২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫
`

রঙিন হেমন্ত

-

চাকরি নেই।

করোনার সময় অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। আমিও হারিয়েছি। এতে আমার মন খারাপ হয়নি একটুও, বরং খুশি হয়েছি ঢের। কারণ, বহুদিন থেকে মাথায় একটা পাগলামি ভূত চেপেছে। তা হলো চাকরি ছেড়ে আমি উদ্যোক্তা হবো। নিজেই কিছু একটা করব। কিন্তু চাকরিটা ছাড়তে পারছিলাম না। বাসায় কেউ আমার চাকরি ছাড়ার পক্ষে ছিল না। সবার এক কথাÑচাকরি ছাড়া যাবে না। চাকরিতে জীবনের নিরাপত্তা আছে, ব্যবসায় নেই। চাকরিটা চলে গেল করোনায়।
ফিরে এলাম গ্রামে। দিনাজপুরে। এসি রুমে বসে থাকা অলস শরীরটাকে মিশিয়ে দিলাম প্রাণের লাল মাটির সাথে। তৈরি করলাম ‘কাটারিভোগ অ্যাগ্রো’।
একদিন বিকেল বেলা। হাঁটছি হেমন্তের মাঠে। সবুজ, হলুদ মাঠ। মাঠজুড়ে দুলছে কাঁচা-পাকা ধানের শীষ। কাটারিভোগ ধানের সুগন্ধিতে চারপাশটা ম ম করছে। ঠিক জয়িতার বেলি ফুলের পারফিউম পরা শরীরটার মতো। মেয়েটা অলটাইম বেলি ফুলের পারফিউম ব্যবহার করত। অফিসে ঢুকেই একটা মিষ্টি হাসি হাসত। তার অমায়িক হাসি আর বেলি ফুলের পারফিউমের গন্ধে সারাক্ষণ ভরে থাকত অফিসটা। অযথা ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠল আমার। আনমনা হলাম। বুকের ভেতর থেকে বেরিয়ে এলো একটা দীর্ঘশ্বাস। ঠিক তখনই বেজে উঠল ফোনটা। বুকটা ধক করে উঠল। পকেটে হাত দিতে গিয়ে দেখি হাতটা কাঁপছে। অযথা। তবুও কাঁপা কাঁপা হাতে পকেট থেকে ফোনটা বের করলাম। চোখে সামনে ধরতেই ভূত দেখার মতো চমকে উঠলাম। জয়িতা! এ যে জয়িতার ফোন!!
দীর্ঘ ছয় মাস তার সাথে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। চাকরিটা চলে যাওয়ার পর থেকেই। সেও ফোন দেইনি। আমিও না। চাকরি হারিয়ে আমি যখন অফিস থেকে বের হয়ে চলে আসছিলাম, সে একটিবারও আমার দিকে চোখ তুলে তাকায়নি। ভাবটা এমন, যেন সে আমাকে চিনেই না। অথচ অফিসে আমরাই ছিলাম সবচেয়ে ক্লোজড কলিগ। আমাদের চলাফেরা দেখে অফিসে সবাই তো ধরেই নিয়েছিল আমাদের মধ্যে কিছু একটা অ্যাফেয়ার্স চলছে।
ফোনটা ধরলাম। শান্ত গলায় বললাম, জয়িতা!
চুপ থাকল ও। কথা বলল না।
জয়িতা...
ওপাশে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল মেয়েটা। বৃষ্টির মতো অভিমান ঝরতে লাগল তার গলা বেয়ে। পুরুষরা বুঝি এমনই হয়, তাই না? স্বার্থপর। ছয় মাস হলো একটি বারও তোমার মনে পড়ল না আমাকে? ফোনও দিলে না একটা?
না...মানে, ইয়ে ...।
নাক টানার শব্দ পেলাম। এমন নাক টানার শব্দ হয় যখন কেউ হাতের উল্টোপাশ দিয়ে চোখের পানি মুছে। জয়িতাও মনে হয় হাতের উল্টো পাশ দিয়ে তার চোখের পানি মুছল। বলল, আমি আজ চাকরি ছেড়ে দিয়েছি।
মানে?
মানে সহজ। আমি আজ চাকরিটা ছেড়ে দিয়েছি।
বলো কী! কেন?
আর পারছি না। অফিসে এসে তোমার ফাঁকা চেয়ারটার দিকে তাকালে বুকটা হাহাকার করে ওঠে। বুকটা মুচড়ে যায়। ছয় মাস নিজের সাথে অনেক যুদ্ধ করেছি। যুদ্ধ করে আমি হেরে গেছি। ঠিক করেছি আমি তোমার কাছেই যাব। তোমার বুকেই আমার শান্তি। তোমার সঙ্গে লাল মাটির সাথে কাজ করব। আচমকা ফোনটা আমার হাত থেকে পড়ে গেল। আমি বাকরুদ্ধ। দাঁড়িয়ে আছি মূর্তির মতো। একাবারে থ হয়ে। মাটিতে পড়ে থাকা ফোনটা বাজছে। জয়িতা বলছে, হ্যালো... হ্যালো... কথা কথা বলছ না কেন? হ্যালো...হ্যালো... হ


আরো সংবাদ



premium cement
নোয়াখালীতে ল’ইয়ার্স কাউন্সিলের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত ‘আইনের শাসন ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল কাজ করে যাচ্ছে’ পুকুরে পাওয়া গেল ১০০ ইলিশ অবন্তিকার আত্মহত্যা : জবির সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামের জামিন আবারো নামঞ্জুর পাথরঘাটায় বদর দিবস পালনে দেড় হাজার মানুষের ইফতারি আদমদীঘিতে ৭২ হাজার টাকার জাল নোটসহ যুবক গ্রেফতার সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের জলবায়ু সহনশীল মৎস্যচাষ প্রযুক্তি উদ্ভাবনে পদক্ষেপ নেয়া হবে : মন্ত্রী গাজীপুরে গাঁজার বড় চালানসহ আটক ২ দুই ঘণ্টায় বিক্রি হয়ে গেল ২৫০০ তরমুজ ড. ইউনূসের ইউনেস্কো পুরস্কার নিয়ে যা বললেন তার আইনজীবী

সকল