২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫
`

অন্য জীবন

-

গভীর রাত। সুনসান পরিবেশ। কোথাও কেউ নেই। তারেফ মিয়া কিছুক্ষণ আগেই চুপিচুপি ঘর থেকে বেরিয়েছে। জীবনের প্রতি বিতৃষ্ণা নিয়ে। ব্যবসায় ডামাডোল। দুই-চারজন দেনাদার প্রতিদিন বাড়িতে হানা দেয়। অন্য দিকে এনজিও কিস্তির টাকা। কী করবে? কিভাবে টাকা উপার্জন করবে? সংসারটাই বা চালাবে কিভাবে ? শত প্রশ্ন মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
দুপুরে স্ত্রীর সাথে ঝগড়া। মুখোমুখি হতে হতে হাতাহাতিও ঘটে যায়। যাকে কোনো দিন চোখ রাঙিয়ে কথা বলেনি। তার ওপর হাত তুলেছে। এমনকি পাশে বাঁশের একটা লাঠি পড়েছিল। সেটা দিয়েও স্ত্রীকে কয়েক ঘা বসিয়ে ছিল। সেসব কথা ভাবতে ভাবতে বুকটা মোচড় দিয়ে ওঠে তারেফ মিয়ার। আত্মহত্যা করলেই হয়তো পরিত্রাণ পাবে। এমনটিও ভাবনায় আসে।
হাঁটতে হাঁটতে গ্রাম পেরিয়ে একটা ফাঁকা মাঠে এসে বসে। চাঁদনী রাত। মেঘমুক্ত আকাশ। চাঁদের আলোতে ঘাসের ওপর জমে থাকা শিশিরগুলো তসবিহদানার মতো চিকচিক করছে। তারাগুলো মিটমিট করে আলো ছড়াচ্ছে। মৃদু শীতল দক্ষিণা বাতাস। দেহ জুড়িয়ে দিলেও মন জুড়াচ্ছে না। আকাশের দিকে মুখ তুলে বিড়বিড় করে কী যেন বলছে তারেফ মিয়া। মাথার ওপর দিয়ে একঝাঁক ডাহুক ডেকে চলে গেল। চার দিকে ঝিঁঝিপোকার কর্কশ ডাক।
হঠাৎ মেয়েটার কথা মনে পড়ে যায়। তার মুখটা ভেসে ওঠে। তিন ছুঁই ছুঁই বয়স। এখনো সব কথা স্পষ্ট নয়। কথায় আড়ষ্টতা। আধো আধো কথা। কোথাও যেতে দেখলে বলে ওঠে, ‘আবা, আমো যাবো। মিটি (মিষ্টি) কাবো।’ গায়ের জামা ধরে বলে, আবা নিব। কত রকম বায়না।
দুপুরে ঝগড়ার সময় মেয়েটা একবার বাবার দিকে, একবার মায়ের দিকে ছোটাছুটি করে। হাউমাউ করে কাঁদে। একবার বাবার চোখে তাকায়, একবার মায়ের চোখে তাকায়।
মেয়েটার কথাগুলো ভাবতে ভাবতে চোখ ভিজে যায় তারেফ মিয়ার। গাল বেয়ে বেয়ে টপটপ করে পড়তে থাকে চোখের পানি। গতরের সাদা গেঞ্জিটাও ভিজে যায়। নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না তারেফ মিয়া। বাড়ির দিকে ছুটে যায়। ঘরের ভেতরে ঢুকেই ঘুমন্ত মেয়েটাকে আদর করতে থাকে। আর বিড়বিড় করে বলতে থাকে, তোকে ছেড়ে কোথাও যাবো না, মা। আমি আবার ঘুরে দাঁড়াব। চেষ্টা করব সব ভুলে নতুন জীবন গড়তে। দেনাদারদের হাতেপায়ে ধরে সময় চাইব। পরিশোধ করব শত কষ্টেও। প্রয়োজনে অন্যের বাড়িতে কামলা দেবো। শুরু করব নতুন অন্য এক জীবন। স্ত্রীর মাথায় হাত বুলিয়ে, চুলগুলো টানতে টানতে বলে, ‘তুমি কি এখনো অভিমান করে রবে রুমা? আমার মোটেও ঠিক হয়নি অমন করা। দুপুরের ওই ব্যবহারের জন্য ক্ষমা চাচ্ছি।’
বিছানা ছেড়ে ওঠে রুমা স্বামীর হাত দুটা বুকের কাছে চেপে ধরে। স্বামীর কাঁধে হেলান দিয়ে বলে, ‘ও কথা তুমি বলো না। আমারি তো দোষ। না বুঝে তোমার সাথে তর্ক করতে গেছি। আমাকে তুমি ক্ষমা করে দাও।’ স্বামীকে বুকে জাপটে ধরে কাঁদতে থাকে রুমা।হ

 


আরো সংবাদ



premium cement
জাতিসঙ্ঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী সংস্থাকে আবার অর্থায়ন শুরু করবে জাপান শেখ হাসিনার অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতি বিএনপিকে অন্ধকারে ঠেলে দিয়েছে : ওবায়দুল কাদের রাশিয়া সমুদ্র তীরবর্তী রিসোর্টে ১৬.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করবে সিরিয়ায় ইসরাইলি হামলায় নিহত ৩৬ সেনা সদস্য দৌলতদিয়া ঘাটে পন্টুন থেকে নদীতে পড়ে যুবকের মৃত্যু অ্যানেসথেসিয়ার পুরনো ওষুধ বাতিল করে কেন নতুনের জন্য বিজ্ঞপ্তি! বাইডেনের মেয়াদে রুশ-মার্কিন সম্পর্কের উন্নতির কোনো আশা নেই : রুশ রাষ্ট্রদূত ডিএমপির অভিযানে গ্রেফতার ৪০ নিউইয়র্কে মঙ্গোলিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ফ্ল্যাট জব্দ করবে যুক্তরাষ্ট্র! টাঙ্গাইলে লরি-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ১ জিম্বাবুয়ে সিরিজে অনিশ্চিত সৌম্য

সকল