২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫
`
অ ব কা শ ভা ব না

স্বপ্ন দীর্ঘ হয়ে ওঠে

-

শব্দটি শুনলেই প্রশান্তির ভাব চলে আসে। মনে হয় এবার আর কাজ নয়, শুধুই উপভোগ। অবকাশ এলেই সময়ের সাথে বিস্তর বোঝাপড়ার সুযোগ ঘটে। জীবনের বৃত্তে অবকাশ হলো এক চিলতে আশা। অবকাশ ভাবনা এলেই মনের চিত্রপটে ভেসে ওঠে নয়ন জুড়ানো কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত, নীল দিগন্তের সেন্টমার্টিন, কুয়াকাটা, সুন্দরবনসহ আবহমান বাংলার মনোরম জায়গাগুলো। অবকাশ মানেই শত ব্যস্ততার মধ্যে থেকে পরিবারের জন্য জমিয়ে রাখা সময়ের বিলিবণ্টন।
স্কুলজীবনে অবকাশে ঘুরতে গিয়েছি হাজারীবাগান, সোনা মসজিদ, নানার বাড়ি-খালার বাড়ি। এ ছাড়া বন্ধুরা মিলে চড়–ইভাতি। বইপড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন। কাঁচা হাতে লেখার প্রচেষ্টা।
কলেজ জীবনে হঠাৎ করেই কমলাপুর থেকে ট্রেনে শ্রীমঙ্গল, লাউয়াছড়া উদ্যান, হামহাম ঝর্ণা যেখানে ভয়ার্ত রাত্রী যাপন। যেখানে ছিল প্রকৃতি ও ১০-১২ জন দুরন্ত কিশোর। সেই সময়ে মায়ের কোলে ফেরাই ছিল সবচেয়ে বড় অবকাশ যাপন। জন্মভূমি গ্রামকে মনে হতো সবুজ স্বর্গ। সামাজিক-সাংস্কৃতিক কাজে নিজের অংশগ্রহণ ছিল প্রবল।
এখন যে সময়। বেড়েছে কর্মব্যস্ততা। পারিবারিক বন্ধন, দায়িত্ববোধ আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে রেখেছে। এত কিছুর মধ্যেই মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে নিজেকে হারিয়ে ফেলার জন্য। হয়তো সবুজ অরণ্য কিংবা বিস্তর জলরাশির মধ্যে। আমি একা। সাথে প্রকৃতির শব্দভাণ্ডার। লেখালেখির প্রয়োজনীয় উপকরণ। নাগরিক কোলাহল থেকে দূরে। বহু দূরে বসবাসই আমার অবকাশ।
মেঘের সাথে কোলাকুলি, পাখির সাথে গল্প
নদীর সাথে হারিয়ে যাওয়ার পথটা তো নয় অল্প
এ পথ ধরে যাত্রা শেষে সমুদ্রে ঘর তুলবো
বন বাদাড়ে অবকাশের নতুন শাখা খুলবো
জানিÑ এ শুধু স্বপ্নই থেকে যাবে। জীবনে কখনোই অখণ্ড অবকাশের সুযোগ নেই। শত ব্যস্ততার ভিড়েই খুঁজে নিতে হবে আনন্দময় অবকাশ। পথ চলতে চলতেই উদযাপন করতে হবে অবকাশ।
সন্তানের সাথে সময় কাটানো, নিয়মিত কিছু না কিছু লেখাপড়া, লেখালেখি এভাবেই ভাষা পায় অবকাশ। সেই সাথে ভেসে ওঠে আমাদের দেশের মুখ। সমাজের চেহারা। খেটে খাওয়া মানুষ। আর দুঃখে কষ্টে বেঁচে থাকা জীবনের কাহিনী। ভাবি আমাদের প্রজন্ম এবং আগামী প্রজন্মের কথা। ডিজিটাল জেনারেশনের গন্তব্যের কথা। কিভাবে বেড়ে উঠছে এরা, এসবও আজকাল অবকাশের ভাবনা হয়ে দাঁড়িয়েছে।


আরো সংবাদ



premium cement