অপরাজেয় সৈনিক
- মো: নজরুল ইসলাম
- ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০২:৩০
মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র! জীবনযুদ্ধে এক অপরাজেয় যোদ্ধার নাম আবদুস সামাদ। বয়স এখন ৯২ ছুঁই ছুঁই। জন্ম শরীয়তপুর জেলার জাজিরা থানার এক হতদরিদ্র কৃষক পরিবারে। বাবা আবদুুর রহমান ছিলেন দরিদ্র বর্গাচাষি। সংসারে অভাব অনটন ছিল নিত্যসঙ্গী। সেই অভাব এখনো পিছু ছাড়েনি। বাবার মৃত্যুর পর আবদুুস সামাদ ছোট ভাইকে নিয়ে সংসারের হাল ধরেন। দু’ভাই মিলে বর্গাচাষ করেছেন অনেক বছর যাবত। তারপর বিয়ে থা করে দুই ভাই আলাদা হয়ে যান।
আবদুুস সামাদের সংসারে জন্ম নেয় একে একে চার কন্যাসন্তান। বর্গাচাষের কাজ করে সংসার চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই সুখের আশায় আবদুুস সামাদ ১০-১২ বছর আগে পাড়ি জমান রাজধানী শহর ঢাকায়। পুরান ঢাকার লালবাগ শহীদ নগরে এক কারখানায় কাজ নেন তিনি। মেয়েরাও স্কুল ত্যাগ করে বাবার সাথে জীবনযুদ্ধে অংশ নেয়। তারাও গার্মেন্টস শ্রমিকের চাকরি নেয়। মেয়েরা এখন সবাই বিবাহিত। তাদের সংসারও চলে টেনেটুনে। জামাইরা সবাই বিভিন্ন ফ্যাক্টরিতে শ্রমিকের কাজ করে সংসার চালায়। আবদুুস সামাদ বয়সের ভারে এখন বাঁকা হয়ে গেছেন । তবুও এই ৯২ বছর বয়সেও দারিদ্র্যের কাছে হার মানেননি। অবিরাম সংগ্রাম করে চলেছেন। মাথা গোঁজার ঠাই হয়েছে শহীদ নগরে ছোট মেয়ের ছোট্ট বাসার এক কোণায়। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন আবদুুস সামাদ। এখনো নিজেই নিজের সব কাজ করেন। ফজর নামাজ আদায় করেই বের হয়ে পড়েন রিজিকের উদ্দেশ্যে। মাথা খাটিয়ে একটা সহজ ব্যবসা বেছে নিয়েছেন তিনি। বড় একটা অ্যালুমিনিয়ামের বোলে করে প্রতিদিন ১৫০ পিস পাপড় নিয়ে পুরান ঢাকার বিভিন্ন মহল্লায় ফেরি করে বিক্রি করেন। সব মিলে তার বোঝার পরিমাণ হয় মাত্র পাঁচ-ছয় কেজি। পাপড় বিক্রির মাঝে যেখানেই নামজের সময় হয় সেখানেই কোনো এক মসজিদে ছুটে যান নামাজ আদায় করতে। পাশের কামরাঙ্গীরচর থেকে পাপড় নিয়ে একেক দিন একেক এলাকা চষে বেড়ান। দিন শেষে তার ৩০০-৩৫০ টাকা আয় হয়। ১০ বছর আগে স্ত্রী না ফেরার দেশে চলে গেছেন। রাতে নাতি-নাতনির সাথে গল্প করতে করতে ক্লান্ত শরীরে আয়েশ করে ঘুমিয়ে পড়েন।
জীবন তার ভালোই কেটে যাচ্ছে। কোনো ছেলে নেই এ জন্য তার কোনো আক্ষেপ নেই। তিনি বলেন, ‘অনেক ছেলের বাবা আছেন যারা ছেলে থাকা সত্ত্বেও ভাত পায় না। আমি ইনশাআল্লাহ ভালোই আছি।’ কোনো আর্থিক সহযোগিতা পেলে খুশি হবেন কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘আমি কারো দয়া বা কারো কাছে হাত পাততে চাই না! যত দিন বেঁচে থাকি যেন নিজে খেটে খেতে পারি। আল্লাহর কাছে এটাই আমার শেষ ইচ্ছা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা