সংখ্যা খুব কম। বনাঞ্চলের পরিবেশ দূষণ, নির্বিচারে গাছ কাটা, জমিতে কীটনাশকের যথেচ্ছ ব্যবহার, পাখির বিচরণক্ষেত্র নষ্ট ও খাদ্য সঙ্কট এবং জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব বিলুপ্তির কারণ বলেই ধরা হয়।
দোয়েল প্যাসেরিফরম (অর্থাৎ চড়াই-প্রতিম) বর্গের অন্তর্গত একটি পাখি। এর বৈজ্ঞানিক নাম ঈড়ঢ়ংুপযঁং ংধঁষধৎরং। এই পাখির বাংলা নামটির সাথে ফরাসি ও ওলন্দাজ নামের মিল আছে। ফরাসি ভাষায় একে বলা হয় ঝযধসধ ফধুধষ এবং ওলন্দাজ ভাষায় একে বলা হয় উধুধষষরলংঃবৎ। জগৎ: অহরসধষরধ, পর্ব : কর্ডাটা, শ্রেণী : পক্ষী, বর্গ : চধংংবৎরভড়ৎসবং, পরিবার : গঁংপরপধঢ়রফধব, গণ : ঈড়ঢ়ংুপযঁং, প্রজাতি : ঈ. ংধঁষধৎরং। (উইকিপিডিয়া)।
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার রতনদী গ্রামের কয়েকজন বয়স্কদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত কয়েক বছর আগেও একমাত্র পাখির ডাকেই মানুষের ঘুম ভাঙত। দোয়েল, টিয়া, ময়না, কোকিল, শালিক, চড়ুইসহ বিভিন্ন দেশীয় প্রজাতির পাখি গ্রামাঞ্চলের বিলে-ঝিলে, ঝোপ-ঝাড়ে, গাছের ডালে, বাগানে কিংবা বাড়ির আঙিনার গাছের ডালে বসে থাকত। তাদের সুরের ধ্বনিতে মুগ্ধ করত সবাইকে। এই পাখির কিচির-মিচির ও শীষ দেয়া শব্দ এখনো যেন তাদের কানে বাজে। সকাল, দুপুর ও সন্ধ্যায় বাঁশ গাছে, আমের ডালে, সজিনা গাছে, বাড়ির ছাদে যে পাখিগুলো প্রায়ই সময় দেখা যেত, সেই পাখি এখন আর তেমন চোখে পড়ে না। তবে কম সংখ্যক টিয়া, ঘুঘু, বক, কাক, মাছরাঙা, ইত্যাদি পাখি শহর, গ্রাম-গঞ্জের বিভিন্ন জায়গায় দেখা গেলেও জাতীয় পাখি দোয়েল মানুষের চোখে পড়ে না।
পাখিপ্রেমী শফিউল ইসলাম জানান, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি আজ বিলুপ্তির পথে। নির্বিচারে পাখি শিকার হচ্ছে। বন উজাড় করে গাছ কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। এতে পাখির বিচরণ কমে যাচ্ছে। তা ছাড়াও ফসলে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলেও পাখির বিচরণক্ষেত্র কমে যাচ্ছে। এতেই বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। এখনই পরিবেশ রক্ষায় কঠোর পদক্ষেপ না নিলে পাখি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়বে।
সচেতন মহল মনে করছে, কৃষিজমিতে মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণসহ, বন ও পরিবেশ রক্ষায় দ্রুত পদক্ষেপ নেয়া উচিত। তা না নিলে জাতীয় পাখি দোয়েলসহ দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন পাখির দেখা আর মিলবে না। তাই দোয়েলসহ অন্যান্য জাতের পাখি সংরক্ষণের জন্য সামাজিক বানায়ন সৃষ্টি করার সাথে সাথে, পাখি শিকারিদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। হ

 


আরো সংবাদ



premium cement