ফুলের ঘ্রাণে কফির চুমুক
- আমির সোহেল
- ১১ অক্টোবর ২০২০, ০০:০০
অবকাশ এখন স্বপ্নের মতো মনে হয়। সাংবাদিকদের জীবনে অবকাশ আর কই। ইস! যদি অবকাশ পেতাম। তাহলে কত মজা হতো। কত রকম প্ল্যান মনের ভেতর ঘুরপাক খেতে থাকে। কত রকম চিন্তাভাবনাজুড়ে ঢেউ তোলে। অবকাশ শব্দ শুনলেই হৃদয়ে অসাধারণ একটা প্রশান্তি কাজ করে। ভালো লাগা হৃদয়ের প্রান্ত ছুঁয়ে যায়!
অবকাশ পেলেই সাজেক মেঘের সাথে লুকোচুরি খেলার ইচ্ছে প্রবল। পাহাড় আর সমুদ্র খুব টানে। পকেট একটু ভারী হলে, একটু ছুটি আর অবসর পেলে ছুটে যাবো কুয়াকাটা বা ইনানি বিচ। সাগরের সাথে মিতালি করব। না হয় বান্দরবানের নীলাচলে মেঘের ভেলার সে মনোরম সূর্যোদয় দেখতে চলে যেতে মন টানে।
অবকাশ পেলেই ভাবিÑ প্রিয় লেখকদের বই নিয়ে বসে পড়ব। ডুবে যাবো তাদের লেখনীর মায়াজালে। এ জন্য কত রকম বই কিনে ভরে ফেলেছি। যাযাবর জীবনে তা বহন করে আবাস পরিবর্তনে ঝামেলায় পড়তে হয়। কিন্তু পড়ার অবকাশ পাই না। অবকাশগুলো শরতের আকাশের শুভ্র তুলোর মতো পেঁজা পেঁজা হয়ে উড়তে থাকে। হারিয়ে যেতে থাকে দিগন্তের কোন যে প্রান্তে, জানি না। ধরে ধরে ঝুড়িতে জমা রাখা যদি যেত!
করোনাকাল নানা কিছু শিখিয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হলো রান্না। রাজধানীর নির্জন একা আবাসে মহামারীর প্রাদুর্ভাবের সময়টাতে দিন যাপনের সময় নিত্য নতুন করে নিজেকে ভেঙে গড়ার চেষ্টা ছিল। এই চেষ্টায় রান্না শেখা হয়েছে। এখন অবকাশ পেলেই ভাবছি রান্না করে বাবা-মাকে খাওয়াব। অসুস্থ মাকে কাজ থেকে ছুটি দিয়ে নিজে রান্না করে ফেলব। কিন্তু পেশাটাকে আগলে রেখে এই রাজধানী থেকে দূর গ্রামে গিয়ে অবকাশ যাপনের এই ভাবনা কতটা কার্যকর করতে পারব? নিজেকে নিজেই প্রশ্ন ছুড়ে দেই!
একটুখানি অবসর পেলে বাড়ির আঙিনায় ফল-ফুলের বাগান বানাব। গাছ লাগাব। চার দিকের প্রকৃতি সবুজে সবুজ হবে। বহুদিনের শখ ফুলের বাগান গড়ার। বাগানে নানান রকম ফুল ফুটবে। তার মধ্যখানে চেয়ার পেতে বসে ফুলের ঘ্রাণ নিতে নিতে কফির কাপে চুমুক দেবো। আড্ডা দেবো। আর গল্প করব। সুখস্মৃতি রোমন্থন করব। সামাজিক সংগঠনে কাজ করব। আবৃত্তিতে মুখর করব মঞ্চ। মেতে উঠবে আমার দশদিগন্ত।
নিপীড়ন চারদিকে যেভাবে বাড়ছে, অবকাশ যাপনের পরিবেশ হারানোর আশঙ্কায় এখন কাতর। নারীর প্রতি সহিংসতা অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে। শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার পরিবেশ নষ্ট হয়ে গেছে। প্রতিবন্ধকতা পদে পদে মহীরুহ আকার ধারণ করছে। অবসরে এসব প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সংগঠিত হবো। ভাবি আর ভাবি। পৃথিবী আবার সুন্দর হবে, বসবাসের উপযোগী হবে সব দিক... আর কারো চোখে অশ্রু গড়াবে না। কারো বুক খালি হবে না। মনের মতো পুষ্পিত হবে সবার চলার পথ।
অবকাশ ভাবনা চলতে থাকে। ভাবনার গতি থামার নয়। ভাবনাকে আটকে রাখা যায় না। ভাবনাগুলো থরে থরে সাজতে থাকে। ভারী হতে থাকে মনের বাসনা। স্বপ্নময় অবকাশ ভাবনাগুলোকে সাথে নিয়ে পথ চলি। এরাই সামনে এগোতে সাহায্য করে। সামনে এগিয়ে যাই অবকাশের আশায়। সুন্দর-সহজের আশায়। কণ্টক-বন্ধুর পথ শেষে সবুজ গালিচাময় মসৃণ পথ সামনে আসবেই।হ
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা