২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অ ব কা শ ভা ব না

দীর্ঘ ধূসর অবকাশ

-

একটা সময় ছিল এমন, যখন ব্যস্ততাপূর্ণ জীবনে অবসর খুঁজতামÑ একদম যাকে বলে অখণ্ড অবসর। যদিও সেরকম অর্থে পাইনি কখনো। এক আধটুকু অবসর পেলে হুটহাট বেরিয়ে পড়তাম মুক্ত বাতাসের খোঁজে। আর আজ করোনাকালীন এই অখণ্ড অবসরে জীবন হাঁপিয়ে উঠেছে প্রায়। মনে বলছে, মুক্তি চাই মুক্তি চাই। প্রাণ খুলে হাসতে চাই। উন্মুক্ত মাঠের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে ছুটতে চাই। লম্বা শ্বাস নিতে চাই সবুজ ফসলের মাঠের তেপান্তরে। উপভোগ করতে চাই জীবনকে; কাজের মাঝে ব্যস্ত থাকতে চাই। কত দেশ, কত নদী-নির্ঝর, কত গিরি-পর্বত সৌন্দর্যের ঢালি সাজিয়ে বসে আছে । ঘরবন্দী এই অখণ্ড অবসর আর ভালো লাগছে না। টানা ইলিশেও মানুষের একটা সময় অরুচি চলে আসে। তদ্রƒপ টানা অবসরও এমন। অবসর চাই, তবে এমন অরুচি ও ভীতিজাগানিয়া অখণ্ড অবসর নয়। যে জীবনে প্রাণের স্পন্দন নেই, হাসি-আনন্দ নেই, সেরকম জীবন চাই না। পৃথিবীর দিকে দিকে ছুটে যেতে চাই। সমুদ্র-মেঘলা, নদী-পর্বতে শোভিত এই বিপুলা পৃথিবী। আহা! প্রতি মুহূর্তে যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে। কিন্তু চাইলেও এখন এই মুহূর্তে অনেক কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। প্রাণঘাতী করোনা পুরো বিশ্বেও স্বাভাবিক জীবন ঘায়েল করেছে। অপ্রিয় হলেও সত্য, বদলে যাচ্ছে জীবনধারা। আঁকাবাঁকা পথের মতো হয়ে গেছে জীবনের পথ। যখন ব্যস্ততায় ছুটে চলেছি, ভাবতাম যদি এমন হতো শুধু রান্না, খাওয়া আর ঘুম, তাহলে কেমন হতো? কত ভালোই না হতো। ভাবনাগুলো তাড়া করে ফিরত। কী অদ্ভুত, এখন তো দীর্ঘ অবকাশ পার করছি, কিন্তু অস্বস্তি লাগছে। মনে হয় আগেই ভালো ছিলাম। শ্রম দিতাম, দুর্বার গতিতে ছুটে চলতাম, সেই ছুটে চলার মধ্যে একটা আনন্দ ছিল। সকালের সূর্যের কিরণ জানালার পর্দার মধ্যে তার দ্যুতি ছড়িয়ে বুঝিয়ে দিত সকাল হয়েছে উঠে যাও, তোমাকে ছুটতে হবে। ঘড়ির অ্যালার্ম জানান দিয়ে যেত সময়ের মাত্রা। কখন বিকেল হবে, কখন আড্ডা দেবো, বেড়াতে যাবো পার্কে, সেই অপেক্ষায় থাকতাম। অনেক সময় ছুটতে না পারলে আক্ষেপ করতাম। আপন মনে বলে উঠতাম ধুরছাই, এটা একটা জীবন হলো! এখন মনে হচ্ছে সেই সময়টা, সেই ছুটে চলাটাই ছিল সুন্দর। আসলে জীবনের বদল না হলে, সময়ের আপ-ডাউন না হলে আমরা বুঝতে পারি না, কোন জীবনটা সুন্দর। বদলে যাওয়ার বাঁকে দাঁড়িয়ে দেখছি কতটা পরিবর্তন। জ্যোৎস্না আগের মতো তার সৌন্দর্য বিলাবে, কিন্তু আমরা দল বেঁধে তা উপভোগ করতে পারব না। কারো সাথে দেখা হলে দূরত্ব মেপেই কথা বলা। এমন জীবনে আমাদের অভ্যস্ত হতে হবে। বাঁচতে হলে সেই প্রস্তুতি নিয়ে এগুতে হবে জীবনের সমস্ত পথ। লেখালিখির প্রতি একটু বেশি সময় দিচ্ছি। এই মুহূর্তে দুটো উপন্যাস একসাথে লিখছি, ‘অপন্যাস’ ও ‘বেগুনাহ’। ঠিক এভাবে কেটে যাচ্ছে যাপিত জীবনের অবকাশময় দিনগুলো আমার।

 

 


আরো সংবাদ



premium cement
শ্রমিকদের জন্য নিরাপদ কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে হবে : বিলস বিএনপিপন্থী ৭ আইনজীবী নেতার আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশ আজ বিইউএফটিতে আন্তর্জাতিক টেক্সটাইল প্রযুক্তি ইন্টিগ্রেশন কনফারেন্স অনুষ্ঠিত এফডিসিতে সাংবাদিকদের ওপর হামলা চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় কাপ্তাই সড়কে অবরোধ দায় এড়াতে চাইছেন সাবেক চেয়ারম্যান : ডিবি, বিনাদোষে স্ত্রী জেল খাটছেন : সাবেক চেয়ারম্যান যশোর-খুলনা মহাসড়ক আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ সীমান্তে বাংলাদেশী হত্যার প্রতিবাদ ছাত্রশিবিরের রানা প্লাজা ট্রাজেডির ১১ বছরেও বিচার ত্বরান্বিত হয়নি চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির যাত্রা শুরু অবৈধ অটোরিকশা ইজিবাইককে লাইসেন্সের আওতায় আনার দাবি

সকল